এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > পাখির চোখ পুর নির্বাচন , শীর্ষ নেতৃত্বকে ভাবাচ্ছে নেতা কর্মীদের অভ্যান্তরিন দ্বন্দ্ব

পাখির চোখ পুর নির্বাচন , শীর্ষ নেতৃত্বকে ভাবাচ্ছে নেতা কর্মীদের অভ্যান্তরিন দ্বন্দ্ব

 

বিগত দিনে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দলে জর্জরিত হলেও, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে যেভাবে উত্থান ঘটেছে ভারতীয় জনতা পার্টির, তাতে করে কিন্তু গোষ্ঠী কোন্দলের কোনো অবকাশ নেই তৃণমূলের কাছে। বরঞ্চ গোষ্ঠী কোন্দল আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হিসেবে উপনীত হতে পারে পার্টির কাছে। আর এরকমই ঘটনা ঘটেছে বীরনগর পৌরসভার ক্ষেত্রে।

সেখানে বিগত দিনে একাধিকবার পরিবর্তিত হয়েছে পৌরপ্রধান। শুধু তাই নয়, শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে উন্নয়নের কাজ ব্যাহত হয়েছে বারংবার। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ বিগত দিনে লোকসভা নির্বাচনে দেখা গিয়েছে এই বীরনগর পৌরসভা এলাকায় শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে অনেক বেশি এগিয়ে গিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

তাই পুরনো গোষ্ঠী কোন্দলকে ত্যাগ করে উন্নয়ন দিয়ে বিগত দিনগুলোতে উদ্যোগী হয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। দলীয় কোন্দল নিয়ে বারবার অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে জেলা থেকে শুরু করে রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্বকে। শুধু তাই নয়, বিগত সময়ে পৌরসভার পৌরপ্রধান এবং উপ পুরপ্রধানের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার ছিল। যে কোন্দলের জেরে একাধিকবার বেকায়দায় পড়তে হয়েছে শাসক দলকে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এছাড়াও উন্নয়নের কাজ বন্ধ হয়ে স্মার্টর্সিটি নির্মাণ করার জন্য নির্মাণের উদ্দেশ্যে পৌরসভার কাছে যে টাকা এসেছিল, তা ফেরত চলে গিয়েছে। বিগত সময় এখানে বিরোধীদলের পৌরসভার কাউন্সিলর থাকলেও, 2017 সালে দল বদল করে অন্য দলের কাউন্সিলররা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করাতে এখন 14 জন কাউন্সিলর শাসকদলের। বিগত দিনে গোষ্ঠী কোন্দল তৃণমূল কংগ্রেসকে বিরম্বনায় ফেললেও, শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকায় চিন্তার ভাঁজ ঠিক ততটা তীব্র হয়নি। তবে বর্তমান পরিস্থিতি আলাদা।

লোকসভা নির্বাচনের পৌরসভা ভিত্তিক ফলাফল লক্ষ্য করা গিয়েছে, বীরনগর শহরে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি থেকে। তাই এই মুহূর্তে যদি গোষ্ঠী কোন্দল বন্ধ করতে সক্ষম না হয় ঘাসফুল শিবির, তাহলে আগামী পৌরসভা নির্বাচনে রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়তে হবে শাসক দলকে। সেই কথা অনুমান করেই রীতিমতো প্রস্তুতি শুরু হয়েছে শাসকদলের অন্দরে।

জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি বীরনগরে কাউন্সিলরদেরকে নিয়ে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেই বৈঠকে গোষ্ঠী কোন্দল বন্ধ করতে দলীয় কর্মী সমর্থক থাকলে তাদেরকে কড়া বার্তা দেয় উচ্চতর নেতৃত্ব। এই বিষয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদেরকে নির্দেশ দিতে শোনা যায় রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শংকর সিংহকে। পাশাপাশি ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়। দুই তরফের মধ্যে বিগত দিনে যে গোষ্ঠী কোন্দল চলেছে, তাতে একাংশ যেমন অভিযোগ তুলেছে যে, তাদের উন্নয়নে বাধা দিচ্ছে অপরপক্ষ, তেমনই অপর পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে, বিরোধী গোষ্ঠীরা তাদেরকে উন্নয়নের কর্মকাণ্ডে যুক্ত করছে না।

তাই এবার দলীয় নেতৃত্বের তরফ থেকে বার্তা দেওয়া হয়েছে সমস্ত কাউন্সিলরদেরকে সঙ্গে নিয়ে আগামী দিনে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করতে হবে। ভারতীয় জনতা পার্টির বিরুদ্ধে উন্নয়নকে শাসকদল মূল হাতিয়ার বানাতে চায়, তা ইতিমধ্যে স্পষ্ট হয়েছে তৃণমূল সূত্রে। জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় বিভিন্ন রকম সংস্কার এবং কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করতে হবে। ভারতীয় জনতা পার্টির বিরুদ্ধে উন্নয়নকে যে শাসকদল মূল হাতিয়ার বানাতে চায়, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়েছে তৃণমূল সূত্রে।

জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় বিভিন্ন রকম সংস্কার এবং কংক্রিট রাস্তা নির্মাণ থেকে শুরু করে অন্যান্য রকমের নির্মাণ কাজের টেন্ডার ডাকা হয়েছে। শুধু টেন্ডারই নয়, অনেকগুলো কাজের ইতিমধ্যেই ওয়ার্ক অর্ডার হয়ে গেছে বলে জানা যাচ্ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, 18 হাজার ফুট কংক্রিট রাস্তা তৈরি এবং ছত্রিশটি পাকা রাস্তা তৈরি করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে পৌরসভা। পাশাপাশি শুরু হয়েছে কুড়িটি উচ্চ বাতিস্তম্ভ নির্মাণের কাজ ছাড়াও এলাকার নিকাশি ব্যবস্থাকে চাঙ্গা করার জন্য নালা প্রকল্প, আবার শিশুদের জন্য শিশু উদ্যান তৈরি সহ অভূতপূর্ব উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করতে উদ্যোগ নিয়েছে পৌরসভা।

এদিন এই বিষয়ে বলতে গিয়ে পৌরপ্রধান পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিভিন্ন রাস্তা তৈরি এবং সংস্কারের কাজ শুরু করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই উন্নয়ন শহরবাসীর জন্যই।” এদিকে এই ব্যাপারে উপ পৌরপ্রধান গোবিন্দ পোদ্দার বলেন, “সমস্যার কিছু নেই। সবাই একসঙ্গে কাজ করছে। এখানে বিজেপি বলে কিছু নেই। ওরা মানুষকে বিভ্রান্ত করছিল। এখানে তৃণমূলেরই বিজয় পতাকা উড়বে।” তবে গোষ্ঠী কোন্দলকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য শাসক দল যতই চেষ্টা করুক না কেন, সময় মত দলের উর্দ্ধতন নেতৃত্বের পক্ষ থেকে যদি কঠোর অবস্থান না নেওয়া হয়, তাহলে কিন্তু গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে আবার উত্তাল হতে পারে বীরনগর শহর তৃণমূল কংগ্রেসের আভ্যন্তরীণ পরিবেশ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের সব দাবীকে অস্বীকার করে দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এদিন এই প্রসঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টির দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অশোক চক্রবর্তী বলেন, “বীরনগরের মানুষ এদের চেনেন, এসবে তারা ভুলবেন না। নিঃশব্দ বিপ্লব ঘটাবেন।”

ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ দিয়ে তৃণমূল চালিত পৌরসভা মানুষের মন জয় করার চেষ্টা চালাতে পারে। তবে বিগত দিনে দলীয় কোন্দলের কারণে বীরনগর যেভাবে উন্নয়নে নিরিখে পিছিয়ে পড়েছে, তাতে করে অনেকটাই ব্যাকফুটে চলে গেছে শাসকদল। অন্যদিকে আবার লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক উত্থান ঘটেছে ভারতীয় জনতা পার্টির। এখন উন্নয়ন দিয়ে বিজেপির জনসমর্থন কমাতে পারে কিনা শাসকদল, সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!