এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > যোগীর রাজ্যে ঢুকতে বাধা পেয়ে ধারণায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল

যোগীর রাজ্যে ঢুকতে বাধা পেয়ে ধারণায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল

ইতিমধ্যেই দেশে লাগু হয়েছে সংশোধিত নাগরিক আইন। গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার এই আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকেই দেশের উত্তর থেকে শুরু করে দক্ষিণ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়তে থাকে। কোথাও বিক্ষোভ, কোথাও কোথাও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়।

বিভিন্ন বিক্ষোভ-সমাবেশ হিংসাত্মক ওঠে। কোথাও অল্প, আবার কোথাও বেশি হলেও মোটের উপর অনেকগুলি অঙ্গরাজ্যের পরিস্থিতি প্রায় একইরকম। আর এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি থেকে ভিন্ন নয় বিজেপি শাসিত রাজ্য উত্তরপ্রদেশও। ইতিমধ্যেই সেখানে গাজিয়াবাদ থেকে শুরু করে কানপুর উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। যা সামাল দিতে পুলিশের তরফ থেকে ফায়ারিং করা হয় বলেও জানা যাচ্ছে। যার জেরে ইতিমধ্যেই 16 জনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ।

আর এরকম পরিস্থিতিতে সংশোধিত নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে অন্যতম আন্দোলনকারী রাজনৈতিক দল এবং পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল উত্তরপ্রদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন তৃণমূল নেত্রী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু রবিবার দিন সকালেই উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তরফ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, এই ধরনের কোনো প্রতিনিধি দল আসলে কোনোভাবেই তাদেরকে 144 ধারা জারি করা এলাকাগুলিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে লখনৌ বিমানবন্দর আটকে দেওয়া হয় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তরফ থেকে। তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের তরফ থেকে সরাসরি অভিযোগ করা হয়, লখনৌ বিমানবন্দরে নামার সঙ্গে সঙ্গে 50 জনের পুলিশ বাহিনী তাদেরকে ধরে। এদিনের এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী সহ প্রতিমা মন্ডল, নাদিমুল হক, আবীর রঞ্জন বিশ্বাস, দীনেশ ত্রিবেদী।

তাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, উত্তরপ্রদেশের লখনৌ বিমানবন্দরে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই তাদেরকে ঘিরে ফেলে পুলিশ। রীতিমতো জোর করে তাদেরকে বাসে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে উত্তরপ্রদেশের লখনৌ বিমানবন্দরের রানওয়েতে ধর্নায় বসলেন দীনেশ ত্রিবেদী নেতৃত্বাধীন ওই প্রতিনিধি দল। শুধু তাই নয়, এদিন রানওয়েতে তারা অনশন শুরু করে দেন। সংবাদমাধ্যমের কাছেও এদিন সরব হতে দেখা গেছে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে।

তিনি বলেন, “আমরা অশান্তি পাকাতে আসিনি। মানবাধিকার লংঘন হচ্ছে কিনা, তা দেখতে এসেছিলাম। যারা মারা গিয়েছেন তাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। শান্তিপূর্ণভাবেই আমরা যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বিমানবন্দরের ভিতরে গিয়ে পুলিশ আমাদের নামিয়ে নিয়ে আসে। বিমান বন্দরে আটকানো হয় আমাদের। আমরা চোর, নাকি কোনো আইন ভেঙ্গেছি! শহরের ভিতরে থাকা টার্মিনাল বিল্ডিংয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

খোলা আকাশের নিচে ঠান্ডায় বসে আছি। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ আমাদের শারীরিকভাবে নিগ্রহ করেছে। ধাক্কাতে ধাক্কাতে একটা ঘরে নিয়ে গেছে। এটা কি ব্রিটিশ রাজ চলছে!” প্রতিনিধিদলকে আটকে দেওয়ার প্রসঙ্গে দীনেশবাবু আরও বলেন, “আমরা প্রতিবাদে অনশন করছি। জল পর্যন্ত খাইনি।” এদিকে আবার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলকে আটকানো নিয়ে আসরে নেমেছেন পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

এই বিষয়ে তিনি বলেন, “এর আগে অসমেও আটকেছে আমাদের। এখন উত্তরপ্রদেশে আটকাচ্ছে। আসলে এরা সত্যিটা জানতে দিতে চায় না। এত ভয় কিসের!” যদিও বিরোধীদের তরফ থেকে পুলিশের গুলিতে 16 জন মারা যাওয়ার ঘটনাকে স্বীকার করেনি উত্তর প্রদেশ পুলিশ। তবুও বিভিন্ন মহল থেকে এই ধরনের অভিযোগে রীতিমতো জল্পনা তৈরি হয়েছে। আবার যেভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল উত্তরপ্রদেশে পৌঁছানোর আগেই উত্তরপ্রদেশের ডিরেক্টর জেনারেল পুলিশ ও পি সিংয়ের তরফ থেকে 144 ধারা জারি করা এলাকাগুলোতে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলের কে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

এদিন তার থেকে এক ধাপ এগিয়ে 144 ধারা তো দূরে থাক, বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলকে। যা নিয়ে তৃণমূলের তরফ থেকে বিজেপি সরকারকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন সময় তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে অনেক উত্তেজনা প্রবণ এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বিগত দিনে বঙ্গ বিজেপি থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, তাদের হেলিকাপ্টার বাংলায় নামতে দেওয়া হচ্ছে না।

এমতাবস্থায় প্রথমে এনআরসি বিরোধিতায় অসম এবং বর্তমানে সিএএ বিরোধিতায় উত্তরপ্রদেশ দুই জায়গায় আন্দোলনের খোঁজ নিতে যাওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলকে আটকানো হল। আর ওই রাজ্য বিজেপি শাসিত। তাই সব কিছু মিলিয়ে রাজনৈতিক রঙ্গমঞ্চে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!