এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > শোভনের তৃণমূলে ফেরত যাওয়া সময়ের অপেক্ষা? দিলীপের ওপর ক্ষুব্ধ শীর্ষ নেতৃত্ব?

শোভনের তৃণমূলে ফেরত যাওয়া সময়ের অপেক্ষা? দিলীপের ওপর ক্ষুব্ধ শীর্ষ নেতৃত্ব?


লোকসভা নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা, বিধায়কদের বিজেপিতে যোগদান করাতে শুরু করেন বঙ্গ বিজেপি তৃণমূলের প্রাক্তন সেকেন্ড-ইন-কমান্ড মুকুল রায়। স্বাভাবিকভাবেই মুকুল রায়ের এই অনবদ্য ক্যারিশমায় যখন বিজেপির একাংশ খুশি হয়েছিল, ঠিক তখনই কিছুটা হলেও যেন কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলে দাবি মুকুল রায়-ঘনিষ্ঠদের।

মুকুলবাবুর ওই সব ঘনিষ্ঠ নেতাদের বিস্ফোরক দাবি, দিলীপবাবু নাকি যারপরনাই চেষ্টা করছিলেন, কিভাবে মুকুলবাবুকে দমানো যায়! যার ফল হিসেবে মুকুল রায় অনেক হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের যোগদান করালেও, একটা ব্যাটিংয়েই ছক্কা মারার চেষ্টা করেন দিলীপ ঘোষ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত স্নেহের পাত্র হিসেবে পরিচিত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কলকাতা পৌরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে বিজেপিতে আনবার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন তিনি।

গেরুয়া শিবিরের ওই অংশের দাবি, আর এই গোটা প্রক্রিয়ায় দিলীপ ঘোষকে সহযোগিতা করেন বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। পরিস্থিতি এতটাই ঘোরালো হয়ে ওঠে যে, শোভন চট্টোপাধ্যায়কে বিজেপিতে যোগদান করাতে তাঁর বাড়িতে গিয়ে তাঁর সাথে একপ্রস্থ আলোচনা করতেও দেখা যায় জয়প্রকাশবাবুকে। অবশেষে সাফল্য পায় দিলীপ ঘোষ এবং জয়প্রকাশ মজুমদারের জুটি। গত 14 আগস্ট দিল্লিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় দপ্তরে শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং তার বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে গেরুয়া শিবিরে পতাকা তুলে দেওয়া হয়।

যেখানে ডেকে নেওয়া হয় রাজ্য বিজেপির নেতা মুকুল রায়কে। বিশেষজ্ঞ মহলের দাবি, শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিজেপিতে যোগদান করিয়ে নিজেদের দর বাড়িয়ে, মুকুল রায়ের দর কমাতে চেয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। কিন্তু দীলিপবাবু মুকুলবাবুর বিরুদ্ধে ছক্কা মারার চেষ্টা করলেও তা যেন ক্যাচ আউটে পরিণত হয়ে গেল! বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, চাণক্যর বিরুদ্ধে লড়াই করতে গেলে চাণক্য-নীতি নিয়েই লড়াই করতে হয়। কিন্তু কি এমন হল, যার কারণে দিলীপবাবু গোল খেয়ে গেলেন!

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বস্তুত, অবস্থার অভূতপূর্ব পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে ভাতৃদ্বিতীয়ার দিন। দীর্ঘদিনের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে ভাইফোঁটা পাওয়ার জন্য সটান তার বাড়িতে উপস্থিত হন শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং তার বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়। অনেকেই দাবি করতে শুরু করেন, দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে ভাইফোঁটা নিয়ে কি এবার তৃণমূলে যাওয়ার রাস্তা খোলা রাখলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়!

এখনও পর্যন্ত সেই ব্যাপারে নিশ্চিত কোনো খবর পাওয়া না গেলেও, পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে তাতে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তৃণমূলে ফেরা যে এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল। কেননা বিজেপিতে আসবার পর শোভন চট্টোপাধ্যায়কে বিজেপি গুরুত্ব দিলেও অতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি তার বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যার কারণে বৈশাখীদেবীর চরম ‘গোঁসা’ হয়েছিল বলেও দাবি করা হয় কোনো কোনো মহল থেকে।

দলের সঙ্গে সম্পর্কের তিক্ততার কারণে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের সঙ্গে গিয়ে দিল্লিতে দেখাও করে আসেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়। তবে এরপর থেকে সেইভাবে বিজেপির আর কোনো কর্মসূচিতে দেখা যায়নি তাদের। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র জল্পনা ছড়িয়েছিল। আর এরপরই মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বাড়িতে তাদের যাত্রা এবং তৃণমূলের সঙ্গে সেই শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সম্পর্কের মধুরতা বাড়ে। যার জেরে এখন শোভন চট্টোপাধ্যায়কে বিজেপিতে যোগদান করানো দিলীপ ঘোষ মহা বিপদে পড়েছেন বলে দাবি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

সূত্রের খবর, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা তীব্র থেকে তীব্রতর হতেই দিলীপ ঘোষের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেছে দলের একাংশ। শীর্ষ নেতৃত্বের অনেকেই বলছেন, শুধুমাত্র নিজের ব্যক্তিগত ক্যারিশমা দেখানোর জন্য কেন এইভাবে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করলেন দিলীপবাবু! যদিও বা তিনি শোভন চট্টোপাধ্যায়কে আনলেন, তাহলে কেন তাকে আবার ফিরিয়ে দেওয়ার মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হল? দলের ওই শীর্ষস্তরের বক্তব্য – এক্ষেত্রে তো মুকুল রায় বেশি সাফল্য পেয়েছেন।

কারণ তিনি যাদের যাদের দলে এনেছেন, তারা এখনও পর্যন্ত বিজেপিতেই রয়েছেন। আর নেতৃত্বদের একাংশের শোভন চট্টোপাধ্যায় তৃণমূল ঘনিষ্ঠতা নিয়ে দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধ মন্তব্য, এখন বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে প্রবল অস্বস্তিতে ফেলতে শুরু করেছে। এদিকে, বিজেপির হেড কোয়ার্টার দিল্লিতে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, এই মাসেই রাজ্য কমিটিতে বড়সড় রদবদল আসতে চলেছে। তার আগে, এই শোভন-কান্ড নতুন মাত্রা যোগ করল বঙ্গ-বিজেপির অন্দরমহলের রাজনীতিতে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। এখন গোটা পরিস্থিতি কোন দিকে এগোয়, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!