চীন থেকে পাঠানো হচ্ছে নিম্ন মানের কাঁচামাল! বাতিল হতে পারে কোটি কোটি টাকার চুক্তি ! আন্তর্জাতিক জাতীয় June 22, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একটু অসাবধান হলেই যে কী ভীষণ বিপদ আসতে পারে তা ভেবেই এখন শিউরে উঠছেন অনেকে। কিছু দিন আগেও যখন চিনের সঙ্গে ভারতের বিরোধ ছিল না তখন স্বভাবতই আমদানি রপ্তানি নিয়েও ছিল না কোনও সমস্যা। সে দেশ থেকে চেনা সামগ্রী কেনার জন্য কাঁচামাল আমদানি করার ব্যবস্থা করেছিল ভারত সরকার। হয়েছে বিপুল অর্থের চুক্তি। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, সেই কাঁচামালের মান অত্যন্ত নিম্নমানের। তা দিয়ে সেনা সরঞ্জাম প্রস্তুত করার অর্থ বিপদে ঠেলে দেওয়া নিজের দেশের জওয়ানদেরই। ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিনের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান শহীদ হয়েছিলেন। চিনাবাহিনীতেও ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও বেজিং-এর পক্ষ থেকে কিছুই জানানো হয়নি হতাহতের ব্যাপারে। দুই বাহিনীর সেই সম্মুখ সমরে ব্যবহার করা হয়েছিল ব্যাট, কাঁটাতার, পাথর ইত্যাদি। কাছাকাছি লড়াইয়ের জন্য বন্দুকের থেকেও এই সরঞ্জাম অধিক কার্যকর বলে মনে করা হচ্ছে। এই ঘটনার দু’দিন পর সেনাবাহিনীর জন্য বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম প্রস্তুতের সিধান্ত নিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সূত্রের খবর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে জরুরি ভিত্তিতে ২ লক্ষ বুলেট প্রুফ জ্যাকেট তৈরির অর্ডার দিয়েছে। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। কারণ বেশিরভাগ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির মূল উপাদান বা কাঁচামাল আমদানি করা হয় চিন থেকে। যার গুণমান নিয়ে একাধিক প্রশ্ন রয়েছে খোদ সেনাবাহিনীর অন্দরে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - ২০১৭ সালে চিনা সংস্থার সঙ্গে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত দ্রব্য আমদানির চুক্তি হয় ভারতের। ৬৩৯ কোটি টাকার ওই চুক্তি প্রসঙ্গে সেই সময় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সংসদে জানিয়েছিলেন, সেনাবাহিনীর জন্য প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম তৈরি করতে চিন থেকে কাঁচামাল আনতে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু এখন মাল হাতে পাওয়ার পর দেখা যাচ্ছে যে চিনা সরঞ্জামগুলির গুণমান মোটেও ভালো নয়। ফলে ওই চিনা সংস্থাগুলির সঙ্গে চুক্তি থাকবে কিনা তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। সূত্রের খবর, সেনাবাহিনীর জীবনের সঙ্গে জড়িত কোনও বিষয়ে আপোষ করতে নারাজ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। তাই চিন থেকে আমদানি করা কাঁচামাল নিয়ে নতুন করে ভাবনা চিন্তা শুরু করেছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তারা। এ প্রসঙ্গে নীতি আয়োগের সদস্য এবং প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার প্রাক্তন প্রধান ভি কে সরস্বত বলেছেন, “এখন পরিস্থিতি বদলেছে সেই জন্য নয়। আমরা এক বছর আগেই গুণমান খারাপের জন্য ওই সংস্থাকে জানাই। তাদেরকে গুণমান পরীক্ষার জন্য ডাকাও হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি না বদলানোর জন্য এখন মনে করি চিন থেকে আসা কাঁচামালের ওপর নজর দেওয়া উচিত। এখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সামরিক ও টেলিকম বিভাগে চিনা কাঁচামাল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকব।” তবে চিনা কাঁচামাল নিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের হুঁশ ফেরে পিএইচডি চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির একটি চিঠিকে কেন্দ্র করে। এই সংস্থাটি প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত কাঁচামাল পর্যবেক্ষণ করে ও সিদ্ধান্ত নেয়। শনিবার সংস্থাটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে চিঠি দিয়ে বিশেষভাবে জানায়, “বুলেট প্রুফ জ্যাকেট তৈরির জন্য দেশের সমস্ত প্রস্তুতকারক সংস্থা চিন থেকে উচ্চ মানের পলিথিন (High Performance Polyethylene) আমদানি করে এবং বিশাল আকারের বিদেশি মুদ্রা আয় করে। কিন্তু এই পলিথিনের গুণমান খুব ভালো নয়। তাই এই কাঁচামালের আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক। কারণ এতে যুদ্ধরত জওয়ানদেন জীবনের প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে।” কিন্তু চিন থেকেই কেন আমদানি করা হয় এই সমস্ত সরঞ্জাম? এর জবাবে এমকেইউ (MKU)-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর নীরজ কুমার গুপ্ত বলেন, “চিন ছাড়াও আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলি থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের কাঁচামাল আনা যায়। কিন্তু তাতে অনেক বেশি খরচ। অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার তুলনায় চিনের কাঁচামালের দাম ৬০%-৭০% কম। তবে এমন একটি খাতে ব্যবহার করা হবে সেখানে নিরাপত্তা সবার আগে জরুরি। কারণ যুদ্ধের জন্য সেনাবাহিনীদের সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।” আপনার মতামত জানান -