এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > গেরুয়া উত্থান রুখতে তৃণমূলের চেয়ারম্যান নিজে গিয়ে সিপিএমের পার্টি অফিস খুলে দিচ্ছেন!

গেরুয়া উত্থান রুখতে তৃণমূলের চেয়ারম্যান নিজে গিয়ে সিপিএমের পার্টি অফিস খুলে দিচ্ছেন!

অদৃষ্টের কি নিষ্ঠুর পরিহাস! 2011 সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কর্মীদের বলেছিলেন, “বদলা নয় বদল চাই।” তবে তা সত্ত্বেও 35 বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে তৃণমূল কর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বামেদের দখলে থাকা পার্টি অফিস দখল করে নিয়েছিল। যার ফলে তৎকালীন সদ্য ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়া বিরোধীদল বামফ্রন্টের তরফে শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার অভিযোগ করা হয়েছিল।

সেই সময় বামফ্রন্টের তোলা সেই অভিযোগে বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করতে দেখা যায়নি শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। কিন্তু লোকসভা নির্বাচন 2019 সালে রাজ্যে বামেদের অস্তিত্ব যখন সংকটের মুখে, যখন দিকে দিকে উড়তে শুরু করেছে পদ্মফুলের পতাকা, ঠিক তখনই চাপে পড়ে পার্টি অফিস ফিরিয়ে দিয়ে রাজনৈতিক সৌজন্যের নজিড় গড়তে হল তৃণমূল কংগ্রেসকে। অনেকে বলছেন, সৌজন্য নয়, রামকে ঠেকাতে বামকে গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করছে তৃণমূল কংগ্রেস।

আর তাইতো একসময় বামেদের পার্টি অফিস দখল করে নিলেও এবার সেই পার্টি অফিস ফিরিয়ে দিয়ে বিজেপিকে বিরোধীদলের জায়গা থেকে সরাতে চাইছে রাজ্যের শাসক দল। বস্তুত, গত 2011 সালে ক্ষমতায় আসার পর ব্যারাকপুর শহরের 21 নম্বর ওয়ার্ডের চিড়িয়া মোড়ের কাছে শান্তিবাজার পোর্টব্লেয়ার লাইনে সিপিএমের ওয়ার্ড কমিটির অফিসটি দখল করে নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সময় তৃণমূলের বিরুদ্ধে বামেদের পক্ষ থেকে পার্টি অফিস দখল করার অভিযোগ করা হলেও তৃণমূল তাতে মান্যতা দেয়নি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু হঠাৎই সকলকে চমকে দিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় সেই পার্টি অফিসটি খুলে সিপিএমের নেতৃত্বের হাতে তুলে দিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। যা দেখে অনেকেরই চোখ কপালে উঠে যাচ্ছে। জানা যায়, এদিন পার্টি অফিসে নিজেদের লাগানো তালা খুলে দিয়ে সিপিএম নেতা তড়িৎ তোপদারকে অফিসে স্বাগত জানান তৃণমূলের ব্যারাকপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাস। কিন্তু কেন হঠাৎ তৃণমূলের এই বোধোদয় হল? বিরোধীদলকে মর্যাদা দেওয়ার যদি এতই বাসনা তাদের মনে থাকে, তাহলে কেন 2011 সালে সিপিএমের পার্টি অফিসটি তারা দখল করে নিয়েছিল?

অনেকে বলছেন, এই বাসনা তৃণমূলের ভেতর থেকে জাগেনি। চাপের কাছে এই বাসনাকে জাগ্রত করতে হয়েছে তাদের। কেননা বর্তমানে রাজ্যে বিরোধী দল বিজেপির বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। তাই সেদিক থেকে নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতে কিছুটা অস্তিত্ব সংকটের মুখে চলে যাওয়া সিপিএমকে ফিরিয়ে এনে বিরোধীদলের জায়গা দখল করাতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস। তাই নিজেদের জায়গা সুরক্ষিত রাখতে একসময় সিপিএমের পার্টি অফিস দখল করলেও, এখন সেই পার্টি অফিসগুলো খুলে দিয়ে সৌজন্যের পরিচয় দিচ্ছে তৃণমূল নেতৃত্ব।

এদিন নিজেদের পার্টি অফিস ফিরে পেয়ে সিপিএমের তড়িৎবরন তোপদার বলেন, “অনেক পার্টি অফিসই ওরা এখন ফিরিয়ে দিচ্ছে। এটাও ফিরিয়ে দিল।” তবে এই ব্যাপারে সিপিএমের পার্টি অফিসে ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে কি বলছেন ব্যারাকপুর পৌরসভা তৃণমূলের চেয়ারম্যান উত্তম দাস? এদিন তিনি বলেন, “2011 সালে পালাবদলের পর সিপিএমের পার্টি অফিসে আমাদের দলের কেউ তালা লাগিয়ে দিয়েছিল। তবে ওটা আমাদের কেউ কোনোদিন ব্যবহার করেনি। ওরা পার্টি অফিসটি ফেরতের আবেদন করেছিল। এদিন তালা খুলে দেওয়া হয়েছে।”

তবে উত্তমবাবু যে কথাই বলুন না কেন, বিজেপির বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতেই যে তৃণমূলের এই বোধোদয়, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা। অনেকেই প্রশ্ন করছেন, সিপিএমের পার্টি অফিস দখল করে তা ফিরিয়ে দিলেও বিজেপির পার্টি অফিস অনেক জায়গায় তৃণমূল দখল করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে তৃণমূল এবার সিপিএমের মত বিজেপিকেও তাদের পার্টি অফিস ফিরিয়ে দেবে তো! প্রশ্নটা উঠছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অন্দরমহলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!