এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে ব্যাপক রদবদল হতে চলেছে তৃণমূলের সাংগঠনিক স্তরে – জেনে নিন বিস্তারিত

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে ব্যাপক রদবদল হতে চলেছে তৃণমূলের সাংগঠনিক স্তরে – জেনে নিন বিস্তারিত

 

কথায় আছে, ঠেলায় না পড়লে বিড়াল গাছে ওঠে না। অবশেষে এবার সেই ঠেলাতে পড়েই ভালো ফলাফলের জন্য সংগঠন তৈরিতে জোর দিল তৃণমূল কংগ্রেস। বস্তুত, গত 2011 সালে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেস ভালো ফল করলেও 2016 থেকেই অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করে। বালুরঘাটের বিধায়ক শংকর চক্রবর্তী থেকে শুরু করে বিপ্লব মিত্র, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ছটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে দুটি বাদে সব ক’টিতেই তৃণমূলের হারতে হয়। যার প্রধান কারণ হিসেবে দলীয় গোষ্ঠী কোন্দলকেই দায়ী করে রাজনৈতিক মহল।

অন্যদিকে 2019 এর সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে বিপ্লব মিত্র বনাম অর্পিতা ঘোষের দ্বন্দ্বে এই বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্র হারাতে হয় তৃণমূল কংগ্রেসকে। আর এই পরিস্থিতিতে সেই ভরাডুবির পরই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদে অর্পিতা ঘোষকে বসিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর দলীয় সংগঠনের দায়িত্ব পাওয়ার পরই একদিকে দল থেকে চলে যাওয়া বিপ্লব মিত্রকে কোণঠাসা করতে, আবার অন্যদিকে নিজেদের সংগঠনকে চাঙ্গা করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন অর্পিতা ঘোষ।

জানা গেছে, এতদিন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় তৃণমূলের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্লক কমিটিতে কখনো শঙ্কর চক্রবর্তীর অনুগামী, কখনও বাচ্চু হাসদার অনুগামী, আবার কখনও বা বিপ্লব মিত্রের অনুগামীরা ছিলেন। কিন্তু সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে এখন প্রবল চেষ্টা করছেন জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষ। কোনো নির্দিষ্ট নেতার অনুগামী নয়, যিনি দলের অনুগামী হয়ে কাজ করতে পারবেন তাকেই দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিচ্ছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার 64 টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে অধিকাংশ অঞ্চল কমিটি পরিবর্তন করা হয়েছে। যেখানে দলের জন্য ভালো কাজ করে এমন ব্যাক্তিত্বদেরই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যেমন, বালুরঘাটে গ্রাম পঞ্চায়েতের দায়িত্ব রূপক দত্তকে, অমৃতখন্ডে দেবদূত বর্মনকে, চিঙ্গিশপুর কবিতা মহন্ত মাহাতোকে, জলঘরে প্রভাস বর্মনকে দায়িত্ব দিয়েছে তৃনমূল। কিন্তু দলের জন্য এই মুখগুলোকে কাজে লাগালেও জেলার অন্যান্য তৃণমূল নেতারা তাদের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের সরিয়ে দেওয়ায় কি জেলার তৃণমূল নেতৃত্বের ওপর ক্ষুব্ধ হবেন না! এখন তা নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।

এদিন এই প্রসঙ্গে তপনের তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী বাচ্চু হাসদা বলেন, “দলে নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে কোন্দল রয়েছে, তা মেটানোই এখন লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই তপন বিধানসভার অন্তর্গত অধিকাংশ অঞ্চল কমিটি পরিবর্তন করা হয়েছে। গোষ্ঠী কোন্দলের কথা মাথায় রেখে নতুন মুখ বাছাই করে অঞ্চল সভাপতি পদের দায়িত্ব দিয়েছি। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে সংগঠন আরও শক্তিশালী করতে হবে। সেই লক্ষ্যেই কাজ চলছে।”

অন্যদিকে এই প্রসঙ্গে বালুরঘাট বিধানসভার তৃণমূলের কনভেনার বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বালুরঘাট ব্লকের যেই কয়েকটি অঞ্চলে আমার দায়িত্ব ছিল, সেগুলিতে সভাপতি পরিবর্তন করেছি। নতুন মুখের পাশাপাশি সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী এমন ব্যক্তিদের দায়িত্ব দিয়েছি। আশা করি, নতুন করে আর গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তৈরি হবে না।” তবে এই ব্যাপারে জেলা নেতৃত্বের কি মনোভাব; কি বলছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষ!

এদিন এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এর আগে অনেককেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাই নতুনদের দায়িত্ব দিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। নতুনদের দায়িত্ব দেওয়া হলেও কনভেনাররাই তাদের পরিচালনা করবেন। পাশাপাশি পুরনো সভাপতিদের যথাযথ জায়গা দেওয়া হবে। সকলকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করাই এখন মূল লক্ষ্য।”

তবে অর্পিতাদেবী যে কথাই বলুন না কেন, যাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল, তারা এখন দলের পক্ষে থেকে কাজ করবে, নাকি বিপক্ষে থেকে! এই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। আর যদি তারা দলের বিপক্ষে থেকে কোনো নেতার অনুগামী হয়ে কাজ করতে শুরু করেন, তাহলে তা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দেবে বলেই মত বিশেষজ্ঞ মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!