এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > অনুন্নয়নে ডুবে থেকেও উন্নয়নের স্বপ্নেই ভোট দিলেন কালিয়াগঞ্জবাসী, তবে কোন দিকে? থাকছে প্রশ্ন

অনুন্নয়নে ডুবে থেকেও উন্নয়নের স্বপ্নেই ভোট দিলেন কালিয়াগঞ্জবাসী, তবে কোন দিকে? থাকছে প্রশ্ন

 

ভোট আসে ভোট যায়। আর ভোটের সাথে প্রতিশ্রুতিও আসে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি পালন হতে দেখা যায় না। কখনও বলা হয় বিধবা ভাতা, কখনও বার্ধক্য ভাতা, কখনও রেশন কার্ড। তারপর ভোটাধিকার প্রয়োগ করে লাইনে দাঁড়িয়ে সেই প্রার্থীদের জয়যুক্তও করান। কিন্তু প্রতিশ্রুতি প্রতিশ্রুতিই থেকে যায়। তবুও নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত হতে চান না তারা। আর তাইতো নিজেদের উন্নয়ন না হলেও ভালো শাসক বসানোর জন্য ফের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নিলেন সেই মানুষেরা।

বস্তুত গতকাল অনুষ্ঠিত হয় কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ভোট দিতে হবে, তাই সেখানে লাইনে দাঁড়াতে দেখা গেল সাধারণ মানুষদের। প্রার্থী কে, কেন তারা ভোট দিচ্ছেন! তার কিছুই জানেন না সেই অসহায় মানুষেরা। এদিন ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে কালিয়াগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রামের একাধিক ভোটারের মুখ থেকে এই সমস্ত কথায় ফুটে উঠল।

এদিন এক ভোটার বলেন, “ভোট দিয়ে কাজের কাজ কিছু না হলেও ভোট এলে নেতারা অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষার স্বপ্ন দেখান। ভোটের কদিন আগে থেকে অনেক প্রতিশ্রুতি পেয়ে কাজকর্ম ফেলে সংসারের কাজ সেরে অনেকেই উৎসবের মেজাজে নিজের বুথে ভোট দিতে এসেছেন।” এদিকে লম্বা লাইন দেখে এক সময় বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন এক বৃদ্ধা ভোটার।

কিন্তু পরবর্তীতে শুধুমাত্র গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের জন্য ভোট দিতে এলেন তিনি। আর লাইনে দাঁড়ানোর সময় তাকে জিজ্ঞাসা করা হল, কিসের ভোট? কে কে প্রার্থী হয়েছে জানেন? আর তার উত্তরে সেই বৃদ্ধা ভোটার যা বললেন, তা শুনে চোখ কপালে উঠে যাওয়ার জোগাড়। এদিন সেই বয়স্কা মহিলা বলেন, “অতসব জানি না বাপু। ভোট দিতে হবে তাই এসেছি।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু কোন প্রার্থীকে তারা ভোট দেবেন, সেটা না জেনেই তিনি ভোটকক্ষের দিকে রওনা দিয়েছিলেন! এদিন এই প্রসঙ্গে কিছুটা আক্ষেপ করে সেই বৃদ্ধা বলেন, “প্রায় 30 বছর আগে স্বামী মারা গিয়েছে। বিধবা ভাতা, বৃদ্ধ ভাতা কিচ্ছু পাই না। দেখি এবার ভোটের পর কিছু হয় কিনা। আমি কে প্রার্থী হয়েছে চিনি না, ছেলে যেটা বলে দিয়েছে, সেটাতেই ভোট দেব।”

আর এখানেই একাংশের প্রশ্ন, ভোটের সময় প্রচারে নানা দলের প্রার্থীরা বৃদ্ধা মহিলাদের কাছে গিয়ে “মা” বলে ডাকেন। কিন্তু জয়যুক্ত হওয়ার পর ছেলের কর্তব্য পালন করতে দেখা যায় না সেই নেতা, মন্ত্রী হওয়া ব্যক্তিদের। যদি সামান্য একটি বৃদ্ধার বিধবা ভাতা করে দেওয়া যায়, তাহলে গর্ব হওয়ার কথা।

কিন্তু তা না করে দিনের পর দিন প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দারা যেভাবে অবহেলার শিকার হয়ে আসছেন এবং তারপরও যেভাবে তারা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করে সেই প্রার্থীদের জয়লাভ করানোর চেষ্টা করছেন, তাতে সত্যিই ভারতবর্ষের গণতন্ত্র যে এখনও এই মানুষদের জন্যই বেঁচে আছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত সকলেই।

এদিকে এদিন এই প্রসঙ্গে এক বয়স্ক ভোটার বলেন, “এলাকায় ভোটে কে কে দাঁড়িয়েছে জানি না। পদ্মফুল, জোড়াফুল, হাতচিহ্ন দেখে কাউকে একটা ভোট দেব।” তবে অনেকে বলছেন, আমরা শুধুমাত্র উন্নয়নের আশাতেই ভোট দিতে যাচ্ছি। তবে প্রতিবারের মতো এবারও উন্নয়নের আশাতে তারা ভোট পড়বে শামিল হলেও অনুন্নয়ন মোছে কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে কালিয়াগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দারা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!