২০২১-এ বাংলায় কে কত আসন? গোপন রিপোর্ট গেল দিল্লি! ঘুম উড়ছে বিজেপির? হাসি চওড়া তৃণমূলের? কলকাতা জাতীয় বিশেষ খবর রাজ্য June 2, 2020 ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে বিজেপি ১৮ টি লোকসভা আসন ছিনিয়ে নিয়েই, দাবি করতে শুরু করেছিল – আগামী বিধানসভা নির্বাচনে নবান্নের রঙ নীল-সাদা থেকে অবশ্যই করে নাকি গেরুয়া হতে চলেছে। তৃণমূল কংগ্রেসও স্পষ্ট বুঝতে পেরেছিল, লোকসভার আগে যতই বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশ আওয়াজ তুলে থাকুক, নির্বাচনের ফলাফলেই প্রমাণিত পায়ের তলার মাটি অনেকটাই সরে গেছে। আর তাই, প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে দায়িত্ব দেওয়া হয় ভোট কৌশলী প্রশ্ন কিশোরকে। টীম পিকে দায়িত্ব নিয়েই শুরু করে দলের তৃণমূল স্তরের বিশ্লেষণ। আর সেখানেই উঠে আসে, তৃণমূলের এই বড় ধাক্কার কারণ, তৃণমূল নেতাদের জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া। আর তাই তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত দিদিকে বলো কর্মসূচি শুরু করে তৃণমূল। যার ফলও পায় হাতেনাতে। লোকসভা নির্বাচনের ৬ মাসের মধ্যেই রাজ্যে হয়ে যাওয়া ৩ আসনের উপনির্বাচনে পতপত করে উড়তে থাকে তৃণমূলের জয় পতাকা। এর মধ্যে একটি আসন ছিল খোদ বিজেপি রাজ্য সভাপতির খাসতালুক! ফলে তখন থেকেই তৃণমূল শিবির দাবি করতে থাকে – লোকসভা আর বিধানসভা নির্বাচন সম্পূর্ণ আলাদা। বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরেই বাংলার মানুষ আবারো আস্থা রাখবেন এবং ঘাসফুল শিবির বাংলার কুর্সিতে হ্যাটট্রিক করবে। এর পরেই শুরু সিএএ-এনআরসি নিয়ে তীব্র আন্দোলন। তৃণমূলও দলীয় স্তরে ‘বাংলার গর্ব মমতা’ বলে এক কর্মসূচির সূচনা করে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে – এই দুইয়ের প্রভাবেই বোঝা যাচ্ছিল তৃণমূলের পালে আবারো হাওয়া ফিরে আসছে। কিন্তু এরপরেই শুরু হয়ে যায় করোনার দাপট। আর তার উপর ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় আমপানে বিধ্বস্ত হয় বাংলা। কিন্তু এই দুই পরিস্থিতিই যেভাবে প্রশাসন সামলেছে – তাতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বেড়েছে বলেই দাবি বিরোধীদের। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এই পরিস্থিতিতে মনে করা হচ্ছিল – তৃণমূলের পাল থেকে হাওয়া সরে যেতে শুরু করেছে। রাজ্যে আবারো প্রবলভাবে তৃণমূল বিরোধী পরিসরটা দখল করতে শুরু করেছে বিজেপি। আর এমত অবস্থায় বাংলার হাল জানতে এক গোপন রিপোর্ট গেল দিল্লি। আর সেই রিপোর্ট খুলে কার্যত ঘুম উড়ে গেছে গেরুয়া শিবিরের। সেই গোপন রিপোর্টে নাকি জানানো হয়েছে – এখনই নির্বাচন হলে বাংলা থেকে বিজেপি পেতে পারে ৯০-১০০ টি আসন। অন্যদিকে সেই রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে – বাম-কংগ্রেস জোট একেবারেই ক্লিক করছে না। এবারের নির্বাচন হবে হয় মমতা, নয় মমতা ফর্মুলায়! ফলে মালদা, মুর্শিদাবাদ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এই জোট কয়েকটা আসন ছিনিয়ে নিতে পারে। তবে তা কোনো মতেই ১৫-এর গন্ডি পেরোচ্ছে না। অন্যদিকে, রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস ১৮০-১৯০ টি আসন নিয়ে পুনরায় ক্ষমতায় আসতে পারে বলেও ইঙ্গিত গেছে সেই রিপোর্টে। কিন্তু, সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা যাচ্ছে – বাংলায় সাধারণ মানুষের একটা ক্ষোভ রয়েছে রাজ্য সরকারের উপরে। অন্যদিকে ১০ বছর রাজ্যপাট চালনার পর স্বাভাবিকভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার মোকাবিলা করতে হবে। তারপরেও এত ভালো ফলাফল কি করে হচ্ছে? ওই গোপন রিপোর্ট ইঙ্গিত দিয়েছে – সংখ্যালঘু ভোটের ১০০% তৃণমূলের সঙ্গেই থাকছে। যেটা মূল ভোটের প্রায় ২৭%, ফলে নিজেদের অন্য ভোটব্যাঙ্ক বেশ কিছুটা হারালেও প্রায় ১৫%-এর কাছাকাছি ধরে রাখবে ঘাসফুল শিবির। এর পাশাপাশিই, লোকসভা নির্বাচনের থেকে বিজেপির ভোট ২-৩% কমার ইঙ্গিত দিয়েছে ওই রিপোর্ট। এর কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, লোকসভা নির্বাচনে যাঁরা বিজেপির হয়ে কাজ করেছিলেন, তাঁদের অনেকেই আজ তৃণমূলে ফেরত গেছেন। ফলে, একটা বড় ভোট স্যুইং সেখান থেকে হয়ে গেছে। আর তাই সব মিলিয়ে নাকি বিজেপির ভোট দাঁড়িয়ে আছে ৩৭-৩৮%-এ। আর তাই সবমিলিয়ে, রাজ্যে এবারের নির্বাচনে ৭০-৮০ টা আসনের ফলাফল হতে চলেছে অত্যন্ত কম ব্যবধানে। আর সেটাই সম্ভবত রাজ্য-রাজনীতির ভাগ্য ঠিক করে দিতে চলেছে। একই সঙ্গে নাকি ওই রিপোর্টে গেরুয়া শিবিরের বুথস্তরের সাংগঠনিক দুর্বলতা ও তীব্র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথারও উল্লেখ আছে। যদিও, এই গোপন রিপোর্ট নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই কেউ মুখ খোলেননি। কিন্তু, লোকসভা পরবর্তী ভোটের অঙ্ক আপাতত বঙ্গ-রাজনীতিকে যেখানে দাঁড় করিয়ে রেখেছে, তাতে স্বাভাবিকভাবেই ঘুম উড়তে পারে গেরুয়া শিবিরের। অন্যদিকে, হাসি চওড়া হতে পারে ঘাসফুল শিবিরের। আপনার মতামত জানান -