এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > জামিন পেতেই পুলিশি অত্যাচার নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করে কান্নায় ভেঙে পড়লেন কংগ্রেস নেতা সন্ময়

জামিন পেতেই পুলিশি অত্যাচার নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করে কান্নায় ভেঙে পড়লেন কংগ্রেস নেতা সন্ময়


সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া সংক্রান্ত ঘটনায় গ্রেপ্তারিকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হয়ে উঠেছে। শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতিবাদ করায় পুলিশ এসে রাতারাতি বাড়ি থেকে টেনে থানায় নিয়ে চলে যায়। এরকম একটি ঘটনার সাক্ষী রইল রাজ্যবাসী। খড়দা থেকে সাইবারক্রাইমের অভিযোগে সম্প্রতি কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন সাংবাদিক সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।

কংগ্রেস নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। এই গ্রেপ্তারি ইস্যুতে কংগ্রেসের সাথে একই সুরে সুর মিলিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজ্য বিজেপি। কংগ্রেস নেতা সম্ময় বন্দোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় কুরুচিকর মন্তব্য করেছিলেন। তার ফলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তৃণমূল যুব নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কুরুচিকর মন্তব্য করেছিলেন। তাই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। রবিবার সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুরুলিয়া জেলা আদালত জামিন দেয়। জামিন মঞ্জুর হওয়ার খবরে আদালতের বাইরে থাকা দলীয় নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন।

কংগ্রেস নেতা সন্ময়‌ বন্দোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি জানান, ‘রাজ্যে জঙ্গলের রাজত্ব চলছে। অগণতান্ত্রিক ভাবে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আমার অপরাধ কী সেটাও পর্যন্ত আমাকে জানানো হয়নি। আমার খড়দহের বাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ।

উল্লেখ্য, গত 23 সেপ্টেম্বর যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমত কড়া মন্তব্য করেছিলেন কংগ্রেস মুখপাত্র সন্ময় বন্দোপাধ্যায়। তাঁর মন্তব্যকে কুরুচিকর আখ্যা দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইমের আওতায় মামলা করা হয়। 17 ই অক্টোবর রাতে সম্ময়বাবুকে তাঁর বাড়ি থেকে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে এসে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সেদিনের ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি বর্ণনা দেন, শুধুমাত্র পায়জামা পরিহিত অবস্থায় তাঁকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। কি অপরাধ সেটাও তাঁকে জানানো হয়নি পরিষ্কার করে।  জামিন পাওয়ার পর সংবাদমাধ্যমে কংগ্রেস নেতা তথা বর্ষীয়ান সাংবাদিক সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দু’দিন আমাকে শারীরিক অত্যাচার করা হয়েছে৷ অর্ধনগ্ন করে নিম্নাঙ্গে মারা হয়েছে৷ চড় কিল ঘুষি মেরে আমাকে মেরাফেরা হচ্ছে৷ আমার সহকর্মীদের সহযোগিতায় প্রাণে বেঁচে ফিরেছি৷’’ বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন সন্ময়৷ বলেন, ‘‘পুলিশের থার্ড ডিগ্রি কি এতদিন শুনেছিলান৷ কিন্তু, গত দু’দিন ধরে আমার উপর যা হয়েছে, তা ভাষায় প্রকাশ যাবে না৷ শুধু প্রাণে বেঁচে ফিরেছি৷’’ তাঁর আরও দাবি, আমি যদি পিসি ভাইপোর বিরুদ্ধে কিছু বলে থাকি, তাহলে তো মানহানি মামলা হতে পারত৷ কিন্তু, এটা কী হল?’’ এদিন সন্ময় বন্দোপাধ্যায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন দলীয় শীর্ষ নেতৃত্ব তথা নেতাকর্মীদের এবং বিজেপি নেতাদের। যাঁরা এই দুঃসময়ে তাঁর পাশে ছিলেন, তাঁদের প্রত্যেককে তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন তিনি প্রশাসনের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ‘বাংলায় জঙ্গলের রাজত্ব চলছে। ‘পিসি-ভাইপো’ই সব করাচ্ছে।’ কংগ্রেস নেতা সন্ময় বন্দোপাধ্যায়ের এদিন শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর হয়েছে। তাঁকে সপ্তাহে একদিন তদন্তকারী অফিসারের সাথে দেখা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সন্ময় বন্দোপাধ্যায়ের জামিনে মুক্তির খবরে কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র এদিন জানিয়েছেন, ‘অবশেষে সত্যের জয় হল। সন্ময়ের উপরে যেভাবে পুলিশি ও তৃণমূলী অত্যাচার চালানো হয়েছে তা ন্যাক্কারজনক। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনের পথে লড়বে দল।’

সূত্রের খবর, সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সুপরিচিত হলেন সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর একটি ইউটিউব চ্যানেলও আছে বলে জানা যায়। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে যথেষ্ঠ অ্যাক্টিভ থাকেন তিনি। নানান সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে নিয়মিত পোস্ট করতেন সন্ময় বন্দোপাধ্যায়। চাঁচাছোঁলা ভাষায় সরকারের সমালোচনা করতেও তিনি কখনও দ্বিধাবোধ করেননি।

প্রাক্তন কাউন্সিলর সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুরুলিয়া থানার পুলিশ তুলে নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে যৌথভাবে সরব হয়েছিলেন বাম ও কংগ্রেস দল। সেই প্রতিবাদে গলা মিলিয়েছিলেন বিজেপি।  আপাতত সন্ময় মুখোপাধ্যায়ের জামিনে মুক্তির খবরে রাজ্য রাজনীতিতে স্বস্তির নিঃশ্বাস। তবে পরবর্তী কি ঘটনা ঘটতে চলেছে তার দিকে কড়া নজর রাখছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!