পদ হারাতেই হেভিওয়েট নেতা এককাট্টা করছেন দলের বিদ্রোহীদের! ঘুম উড়তে চলেছে তৃণমূল নেত্রীর? উত্তরবঙ্গ রাজ্য May 29, 2020 প্রশাসক পদে নাম না থাকার পরই রীতিমত সরব হতে দেখা গিয়েছিল তাকে। আর এবার রাখঢাক না করে প্রকাশ্যে দলের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে আক্রমণ করতে শুরু করলেন জলপাইগুড়ি পৌরসভার তৃণমূলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মোহন বসু। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, জেলা তৃণমূলের সভাপতি কিষাণ কুমার কল্যাণীর বিরুদ্ধে এবার নতুন টিম গঠন করতে শুরু করে দিয়েছেন তিনি। যা নিঃসন্দেহে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দেবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের অন্দরমহলে কিষাণ কুমার কল্যাণী নতুন সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই জলপাইগুড়ি পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান মোহন বসু সঙ্গে তার বিবাদ তৈরি হতে শুরু করে। সম্প্রতি সেই পৌরসভার মেয়াদ শেষের পর অন্যান্য পৌরসভার মত এখানে বিদায়ী চেয়ারম্যানকেই প্রশাসক করা হবে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু তা না করে সেখানে ভাইস চেয়ারম্যান পাপিয়া পালকে প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়েছে। এমনকি বিদায়ী বোর্ডের চেয়ারম্যানকে প্রশাসক বোর্ডের সদস্য পদেও রাখা হয়নি। যার পর থেকেই ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছেন সেই মোহনবাবু। এক্ষেত্রে জেলা তৃণমূল সভাপতির বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ করেছেন তিনি। সম্প্রতি সেই মোহন বসুর বাড়িতে বিজেপি নেতাদের উপস্থিতির পর তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা তৈরি হতে শুরু করে। তবে এবার সরাসরি জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের নিয়ে ময়দানে নেমে পড়ছেন তৃণমূলের মোহন বসু বলে খবর ছড়িয়ে পড়ল। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার মোহন বসুর বাড়িতে জেলার বিভিন্ন নেতৃত্ব, ব্লক নেতৃত্ব এবং বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত হন। জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের সভাপতি কিষান কল্যাণীর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা হিসেবে পরিচিত রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায় সহ আরও অনেককেই এদিন মোহন বসুর সঙ্গে দেখা করতে দেখা যায়। আর এরপরই রীতিমতো জল্পনা তৈরি হয়েছে যে, তাহলে কি এবার প্রকাশ্যে জেলা তৃণমূল সভাপতির বিরুদ্ধে রীতিমতো টিম গঠন করে ময়দানে নামতে চলেছেন মোহন বসু? আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - কিন্তু যদি এই সম্ভাবনা সত্যি হয়, তাহলে জলপাইগুড়ি জেলা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিন্তা অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করছে রাজনৈতিক মহল। হঠাৎ তিনি কেন মোহন বসুর বাড়িতে গেলেন? এদিন এই প্রসঙ্গে রাজগঞ্জ তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায় বলেন, “আমি মোহনবাবুর সঙ্গে দেখা করেছি। ওকে বলেছি, দল ছাড়বেন না। আমাদের দলের নেত্রীই প্রধান। কে সভাপতি আমরা বুঝি না। বিক্ষুব্ধ ব্লক সভাপতি, যাদের বের করে দেওয়া হয়েছে, লকডাউন উঠুক তারপর তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলব।” তিনি আরও জানিয়েছেন, “তখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি কথা দিয়েছেন, তৃণমূল থেকেই দলকে কিভাবে আরো শক্তিশালী করা যায়, সেটা তিনি করবেন।” তবে যেভাবে তার বাড়িতে প্রচুর নেতা-কর্মী-সমর্থকদের ভিড়ের আনাগোনা, তাতে সকলে তার কাছে কি আবদার নিয়ে এসেছিলেন? এদিন এই প্রসঙ্গে মোহন বসু বলেন, “বৃহস্পতিবার জেলার বিভিন্ন ব্লকের নেতৃত্ব, জেলা নেতৃত্ব এসেছিলেন। বিদায়ী কাউন্সিলররা এসেছিলেন। জেলা পরিষদের সদস্যরাও এসেছিলেন।” মোহনবাবু আরও জানান, “তারা আগেও আমার পাশে ছিলেন। এখনও আছেন, একথা বলে গিয়েছেন। ওরা বলেছেন, আমি যে সিদ্ধান্তই নিই না কেন, ওনারা সমর্থন করবেন। আমরা দিদির নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল। তবে একটাই কণ্ডিশন দলের জেলা কমিটি থেকে কিষান কল্যানীকে সরাতে হবে। এই ব্যাপারে জুন মাসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব। দলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আলাদাভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাব। এবার তা আরও শক্তিশালী হবে।” তবে তার বিরুদ্ধে যখন মোহন বসু এভাবে সরব হচ্ছেন এবং মোহনবাবুর সঙ্গে দলের বিভিন্ন নেতা কর্মী দেখা করছে, তখন কি তিনি চাপে পড়ছেন না? এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের সভাপতি কিষাণ কুমার কল্যাণী বলেন, “এই দলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বোচ্চ নেত্রী। সুতরাং তিনি যদি মনে করেন আমাকে সরিয়ে দেবেন, তাহলে তা করতেই পারেন। তাছাড়া সুপ্রিমো যদি মনে করেন আমি থাকলে দলের ক্ষতি হচ্ছে, তাহলে আমি সরে যাব। কিন্তু এটা বলে দিতে চাই, মোহনবাবুর কথায় আমি সরছি না।” তবে জেলা তৃণমূল সভাপতি যে কথাই বলুন না কেন, মোহন বসু একের পর এক যে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছেন, তাতে তাকে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিন্তা যে অনেকটাই বাড়বে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -