জেতা সব বিধায়কদের ৫ বছর দলে রাখতে পারবে তো বিজেপি? চিন্তা বাড়ছে গেরুয়া শিবিরের বিজেপি রাজনীতি রাজ্য May 21, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – রাজ্য থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতারা কার্যত দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন যে, এবার তাদের দল ভারতীয় জনতা পার্টি রাজ্যের ক্ষমতা দখল করবে। কিন্তু বাস্তবে বিজেপির সেই আশা পূর্ণ হয়নি। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, এমনকি রাজ্য বিজেপির নানা নেতারা বাংলায় এসে নির্বাচনের আগে ঘাঁটি গাড়লেও তারা লক্ষ্য পূরণ করতে পারেননি। তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। তবে 2016 সালের নির্বাচন থেকে কিছুটা হলেও ভালো ফলাফল করেছে গেরুয়া শিবির। 77 টি আসন পেয়ে রাজ্যে বিরোধীদলের জায়গা দখল করেছে তারা। তবে এখন সেই সংখ্যা কমে 75-এ এসে দাঁড়িয়েছে। কারণ দুই সাংসদ বিধায়ক হলেও, তারা বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়েছেন। তবে 75 জন বিধায়ক থাকলেও তার মধ্যে বেশকিছু বিধায়ককে নিয়ে এখন বিজেপির অন্দরে ব্যাপক সংশয় তৈরি হয়েছে। অনেকেই দাবি করতে শুরু করেছেন, বেশ কিছুদিনের মধ্যে এর পরিবর্তন দেখতে পাওয়া যাবে। বিজেপির টিকিটে যারা জয়লাভ করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকে আবার জার্সি বদল করতে পারেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। স্বাভাবিক ভাবেই আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত বিজেপি তাদের সংখ্যা 75 ধরে রাখতে পারবে কিনা, এখন এটাই প্রশ্ন এবং জল্পনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে একাংশের মধ্যে। বলা বাহুল্য, তৃণমূল থেকে অনেক নেতা ভারতীয় জনতা পার্টিতে সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনের আগে যোগ দিতে শুরু করেছিলেন। শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত তৃণমূল কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতারা গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানোর কারণে তৃণমূল বিধানসভা নির্বাচনে দাগ কাটতে পারবে না বলেই মনে করা হয়েছিল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কারিশমা যে বাংলার মাটিতে এখনও পর্যন্ত অটুট রয়েছে, তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। দু’শোর বেশি আসন নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের ক্ষমতা দখল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেদিক থেকে বহু চেষ্টা করেও বিজেপি তাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। আর এই অবস্থায় যারা বিজেপিতে গিয়ে তৃণমূলকে দেখে নেবেন বলে রীতিমত হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, তারা এখন অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে গিয়েছেন। সদরদপ্তরে সেইভাবে নানা আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে না তাদের। এমনকি দলের অনেক বিধায়ক সেভাবে দলীয় কোনো কর্মসূচিতে উপস্থিত হচ্ছেন না বলে খবর। আর এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে রাজ্য বিধানসভায় বিজেপির যারা বিধায়ক আছেন, তাদের সকলকে নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রদান করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে বেশ কিছু বিধায়ক সেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও, 15 জন বিধায়ক তা গ্রহণ করেননি। স্বাভাবিক ভাবেই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ না করে এই সমস্ত বিজেপি বিধায়ক রাজ্যের আইনশৃংখলার প্রতি যে বকলমে আস্থা রাখলেন, তা বলাই যায়। তাই এই অবস্থায় সেই সমস্ত বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে জল্পনা ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে। তাহলে কি তারা তলায় তলায় তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছেন! তাই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা গ্রহণ না করে বিজেপির সঙ্গে আরও দূরত্ব বাড়িয়ে দিলেন এই সমস্ত বিধায়ক! এখন সেটাই প্রধান প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে একাংশের মধ্যে। যদি এই সম্ভাবনা বাস্তব হয় এবং এই সমস্ত বিজেপি বিধায়করা ঘাসফুল শিবিরে পা বাড়ান, তাহলে আগামী দিনে গেরুয়া শিবিরের বিধায়ক সংখ্যা কমতে কমতে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, সেটা নিয়েই চিন্তায় পড়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহলের একাংশ। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - একাংশ বলছেন, এমনিতেই ক্ষমতা দখল না হওয়ার কারণে দলীয় নেতারা হতাশ। দলের সদরদপ্তরে সেভাবে ভিড় দেখা যাচ্ছে না। অন্যদিকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজেপির প্রতি প্রতিমুহূর্তে হামলা করার কারণে অনেক নেতাকর্মীরা পিঠ বাচাতে ঘাসফুল শিবিরে যোগদান করছেন বলে অভিযোগ উঠছে। দলের একাংশ দাবি তুলতে শুরু করেছেন, অবিলম্বে নেতা-কর্মীদের বাঁচানোর জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত শীর্ষ নেতৃত্বকে। এমনকি এই বিষয়ে প্রকাশ্যে তারা যদি নেতাকর্মীদের জন্য কিছু করতে না পারেন, তাহলে তাদের পদত্যাগ করা উচিত বলেও বিস্ফোরক মন্তব্য করতে দেখা গেছে বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহকে। আর এই অবস্থায় রাজ্যের সকল জয়ী দলীয় বিধায়কদের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দিতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল ভারতীয় জনতা পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত 15 জন বিধায়ক তা গ্রহণ করলেন না। আর সেটাই এখন আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাহলে কি এই 15 জন বিধায়ক খুব তাড়াতাড়ি দলবদল করতে পারেন? বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য এই সম্ভাবনাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তার দাবি, যে সমস্ত সন্ত্রাস প্রবণ এলাকা আছে, সেখানকার বিধায়করা নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। যেখানে সন্ত্রাস বা হিংসার ঘটনা নেই, তারা নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এর সঙ্গে জল্পনা খোঁজা বৃথা। তবে দিলীপ ঘোষ যে কথাই বলুন না কেন, বিধানসভা নির্বাচনে টার্গেট দিয়েও তারা সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। তবে কিছুটা সাফল্য পেয়ে রাজ্যের বিরোধী আসনে বসা ভারতীয় জনতা পার্টি আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত তাদের সব বিধায়ককে নিজেদের দিকে রাখতে সক্ষম হয় কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -