প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –গত ৫ ই আগস্ট কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রপতি এক বিশেষ ঘোষণার দ্বারা জম্মু কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা ৩৫ এ ধারা উচ্ছেদ করেন। এই উচ্ছেদের ফলে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয় কাশ্মীর। অন্যান্য রাজ্যের মত একটি সাধারন অঙ্গরাজ্যে পরিণত হয়। এরপর জম্মু কাশ্মীরের মধ্যে বিভাজন করে এই রাজ্যকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করে কেন্দ্রীয় সরকার।

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা কেড়ে নেবার পর থেকেই বারবার কেন্দ্রীয় সরকারকে নানাভাবে সমালোচনা করেছে কাশ্মীরের বিভিন্ন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি যারা এতকাল ধরে বিশেষ ক্ষমতা ভোগ করে এসেছে। সম্প্রতি জম্মু কাশ্মীরে হিন্দুদের আধিপত্য কায়েম করতে জম্মু-কাশ্মীরকে ভেঙ্গে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করেছে বলে, কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ জানালেন কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও সেই সঙ্গে ন্যাশনাল কনফারেন্স দলের প্রধান ফারুক আব্দুল্লাহ।

সম্প্রতি সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া তার বিশেষ সাক্ষাৎকারে ফারুক আব্দুল্লা জানান, জম্মু কাশ্মীরের মুসলমানদের খর্ব করে হিন্দুদের সংখ্যাগরিষ্ঠ করতে ও রাজ্যদুটিতে হিন্দুদের আধিপত্য বৃদ্ধি করতে গত মার্চ মাসে জম্মু-কাশ্মীর, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, মনিপুর, নাগাল্যান্ডের লোকসভা ও বিধানসভা কেন্দ্র গুলোতে জনগণনা করতে একটি বিশেষ কমিশন গঠন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের এই চক্রান্ত তিনি ধরে ফেলতে পেরেছেন। আর কেন্দ্রের এই উদ্দেশ্য ধরে ফেলার পরেই গত মে মাসে ওই জনগণনা কমিশন থেকে বেরিয়ে এসেছে ন্যাশনাল কনফারেন্স।

এ বিষয়ে কেন্দ্রকে দোষারোপ করে তাঁকে বলতে শোনা গেছে, ” এই বিষয়টি বুঝতে পারার পরেই আমরা তাদের মুখের উপর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি যে এইভাবে কোনও এলাকার সীমা নির্ধারণের বিষয়ে আমরা একমত নই। আসলে নির্দিষ্ট একটি লক্ষপূরণের জন্য এই কাজ করছে বিজেপি। তারা চায় জম্মু ও কাশ্মীরে ক্রমশ মুসলিমদের সংখ্যা কমিয়ে হিন্দুদের আধিপত্য বাড়াতে।”

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো জানিয়েছেন যে, আগামী ২০২৬ সালের সমগ্র দেশের বেশকিছু লোকসভা ও বিধানসভা কেন্দ্র গুলির নতুন ভাবে পুনর্বিন্যাস হবার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু তার বহু পূর্বেই জম্মু ও কাশ্মীরে হিন্দু আধিপত্য বাড়াতে খুব শীঘ্রই এই রাজ্যটি ভেঙে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, কি কারনে কেন্দ্র জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে পুনর্গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা সকলকে পরিষ্কার ভাবে জানাতে হবে।

এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রকে অভিযুক্ত করে তিনি জানিয়েছেন, কাশ্মীরে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে ধর্মীয় বিভাজন তৈরি করে, হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়কে আলাদা করতে চাইছে বিজেপি। তবে এ বিষয়ে তাঁর দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার যতই চেষ্টা করুক না, কেন কাশ্মীরে কোনদিনই মুসলমানদের খর্ব করে হিন্দু আধিপত্য কায়েম করা সম্ভব হবে না।