এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বিজয়বর্গীয়কে ‘উপেক্ষা’ করে এক ‘বিশেষ নেতাকে’ নিয়ে মোদী-শাহর বৈঠক, বঙ্গ-বিজেপিতে জল্পনা

বিজয়বর্গীয়কে ‘উপেক্ষা’ করে এক ‘বিশেষ নেতাকে’ নিয়ে মোদী-শাহর বৈঠক, বঙ্গ-বিজেপিতে জল্পনা

লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই বাংলায় বিজেপির সাংগঠনিক পরিবর্তন ঘিরে জল্পনা চরমে। কোনো সময় শোনা যায়, বাংলায় দুর্দান্ত ফলাফল করার পিছনে মুকুল রায়ের ‘মস্তিস্ক’ যে বড়সড় ভূমিকা নিয়ে তা মেনে নিয়ে, এবার দলে বড়সড় পদ পেতে চলেছেন তিনি। আর, এবার সাংগঠনিক বিষয়ে ‘ডিসিশন মেকার’ হতে চলেছে মুকুল-গোষ্ঠীই।

কিন্তু তার পরমুহূর্তেই আবার জল্পনা ছড়ায়, মুকুল রায়ের এতটা ‘ক্ষমতায়ন’ নিয়ে রীতিমত চিন্তিত সঙ্ঘ! ফলে, মুকুল গোষ্ঠী নয়, তার মাথার উপর থাকতে চলেছে দিলীপ ঘোষ-সুব্রত চট্টোপাধ্যায় জুটির নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠী। আবার, আরেক অংশের মতে এই দুই গোষ্ঠীকেই সামাল দিতে এবার আসরে অবতীর্ন হতে চলেছে সরাসরি সঙ্ঘ।

কিন্তু, বারবার জল্পনা উঠলেও, বঙ্গ-বিজেপির রাশ যে কার হাতে, তা নিয়ে এখনও কোনো সরকারি সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে নি কেন্দ্রীয় বিজেপি। এরমধ্যেই, গতকাল দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে অনুষ্ঠিত এক হাইভোল্টেজ বৈঠক নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র জল্পনা। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে, প্রকাশিত সেই খবরে স্পষ্ট জানানো হয়েছে এই বৈঠকে হাজির ছিলেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, শিব প্রকাশ ও প্রদীপ যোশী।

বাংলা নিয়ে বৈঠক হলেও, এই বৈঠকে ‘ডাক পান নি’ বাংলার কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। ফলে, প্রশ্ন উঠতে শুরু করে কে এই প্রদীপ যোশী? গেরুয়া শিবির সূত্রের খবর, প্রদীপ যোশী সঙ্ঘের পূর্ব ক্ষেত্রের – অর্থাৎ সিকিম, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার ও আন্দামানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রচারক। গত চার বছর ধরেই তিনি বাংলার জেলায় জেলায় ঘুরছেন। বঙ্গ-বিজেপি ও বাংলার সঙ্ঘ শিবিরের সব খবরই তাঁর জানা। ফলে, বাংলায় বিজেপির উত্থানের পিছনে কার কি পারফরম্যান্স, তা সবকিছুই তাঁর বিশদে জানা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর এইরকম একটা বৈঠকের পরেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়তে থাকে – এমন বৈঠকে ‘ডাকই’ পেলেন না কৈলাশ বিজয়বর্গীয়! অর্থাৎ তাঁর নাকি ‘ডানা ছাঁটা’ হতে চলেছে। ফলে, তাঁর ঘনিষ্ঠ বৃত্তে যাঁরা আছেন (পড়ুন, মুকুল রায় ও তাঁর শিবির), তাঁদেরও এবার দানা ছাঁটা হতে চলেছে। বঙ্গ-বিজেপির রাশ আগামীদিনে থাকবে সঙ্ঘের হাতেই, আর তাই কৈলাশ বিজয়বর্গীয়কে ‘ব্রাত্য’ প্রদীপ যোশীকে ‘বাড়তি গুরুত্ব’ দিয়ে বৈঠক করলেন মোদী-শাহ!

বিভিন্ন প্রথম শ্রেণির সংবাদমাধ্যম এইরকম খবর প্রকাশ করায়, তা নিয়ে রীতিমত শোরগোল পরে যায় বঙ্গ-বিজেপির অন্দরে তো বটেই, গোটা রাজ্য-রাজনীতিতেই। ফলে, আসল সত্যটা কি জানার জন্য, আমরা দিল্লিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ বৃত্তের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। সেখানে বিভিন্ন সূত্রের সঙ্গে কথা হয় যার সারমর্ম হলো , আসল ঘটনার বাইরে গিয়ে রঙ চড়িয়ে আজকাল বহু সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে! সেটা কার বা কাদের মদতে ও সুবিধার্থে, তা নাকি কারোর জানতে বাকি নেই! অর্থাৎ বিজেপি সূত্রের দাবি যা ঘটেছে আর যা রটেছে-তা এক নয়।

তাহলে আসল সত্যিটা কি? গেরুয়া শিবিরের ওই অংশের মতে, গতকালের বৈঠক হয়েছে – একথা সত্যি। তবে সেই বৈঠকে কৈলাশ বিজয়বর্গীয়কে ডাকা বা না ডাকার কোনো ব্যাপারই নাকি নেই। ফলে, তাঁর ‘ডানা ছেঁটে’ সঙ্ঘের হাতেই সমস্ত ক্ষমতা তুলে দেওয়া হচ্ছে – এই খবরেরও কোনো ভিত্তি নেই! বাংলায় আগামীদিনে বিজেপি যে ক্ষমতায় আসছে এবং দীর্ঘদিন বঙ্গ-রাজনীতির রাশ যে গেরুয়া শিবিরের হাতেই থাকবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

ফলে, লোকসভা নির্বাচন মিটতেই, বাংলায় দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য কি ধরনের সাংগঠনিক পরিবর্তন দরকার, তা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে চলেছে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। আর তাই, বাংলা নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা। সেখানে রাজ্য বিজেপি ও সঙ্ঘের বিভিন্ন অংশ ও নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে যাতে, বাংলার রণনীতি নিয়ে তাঁদের কাছে পুরোপুরি ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ থাকে।

আর বিজেপির রণকৌশলে সঙ্ঘ একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সঙ্ঘের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই সবসময় কাজ করেন বিজেপি নেতারা। ফলে প্রদীপ যোশীর কাছ থেকে তাঁর মতামত নেওয়ার জন্যই এই বৈঠক হয়েছে। আর তাই, তাঁর মতামত আলাদা করে শোনার জন্য এই বৈঠক হওয়ার ফলেই, কৈলাশ বিজয়বর্গীয় থেকে শুরু করে কোনো বিজেপি নেতাকেই এই বৈঠকে আর অন্তর্ভুক্ত করা হয় নি। তাই এটা নিয়ে অহেতুক জল্পনার নাকি কোনো অর্থই হয় না!

তবে, বিজেপির ওই অংশটিই জানাচ্ছে, অমিত শাহরা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা প্রায় সমাপ্ত করে ফেলেছেন। ফলে, খুব শীঘ্রই বাংলায় বড়সড় সাংগঠনিক পরিবর্তন করতে চলেছেন তাঁরা। সেই ঘোষণার মাধ্যমেই, নাকি স্পষ্ট হয়ে যাবে – কাদের দলে গুরুত্ব বাড়ানো হল, আর কাদেরই বা ‘ডানা ছাঁটা’ হল! তাঁদের আরও দাবি, এই পরিবর্তনে সঙ্ঘকে যেমন প্রাপ্য সম্মান দেওয়া হবে, তেমনই কারা বিজেপির ভালো চাইছেন, আর কারাই বা নিজেদের স্বার্থরক্ষায় দলের ক্ষতি করছেন, সেটাও মাথায় রাখা হবে। একই সঙ্গে, দলবদল নিয়ে একটা স্পষ্ট নির্দেশিকাও তৈরী হবে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!