এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > জনরোষের বিস্ফোরণ নাকি বিজেপির হাত? তিন প্রভাবশালী তৃণমূল নেতাকে বাঁশ দিয়ে বেধড়ক পেটালো জনতা

জনরোষের বিস্ফোরণ নাকি বিজেপির হাত? তিন প্রভাবশালী তৃণমূল নেতাকে বাঁশ দিয়ে বেধড়ক পেটালো জনতা


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – গত ২০১৯ এর লোকসভা ভোটের কিছু পূর্ব থেকেই হুগলি জেলার আরামবাগে উত্থান ঘটে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির। তারপর লোকসভা ভোটের পর ক্রমশ তারা আরামবাগে নিজেদের শক্তি বাড়াতে সক্ষম হয়। এতদিন পর্যন্ত আরামবাগের সমস্ত পঞ্চায়েতের ১০০ দিনের কাজে শাসকদলের একচ্ছত্র মৌরসীপাট্টা ছিল। ১০০ দিনের কাজের তদারকি করতেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতা, বা অন্যান্য সক্রিয় তৃণমূল কর্মীরা সুপারভাইজার হয়ে। কিন্তু এই অঞ্চলে বিজেপির শক্তি বৃদ্ধির পরেই তৃণমূলের বিভিন্ন ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সরব হতে শুরু করে বিজেপি।

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পুরোনো সুপারভাইজারদের অপসারণ করে তাদের দলের সদস্যদের এই কাজে নিয়োগ করার দাবি জানায় বিজেপি। এরপর থেকে অধিকাংশ সুপারভাইজার কাজে গরহাজির হতে শুরু করে। এর ফলে বেশকিছু স্থানে ১০০ দিনের কাজ স্তব্ধ হয়ে যায়। এই সমস্যার সমাধান করতে জেলা প্রশাসন এগিয়ে আসে। শাসক দলের অভিযোগ, এরপরও বিভিন্নভাবে ১০০ দিনের কাজে অবাঞ্চিত হস্তক্ষেপ চালায় বিজেপি।

এই অঞ্চলের ১০০ দিনের কাজে বিজেপির হস্তক্ষেপ সম্পর্কে মলয়পুর ১ পঞ্চায়েত প্রধান সেই সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী দীপালি সাহা বিজেপি সম্পর্কে অভিযোগ করেছেন, ” “বিজেপি’র ছেলেরা একশো দিনের কাজ বন্ধ রেখেছিল। আমাদের ছেলেরা এ দিন কাজ করাতে গেলে তাঁদের মারধর করেছে ওরা। পুলিশ বিষয়টি দেখছে। ”

এভাবে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে যখন তৃণমূল-বিজেপি দুই প্রবল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মধ্যে পারস্পরিক অশান্তির আবহাওয়া চলছিল। ঠিক সেই পরিবেশই গতকাল দীর্ঘদিন ধরে থমকে থাকা ১০০ দিনের কাজ শুরু হতেই আবার দেখা দিল প্রবল সংঘর্ষ। এবার সংঘর্ষ ঘটল মলয়পুর ১ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ঘরগোয়াল গ্রামে। যেখানে শাসক দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, গতকাল শুক্রবার এই অঞ্চলে ১০০ দিনের কাজ শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই শাসক দলের তিন নেতাকে বিজেপি কর্মীরা মারধোর করে। আহত তিন তৃণমূল নেতাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

গতকালের এই ঘটনায় আহত হয়েছেন তৃণমূল নেতা রাজকুমার বাগ, অশোক ধাড়া ও বংশী পোড়েল। যারা সকলেই আরামবাগ হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসাধীন আছেন। গতকাল আরামবাগ হাসপাতালে আহত তৃণমূল সদস্যদের দেখতে গিয়েছিলেন আরামবাগ বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা, তৃণমূল দলের ব্লক সভাপতি কমল কুশারী ও পঞ্চায়েত প্রধান দিপালী সাহা।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে আহত তৃণমূল নেতা রাজ কুমার বাগ বিজেপির প্রতি অভিযোগ করে জানালেন যে, গতকাল সকাল সাড়ে ছটায় তাঁরা ঘরগোয়াল গ্রামের নিকটে একটি খালের পানা পরিস্কারের কাজ আরম্ভ করতে গিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন শ্রমিককে সঙ্গে নিয়ে। শ্রমিককে নিয়ে তাঁরা যখন কাজে হাত দিয়েছেন, ঠিক সেই সময়ে অকস্মাৎ এই কাজ বন্ধের দাবি জানিয়ে বিজেপি নেতা সুভাষ সাঁতরার নেতৃত্বে বেশকিছু বিজেপি কর্মী লাঠি ও বাঁশ নিয়ে তাঁদের উপর চড়াও হয়ও ক্রমাগত মাথায় ও কোমরে আঘাত করতে থাকে। ক্রমাগত এমন আঘাতের ফলে কাজ বন্ধ করে কোন ক্রমে প্রাণ নিয়ে পালান তৃণমূলের এই তিন আহত নেতা।

গতকালের এই ঘটনা প্রসঙ্গে আরামবাগের বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা অভিযোগ করেছেন, ” বিজেপি’র ছেলেরা একশো দিনের কাজ বন্ধ রেখেছিল। আমাদের ছেলেরা এ দিন কাজ করাতে গেলে তাঁদের মারধর করেছে ওরা। পুলিশ বিষয়টি দেখছে। ”

তবে এ ঘটনায় বিজেপি তাদের উপরে উত্থাপিত সমস্ত অভিযোগকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে। বিজেপির তরফ থেকে এ প্রসঙ্গে জানানো হয়েছে যে, বিজেপি কর্মীদের দ্বারা নয় জনগণের আক্রোশের শিকার হয়েছেন শাসকদলের এই তিনজন নেতা। এই ঘটনায় অভিযুক্ত বিজেপি নেতা সুভাষ সাঁতরা জানিয়েছেন ওই লাঠালাঠির ঘটনার সময় তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিতই ছিলেন না। সেইসঙ্গে এই ঘটনায় অভিযুক্ত অন্যান্য বিজেপি কর্মীরা জানিয়েছেন, গতকালের এই ঘটনায় শাসক দল ইচ্ছে করেই তাদের নাম জড়িয়ে দিয়েছে।

গতকালের ঘটনা প্রসঙ্গে আরামবাগ বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ জানিয়েছেন, ” তৃণমূল একশো দিনের কাজে প্রচুর দুর্নীতি করেছে। মাস্টার রোলে ভুয়ো নাম ঢুকিয়ে টাকা লুট করেছে। এ দিন জনরোষের শিকার হয়েছেন ওই তিন জন। পরিকল্পিত ভাবে আমাদের ছেলেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে তৃণমূল।”

অন্যদিকে গত গতকালের এই সংঘর্ষ প্রসঙ্গে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় মোট ৮ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে এখনো পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!