বাড়িতে বসে ‘নেতাগিরি’ করার দিন শেষ – জঙ্গলমহলেই স্পষ্ট করলেন পার্থ চ্যাটার্জি কলকাতা পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া রাজ্য February 28, 2019 গতকাল ঝাড়গ্রামে কোর কমিটির বৈঠকে তৃণমূলের মহসসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরই কোপের শিকার হলেন দলীয় নেতারা। দেবেন্দ্রনাথ হলে আয়োজিত সেই মিটিংয়ে সহযোদ্ধাদেরই হুঁশিয়ারী দিয়ে মন্ত্রী বললেন,”কাজ করুন, না হলে পদ ছাড়ুন। বাড়িতে বসে থাকলে চলবে না। বুথে নেমে কাজ করতে হবে।” এছাড়া ছাত্রযুবদের নিয়েই বুথ কমিটি গঠন করার কথা বলেন তিনি। পাশাপাশি বিধায়কদের কোলকাতা না গিয়ে এলাকায় বুথে বুথে যাওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। এমনকি চারজন বিধায়ক সহ বিভিন্ন নেতাকে নিয়ে নির্বাচনী কমিটিও গঠন করে দেন তিনি। এবং স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন,বোর্ড গঠনকালে তৃণমূলের মধ্যে কোনো দলীয় কোন্দল বরদাস্ত করবেন না তিনি। গতকালের বৈঠকে দল ও শাখা সংগঠনের সব স্তরের নেতা-নেত্রী ও জনপ্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন। তৃণমূল সূত্রের খবর,লোকসভা ভোটের মুখে দলীয় নেতাদের কাজের ঢিলেমি দেখে উষ্মাও প্রকাশ করেন তিনি। তারপরই ঝাড়গ্রাম জেলায় দলের নেতারা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন না বলে রীতিমতো ধমক দিয়ে দেন পার্থ বাবু। রামগড়ে জেলা শিক্ষণ প্রশিক্ষণ সংস্থার দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের উদ্বোধনও করেন মন্ত্রী। রামগড়ে মঞ্চ উঁচু হওয়ায় মঞ্চে না উঠতে পারলেও নীচে বসেই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন তিনি। পরে ঝাড়গ্রাম শহরে সিদো-কানহো, বিরসা মুণ্ডা ও স্বামী বিবেকানন্দের মূর্তির আনুষ্ঠানিক উন্মোচন করেন পার্থ। তারপরই জেলাশাসকের দপ্তরে পুর এলাকার ‘হাউসিং ফর অল’ প্রকল্পের উপভোক্তাদের হাতে অনুমোদনপত্র তুলে দেন তিনি। এ প্রসঙ্গে পার্থ বাবু বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতো পরিশ্রম করছেন যাদের উন্নয়নের জন্যে,তাঁরা যেন কোনোভাবেই প্রকল্প থেকে বঞ্চিত না হন। কারোর কোনো অভাব,অভিযোগ থাকলে সত্ত্বর প্রশাসনের জন্যে যোগাযোগ করার অনুরোধ করেন তিনি। মানুষ যে কোনও প্রকল্পের সমস্যার কথা নির্দ্বিধায় জানাতে পারেন তারজন্যপ জেলাশাসক আয়েষা রানি এ-কে একটি সেল চালু করার পরামর্শও দেন পার্থবাবু। এরপর পরোক্ষভাবে বিজেপিকে খোঁচা মেরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন,অন্য রাজ্য থেকে লোক এনে ঝাড়গ্রামের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে৷ এলাকায় অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করছে বিরোধীরা। শান্তি ও সম্প্রীতির নষ্ট করে এলাকায় আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সরকারের পক্ষে একা সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। এরপর ঝাড়গ্রামের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন,প্রাক্তন বাম সরকারের আমলের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জামানার তুলনা করলেই বোঝা যাবে ঝাড়গ্রামে কতোটা পরিবর্তন হয়েছে। আগে এখানে গাড়ি যাওয়ার রাস্তা ছিল না,এখন এখান থেকে ট্রাক যাচ্ছে। পার্থবাবু আরো বলেন,মুখ্যমন্ত্রী গোটা রাজ্যে যে উন্নয়ন করেছেন তার সবথেকে বেশি সুফল পাচ্ছেন ঝাড়গ্রামবাসীরা। কালে কালে এখানে মেডিক্যাল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। তবে শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছা থাকলে প্রশিক্ষণ নিতে হবে,কোনো উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করলে হবে না বলেই সাফ জানিয়ে দিলেন তিনি। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - পাশাপাশি আরো জানালেন,আগামী দিনের সাঁওতালি ভাষায় ২৮৪ জন শিক্ষক নেওয়া হবে রাজ্যে। তার জন্যে বাংলার সঙ্গে সাঁওতালি ভাষার যাতে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় এব্যাপারে ভাবনা চিন্তা করছে প্রশাসন। তবে সবাই সাঁওতালি ভাষা পড়তে চাইলে হবে না। পাঁচ থেকে সাত জনের নাম দিতে বললেন মন্ত্রী যাঁরা বাংলা বইটিকে সাঁওতালি ভাষায় অনুবাদ করতে পারবনে। এই কাজটি যত তাড়াতাড়ি ঝাড়গ্রামবাসী করতে পারবেন ততো জলদি এখানকার ছেলেমেয়েরা পড়ার সুযোগ পাবে বলেও আশ্বাস দিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী। উল্লেখ্য, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ঝাড়গ্রামে আশানুরূপ ফল করতে পারেনি তৃণমূল। ভুঁইফোঁড়ের মতো তৃণমূলের শক্তি ঘাঁটিতেই মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে বিজেপি। কাজেই লোকসভা ভোটে যাতে তৃণমূল ঝাড়াগ্রামে যাতে তার পুরানো শক্তি ফিরে পায় তার জন্যে চেষ্টার কোনো খামতি রাখছে জোড়াফুল শিবির। তাই লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে ঝাড়গ্রামে উন্নয়নমূলক কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার,এমনটাই অভিমত বিশেষজ্ঞদের। আপনার মতামত জানান -