এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > দিদিকে বলো কর্মসূচিকে ঘিরে ক্রমশ বাড়ছে গোষ্ঠীকোন্দল, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শাসকদলের অস্বস্তি

দিদিকে বলো কর্মসূচিকে ঘিরে ক্রমশ বাড়ছে গোষ্ঠীকোন্দল, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শাসকদলের অস্বস্তি

সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে দলীয় স্তরে কিছু নেতৃত্বের জন্য নানা জায়গায় ভালো ফল করতে পারেনি তৃনমূল। যার মধ্যে মুর্শিদাবাদ জেলাতেও রেকর্ড তৈরি করতে পারেনি তারা। এই জেলার দু’টি লোকসভা কেন্দ্রে রাজ্যের শাসকদল জয়ী হলেও সামান্য কিছুর জন্য বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র তৃনমূলের হাতছাড়া হয়ে যায়। জানা যায়, এই লোকসভা কেন্দ্রের বহরমপুর এবং কান্দি শহর কংগ্রেসকে অনেকটাই এগিয়ে দেয়।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, এই দুই শহরে দক্ষ নেতৃত্বর অভাবের জন্যই তৃনমূলের এই বিপর্যয়। আর তাই তো এবার জেলা পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বহরমপুর শহরের নেতাদের কালিদাস বলে কটাক্ষ করেছেন। সূত্রের খবর, সদ্য লোকসভা নির্বাচনে ধাক্কা খাওয়ার পরেও এখনও এখানকার নেতাদের সচেতনতা নেই। এখনও তাঁরা নিজেদের মধ্যেই লড়াই করতে ব্যস্ত। একে-অপরকে কিভাবে টাইট দেবে তার ঘুঁটি সাজাচ্ছেন।

রাজ্য নেতৃত্বর নির্দেশে নেতারা ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি করলেও সেখানে তেমন সাড়া মিলছে না। জানা গেছে, এই দুই শহরে এই কর্মসূচি কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি। কিছু কিছু গ্রামীণ এলাকায় এই কর্মসূচী চললেও তা নিয়েও বহু প্রশ্ন উঠছে। কোন গোষ্ঠীর নেতারা এই কর্মসূচি করবেন, তা নিয়েই দড়ি টানাটানিতে ব্যস্ত এখানকার নেতারা। ফলে ক্রমশ তীব্র হচ্ছে শাসকদলের অস্বস্তি।

এদিন এই প্রসঙ্গে তৃনমূলের এক নেতা বলেন, “দিদিকে বলো কর্মসূচিতে গিয়ে নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। নেতাদের বিরুদ্ধে ভুরিভুরি অভিযোগ শুনতে হচ্ছে। স্কুলের পোশাক তৈরীর বরাত পাওয়া সংস্থা থেকেও নেতারা কাটমানি খেতে চাইছেন। কয়েকদিন আগে দৌলতাবাদে প্রচারে গিয়ে নানা অপ্রিয় প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে।” প্রসঙ্গত, গত লোকসভা নির্বাচনে এই বহরমপুর শহর থেকে তৃণমূল প্রায় ৬০ হাজার ভোটে পিছিয়ে গেলে এই শহরে কংগ্রেস জয়ের পায়।

দলীয়স্তরেই অভিযোগ, দলের সব নেতারা আন্তরিকভাবে ময়দানে না নামার জন্যই তৃণমূলের এই ফল হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, নির্বাচনের পর এই শহরে দলের সংগঠনের ভিত আরও দুর্বল হয়ে গিয়েছে। দিদিকে বলো কর্মসূচিকে সামনে রেখে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দল ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও এখানে সম্পূর্ণ উল্টো ছবি দেখা যাচ্ছে। নেতাদের এখনও সেভাবে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরতে দেখা যায়নি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই প্রসঙ্গে বহরমপুর শহরের তৃণমূলের সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “বিধায়ক না থাকায় শহরে দিদিকে বলো কর্মসূচি কিছুটা ধীর গতিতে চলছে। তবে বহরমপুরের বাসিন্দারা ফোন নম্বর পেয়ে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ জানাচ্ছেন।” কিন্তু শহর সভাপতি এই কথা বললেও কান্দির তৃণমূল নেতারা বলেন, উপর থেকে নির্দেশ না আসায় আমরা এখনও শহরে ওই কর্মসূচি না করে গ্রামে গিয়ে গিয়ে রাত কাটাচ্ছি। গোকর্ণ হিজলের মতো এলাকায় কর্মসূচি চলছে।

কর্মীদের মতে, গ্রামীণ এলাকার ভোটাররা দলের সঙ্গেই রয়েছেন। তবে লোকসভায় এই শহর থেকে দল প্রায় ১৪ হাজার ভোটে তৃণমূল পিছিয়ে পড়েছিল। তাই উপরতলার নির্দেশ আসুক বা না আসুক, এই কর্মসূচিকে সামনে রেখে কান্দি শহরেই নেতাদের ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত ছিল। ইতিমধ্যেই এই শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বিভিন্ন কারণে ক্ষোভে ফুঁসতে শুরু করেছেন। তাঁদের অভাব-অভিযোগ শোনার মতো কেউ নেই।

সাধারণ মানুষের সমস্যা দূরীকরণ তো দূর অস্ত, উল্টে কান্দিতেও শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর টানাপোড়েন আগের মতোই রয়ে গিয়েছে। দলের সংগঠনকে মজবুত করার জন্য সব গোষ্ঠীর নেতাদের এক হয়ে চলা উচিত বলে দাবি কর্মীদের। এদিন এই প্রসঙ্গে কান্দির তৃণমূল নেতা গৌতম রায় বলেন, “উপর থেকে না বললে দিদিকে বলো কর্মসূচি আমরা নিজেদের ইচ্ছেমতো করতে পারব না। এখন গ্রামে যাচ্ছি। সেখানকার লোকজনদের সঙ্গে কথা বলছি। গ্রামে রাত কাটানোর পর পতাকা তুলে ফিরছি।”

কিন্তু গ্রামের থেকেও কান্দি এবং বহরমপুরে এই কর্মসূচিতে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া উচিত বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। লোকসভায় শহরেই বেশি খারাপ ফলাফল হয়েছে তৃণমূলের। কিন্তু তা সত্ত্বেও যেভাবে তৃণমূল নেতারা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছেন, তাতে হতবাক সকলেই। ফলে, শাসকলদের অন্দরেই গুঞ্জন ‘ভোটগুরু’ প্রশান্ত কিশোরের ফর্মুলা মেনে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিকে ঘিরে ক্রমশ বাড়ছে গোষ্ঠীকোন্দল, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শাসকদলের অস্বস্তি।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!