এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > বনধে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া প্রমান করে দিল ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল এখন গেরুয়া দখলেই

বনধে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া প্রমান করে দিল ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল এখন গেরুয়া দখলেই


রবিবার পার্টি অফিস দখল ও পাল্টা দখলকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের প্রায় গোটা এলাকা। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছে যায় যে ঘটনাস্থলে এসে রক্তাক্ত হতে হয় ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহকে। আর এরপরই গোটা ঘটনায় পুলিশের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে সোমবার ব্যারাকপুরে 12 ঘণ্টার বনধ ডেকেছিল বিজেপি। কিন্তু কি হল বিজেপির ডাকা সেই বনধে?

আদৌ কি সফলতা পেল তারা! নাকি সেই বনধকে ভেস্তে দিতে সক্ষম হল শাসকদল! জানা গেছে, দিনের শেষে যারা বনধ ডেকেছে, সেই বিজেপির পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ করা না হলেও তৃণমূলের অভিযোগ ছিল যে, পেশিশক্তির জোরে ১২ ঘণ্টার বন্‌ধ হয়েছে বারাকপুরে। জোরজবরদস্তি দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া, অটো-টোটো থেকে যাত্রী নামানো থেকে টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ, ভাঙচুর নিয়ে তাণ্ডবের কিছুই বাদ থাকেনি।

সব মিলিয়ে সোমবার বিজেপির ডাকা বন্‌ধকে ঘিরে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে বারাকপুরের নোনা চন্দনপুকুর বাজার, টিটাগড়, হালিশহর এলাকা বলে অভিযোগ শাসকদলের। তবে সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে বাস, অটো না পেয়ে এদিন চরম দুর্ভোগের শিকার হন সাধারণ মানুষ। গণেশ পুজোর দিনে বাজারহাট বন্ধ থাকায় ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই হতাশ হয়েছেন।

এদিকে, রবিবার জগদ্দলের সার্কাস মোড়ে অশান্তির ঘটনায় অর্জুন সিং ও তাঁর ছেলে পবন সিংয়ের নামে ইতিমধ্যেই এফআইআর দায়ের করেছে পুলিস। অভিযুক্ত দু’জনকেই গ্রেপ্তারের করা হতে পারে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে এদিন এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরভবনে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “পুলিস দর্শক হতে পারেনি বলেই অ্যাকশন নিয়েছে। একটা রাজ্যে থেকে কেউ কেউ গুন্ডামি করবে, সেটা তো আর পুলিস চুপ করে দেখতে পারে না।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তবে সোমবার বিজেপির এই বনধ সফল হওয়াতেই যে তৃণমূল এই ধরনের অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে, সেই ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত গেরুয়া শিবিরের শীর্ষনেতারা। সকাল থেকেই জোর করে দোকান, বাজার বন্ধ করতে থাকে বিজেপি কর্মীরা। এদিকে অভিযোগ উঠেছে, অফিসযাত্রীরা বাস না পেয়ে অটো বা টোটোতে যাতায়াতের চেষ্টা করলেও তাঁদের অটো-টোটো থেকে টেনে নামানো হয়েছে। অন্যদিকে এদিন সকালে কাঁকিনাড়া স্টেশনে আধ ঘণ্টা অবরোধ করা হলে পরে লাঠিচার্জ করে তা তুলে দেয় পুলিস।

এছাড়াও, প্রায় সব রুটেই এদিন বাস এবং অটো চলাচল বন্ধ ছিল। বেলা বাড়তেই বিভিন্ন জায়গা থেকে অশান্তির খবর আসতে শুরু করে। জানা যায়, এদিন ব্যারাকপুরের লালকুঠি পাড়ায় বিজেপি ও তৃণমূলের সংঘর্ষ বাধে। অন্যদিকে সকাল ১০টা নাগাদ অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে নোনা চন্দনপুকুর বাজার। পুলিসের দাবি, টায়ার জ্বালিয়ে বারাসত-ব্যারাকপুর রোড অবরোধ করে বিজেপি। আর সেই সময় তৃণমূলের একটি মিছিল এলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। যার ফলে রক্তাক্ত হন উভয় দলেরই নেতা-কর্মীরা।

এদিন হালিশহর, বীজপুর, টিটাগড়ে, এই তিন জায়গাতেই পুলিসের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জের অভিযোগ উঠেছে। তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে পেশিশক্তিকে কাজে লাগিয়ে এই বনধ সফল করার অভিযোগ তুললেও তা সম্পূর্ণরূপে নস্যাৎ করেছে গেরুয়া শিবির। এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপির সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্র বলেন, “বন্‌ধ স্বতঃস্ফূর্ত হয়েছে। তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনীর হামলায় আমাদের ৩৫ জন জখম হয়েছেন। আমারা কোথাও জোর করে দোকান বন্ধ করিনি।” অন্যদিকে পুলিসের তরফে তিনটে এফআইআর হয়েছে বলে খবর।

যেখানে অর্জুন সিং ও পবন সিংয়ের নাম রয়েছে। দু’দিনে এখনও পর্যন্ত ৬০ জন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানান ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার মনোজ বর্মা। তবে যে যাই বলুন না কেন, রবিবারের গন্ডগোলের ঘটনার পর সোমবার বিজেপির ডাকা বনধে যেভাবে ব্যারাকপুর সাড়া দিল, তাতে এই শিল্পাঞ্চল যে গেরুয়া শিবিরের একেবারে দখলে চলে এসেছে, তা বিজেপির ডাকা এই বনধ সফল হওয়াকে কেন্দ্র করেই আরও একবার প্রমাণিত হয়ে গেল বলে দাবি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!