এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে হেভিওয়েট তৃণমূল বিধায়কের? নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই প্রতিবাদ

দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে হেভিওয়েট তৃণমূল বিধায়কের? নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই প্রতিবাদ

“দিদিকে বলো” কর্মসূচি হবে, নাকি দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বজায় থাকবে! এখন এই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের অন্দরমহলে। খবরের কাগজের দোকানদার থেকে শুরু করে চা বিক্রেতা, উত্তর দিনাজপুর জেলার প্রায় প্রত্যেকেই জানেন, ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরীর সঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইলাল আগরওয়ালের সম্পর্কের তিক্ততার কথা। কিন্তু জেলার মাটিতে সেই তিক্ততা বজায় থাকলেও রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে সেই তিক্ত ভাব প্রকাশ্যে আনেন না জেলার নেতারা।

পাছে দলনেত্রী তথা জেলা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে তাদের বকুনি খেতে হয়। আর তাই জেলায় যে পরিস্থিতিই থাকুক না কেন, শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে নিজেদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক রয়েছে বলে প্রমাণ করতে মরিয়া থাকে জেলা নেতৃত্ব। তবে কতদিন আর খারাপ সম্পর্ককে রাজ্যের কাছে ভালো সম্পর্ক হিসেবে উপস্থাপিত করবেন তৃণমূল নেতারা! আর তাইতো এবার নিজের ঘোষিত ব্লক সভাপতিকে “দিদিকে বলোর” মিটিংয়ে ঢুকতে না দেওয়ায় তৃণমূলের কলকাতার বৈঠক বয়কট করলেন ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী।

জানা যায়, উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল ইসলামপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি করেছেন জাকির হুসেনকে। অন্যদিকে দলীয় বিধায়করেরই ব্লক সভাপতির করার ক্ষমতা রয়েছে দাবি করে নিজের ছেলে মেহেতাব চৌধুরীকে সেই ইসলামপুরের সভাপতি করে দেন আব্দুল করিম চৌধুরী। যা নিয়ে বিধায়ক বনাম জেলা সভাপতির দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। তবে জেলা সভাপতির দেওয়া জাকির হুসেনই ইসলামপুর ব্লক সভাপতি বলে ধরে নিয়ে এদিন “দিদিকে বলো” মিটিংয়ে মেহেতাব চৌধুরীকে ঢুকতে দেয়নি তৃণমূল নেতৃত্ব। আর নিজের ছেলের এই অপমান সহ্য করতে না পেরে মিটিংয়ের ঢোকেননি আব্দুল করিম চৌধুরী।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই প্রসঙ্গে আব্দুল করিম চৌধুরী বলেন, “দলের জেলা সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল এসব করছেন। এতদিন যারা “দিদিকে বলো” কর্মসূচি করেছেন, এদিন তাদের নিয়ে রিভিউ মিটিং ছিল। সবাইকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু আমার ঘোষিত ব্লক সভাপতি মেহেতাব চৌধুরীকে ডাকা হয়নি। কানাইয়ালাল মেহেতাবের নাম না দিয়ে জাকিরের নাম দিয়েছেন। তারপরেও আমি সেখানে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম ওখানে নেতৃত্ব থাকবে, তাদের বলব যে আমার ব্লক সভাপতিকে ডাকা হয়নি। কিন্তু মেহেতাবকে নিচেই আটকে দেওয়া হয়েছিল।”

তিনি আরও বলেন, “এর মধ্যে কানাইয়ালাল এসে আমাকে ভেতরে যেতে বলে। আমি ওকে বলি যে আমাকে এত অপমান কেন কর! এতে কি তোমার ভালো লাগে! এর পরে সেখানে আমি আধঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর চলে এসেছি।” এদিকে আব্দুল করিম চৌধুরীর এহেন অভিযোগ মানতে নারাজ জেলা তৃণমূল সভাপতি কানায়ালাল আগরওয়াল। এদিন তিনি বলেন, “করিম সাহেবকে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আমি তাকে ভেতরে বসার জন্য বলি। কিন্তু তিনি বলেন মেহতাবকে না আসতে দিলে আসবেন না। জেলা সভাপতি হিসেবে আমি আমার কর্তব্য করেছি। যাদের মিটিংয়ে ডাকা হয়েছে, তাদের রাজ্য থেকেই ফোন করে ডাকা হয়েছিল। নাম না থাকলে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয় না।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামান্য ইসলামপুরের ব্লক সভাপতি নিয়ে যেভাবে জেলা সভাপতি বনাম বিধায়কের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে, এবং রাজ্যের বৈঠকেও যেভাবে তা প্রকাশ্যে চলে এল, তাতে উত্তর দিনাজপুর জেলা যে তৃণমূলের জন্য এখনও সুরক্ষিত নয়, তা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তবে রাজ্যস্তরের বৈঠকে নিজের ছেলেকে ব্লক সভাপতি হিসেবে ঢুকতে না দেওয়ায়, জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে আব্দুল করিম চৌধুরীর সরব হওয়ায় রাজ্য নেতৃত্ব বিধায়ক এবং জেলা সভাপতির সম্পর্ক মেরামত করতে কোনো পদক্ষেপ নেয় কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!