এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > দুই নেতার দ্বন্দ্ব মেটাতে প্রশাসনিক বৈঠকেই কড়া বার্তা মমতার, চাঞ্চল্য তৃনমূলের অন্দরে!

দুই নেতার দ্বন্দ্ব মেটাতে প্রশাসনিক বৈঠকেই কড়া বার্তা মমতার, চাঞ্চল্য তৃনমূলের অন্দরে!


অতীতে গোষ্ঠী কোন্দল বন্ধ করবার জন্য নানা সময় নানা নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু নেতায়-নেতায় গন্ডগোল তৃণমূলে এখন চর্চার চর্চিত অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একসময় সকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তাকে আপ্তবাক্য বলে ধরে নিলেও, এখন নানা জায়গায় দলের গোষ্ঠী কোন্দলের পরিপ্রেক্ষিতে সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া বার্তা দেওয়ার পর, প্রকাশ্যে হয়ত অনেকেই এই ব্যাপারে মাথা নাড়েন। কিন্তু নেত্রী চলে যাওয়ার পরেই শুরু হয় দলের নেতা বনাম নেতার মধ্যে। আর এই সমস্যার সমাধান করাই এখন রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে।

দলের দুই নেতার মধ্যে দ্বন্দ্ব যে এখনও অব্যাহত, তা প্রকাশ্যে তৃণমূল বুঝতে না দিলেও, অজান্তেই এদিন দুর্গাপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে এই ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে দুই নেতার দ্বন্দ্ব যে প্রবল পরিমাণে রয়েছে, তা বুঝিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বস্তুত, পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের দীর্ঘদিনের সভাপতি ছিলেন প্রভাত চট্টোপাধ্যায়। তবে গত 2016 সালে বিধানসভা ভোটে দুর্গাপুরের দুটি কেন্দ্র তৃণমূলের হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার পর, শ্রমিক সংগঠনের সমস্ত কমিটি ভেঙে দেওয়া হয় দলের পক্ষ থেকে। আর এরপরই 2018 সালের জুন মাসে বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকে আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আর তারপরেই প্রভাতবাবুর সঙ্গে বিশ্বনাথবাবুর দ্বন্দ্ব মাঝেমধ্যেই প্রকাশ্যে চলে আসে। বারবার দলের পক্ষ থেকে সেই দ্বন্দ্ব মেটানোর জন্য কড়া বার্তা দিলেও, কাজের কাজ কিছুই হয়নি। মাঝে এক সময় জেলা সভাপতি বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকে রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে অনেকটাই দূরে সরে যেতে দেখা যায়। কিন্তু এবার জেলায় এসে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে শ্রমিক সংগঠনের শেষ কথা যে বিশ্বনাথ পাড়িয়ালই বলবে, তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক বৈঠকের শেষ দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, দুর্গাপুর, আসানসোলে কে কে ট্রেড ইউনিয়ন করেন! আর তখনই এই ব্যাপারে উঠে দাঁড়ান প্রাক্তন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়। আর প্রভাতবাবুকে দেখেই তাকে সতর্ক করে দেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “প্রভাত তোমার নামে আমি কিন্তু অনেক অভিযোগ পেয়েছি। এর জন্য কিন্তু দল বা সরকার সাফার করবে না। যদি পারো, নিজেকে শুধরে নাও। তোমার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পরে আমি বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকে এখানে ট্রেড ইউনিয়ন দেখার দায়িত্ব দিয়েছিলাম। তাও তুমি শোধরাওনি। তুমি আর শ্রমিকদের ব্যাপারে ঢুকবে না।”

আর প্রশাসনিক বৈঠক থেকে স্পষ্টভাবে প্রভাত চট্টোপাধ্যায়কে শ্রমিক সংগঠনে না ঢোকার বার্তা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই জেলায় শ্রমিক সংগঠনের ব্যাপারে বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের উপরেই ভরসা রাখলেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের। এদিন এই বৈঠক শেষে প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি দলের শৃংখলাবদ্ধ কর্মী। নেত্রীর নির্দেশ মতই চলব।” অন্যদিকে নেত্রী যখন তার প্রতি এত আস্থা রাখেন, তখন তিনি এই ব্যাপারে কি বলবেন! এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি বিশ্বনাথ পাড়িয়াল বলেন, “জেলার শ্রমিকদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে, তাদের পাওনা গন্ডা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মত কাজ করে যাব।”

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামনেই পৌরসভা ভোট। আর তার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন না, কোনোভাবেই নিজের দলের ভেতরকার কোন্দল প্রকাশ্যে আনতে। আর তাইতো এদিনের প্রশাসনিক বৈঠকে দায়িত্ব সম্পর্কে সকলকে অবহিত করে দিয়ে কে কোন দায়িত্ব সামলাবেন, তা স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তিনি এত কথা বলার পরেও, অতীতের মত আবার শ্রমিক সংগঠন নিয়ে পশ্চিম বর্ধমানের তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে আসে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!