এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > বর্ধমান > জেলার সব আসন বিজেপির দখলে, তবুও একটা পুজোও মোদীকে দিয়ে উদ্বোধন করাতে পারল না বিজেপি!

জেলার সব আসন বিজেপির দখলে, তবুও একটা পুজোও মোদীকে দিয়ে উদ্বোধন করাতে পারল না বিজেপি!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট পুজো উদ্বোধন নিয়ে কার্যত এবার বাংলায় যুদ্ধংদেহী পরিবেশ তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে। সামনে আসছে একুশের বিধানসভা নির্বাচন আর তার আগে 2020 দুর্গা পুজো দু দলের কাছেই উল্লেখযোগ্য। প্রতিবছরই পুজোতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুজো উদ্বোধন করে থাকেন। আর এ বছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টেক্কা দিতে সামনে আনা হয় গেরুয়া শিবির থেকে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে।

গত বছর অমিত শাহ এসেছিলেন রাজ্যে পুজো উদ্বোধনে। তাই নিয়ে জলঘোলাও কম হয়নি। প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে ভার্চুয়ালি পুজো উদ্বোধন করার কথা হলেও রাজ্যের অন্যতম জেলা যেটি বিজেপির দুর্গ বলে পরিচিত, সেই পশ্চিম বর্ধমানেই কিন্তু প্রধানমন্ত্রী পুজো উদ্বোধন করতে পারলেন না। আর তাই নিয়ে শরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে জোরদার গুঞ্জন। প্রসঙ্গত লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুটি আসনেই ব্যাপক ভোটে জয়লাভ করে বিজেপি। এমনকি আসানসোলের আসন থেকে বাবুল সুপ্রিয় জিতে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পান।

কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই পশ্চিম বর্ধমানের মানুষ বিজেপি থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে বলে দাবি তৃণমূলের। দলের মুখ রক্ষা করতে শেষমেশ দলীয় কার্যালয়ের দেওয়ালে মা দুর্গার ছবি সেঁটে প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে উদ্বোধন করানো হয়। সূত্রের খবর, মাত্র 5 দিন আগে খবর আসে, প্রধানমন্ত্রী তথা বিজেপির অন্যতম মুখ নরেন্দ্র মোদী জেলার যেকোনো একটি পুজোর ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন। তৃণমূলকে টেক্কা দিতে সেই অনুযায়ী বিভিন্ন বড় পূজা কমিটির কাছে গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে প্রস্তাব যায় প্রথমেই। বড় পুজো কমিটিগুলি এককথায় নাকচ করে দেয় এই প্রস্তাব।

এরপর ছোট পূজা মন্ডপগুলির কাছে প্রস্তাব গেলেও তাঁরাও রাজি হয়না। অন্যদিকে এত তাড়াতাড়ি প্রতিমার জোগাড় করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের পক্ষ থেকে অবশেষে বাধ্য হয়ে ছবিতে পুজো করার ব্যবস্থা হয়। তবে বিজেপি নেতারা এই ঘটনার দায় পুরোপুরি চাপিয়ে দিয়েছে তৃণমূলের ঘাড়ে। তাঁদের মতে, তৃণমূল সন্ত্রাস চালাচ্ছে বলেই মানুষ ভয় পাচ্ছে। তৃণমূল অবশ্য পাল্টা দাবি করেছে, বিজেপির আসল রূপ প্রকাশ পেয়েছে। আর তাই মোদি ম্যাজিক আর কাজ করছেনা শিল্পাঞ্চল এর মানুষের ওপর।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রসঙ্গত, এবছর করোনার কারণে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে ভোট প্রচার, পুজো উদ্বোধন সমস্তই ভার্চুয়ালি চলছে। আর এই ভার্চুয়ালী পুজো উদ্বোধন নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে সে কথা বলাই বাহুল্য। প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের নিরিখে পশ্চিম বর্ধমান জেলা বিজেপির শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত প্রায় 2 লক্ষ ভোটে আসানসোল থেকে বাবুল সুপ্রিয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছেন। এমনকি বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনেও জিতেছেন এস এস আলুওয়ালিয়া।

সেই সূত্রেই পশ্চিম বর্ধমান জেলার মানুষকে শুভেচ্ছাবার্তা দিতে চেয়েও বিফল হতে হল প্রধানমন্ত্রীকে, প্রকারান্তরে বিজেপি শিবিরকে। প্রসঙ্গত, বিজেপি যে ভার্চুয়াল মাধ্যমে কলকাতার পুজো উদ্বোধন করতে চলেছে সে খবর কিন্তু আগেই পেয়ে যায় তৃণমূল শিবির। পাল্টা টেক্কা দিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং আসরে নামেন। কলকাতায় সশরীরে পুজো উদ্বোধনের পাশাপাশি জেলার বেশকিছু মন্ডপকে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন তিনি। তবে পুজো উদ্বোধন অনুষ্ঠানের সূচনা হতেই দেখা গেল, পশ্চিম বর্ধমানের মানুষ কিন্তু বিজেপিকে এক গোল দিয়ে দিয়েছে।

বেশ কয়েকদিন ধরে চেষ্টা চালিয়েও সেখানকার বিজেপি নেতৃত্ব কোন পুজো কমিটিকে ভার্চুয়ালি উদ্বোধনের জন্য রাজী করাতে পারেনি। এ প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সম্পাদক জানিয়েছেন, পঞ্চাশটি পুজো কমিটিকে প্রস্তাব জানানো হলেও তাঁরা কেউ সেই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। এই অবস্থায় দলীয় কার্যালয়ে পুজো হবে ঠিক হয়। কিন্তু প্রতিমা না পাওয়ায় এদিন মা দুর্গার ছবি উদ্বোধন করেন ভার্চুয়ালি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যদিও বিজেপির জেলার সাধারণ সম্পাদক শিবরাম বর্মন এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূলের সন্ত্রাসকেই দায়ী করেছেন।

অন্যদিকে রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক জানিয়েছেন, বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদির আসল মুখ প্রকাশ পেয়েছে মানুষের কাছে আর তাই মানুষ মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় যা ঘটল তা কিন্তু খুব স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে ফেলছে বাংলার গেরুয়া শিবিরকে। খুব স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের মুখোমুখি তাঁদের হতেই হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, প্রধানমন্ত্রীকে নাকচ করা কিন্তু খুব একটা সহজে নেবেনা কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। এবং একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় গেরুয়া শিবিরের অবস্থান নিয়েও কিন্তু প্রশ্ন উঠছে। আপাতত এই ঘটনা নিয়ে গেরুয়া শিবিরের কাঁটাছেড়া যে চলবে, সে কথা নিশ্চিত করে বলা যায়।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!