এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > কাঠমানি ফেরত দেওয়া থেকে বাঁচতে এবার প্রাক্তন মেয়রের শরণাপন্ন নেতা কাউন্সিলররা, জোর শোরগোল রাজ্যে

কাঠমানি ফেরত দেওয়া থেকে বাঁচতে এবার প্রাক্তন মেয়রের শরণাপন্ন নেতা কাউন্সিলররা, জোর শোরগোল রাজ্যে


লোকসভা নির্বাচনে দলের খারাপ ফলাফলের পরই নিচুস্তরের নেতাকর্মীদের দুর্নীতি এবং কাঠমানি খাওয়াই যে এই ভরাডুবির অন্যতম প্রধান কারণ, তা বুঝতে বাকি নেই তৃণমূলের কারোরই। লোকসভা ভোটের ফলাফল পর্যালোচনা বৈঠকে বসে এই ব্যাপারে দলের সকলকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এরপর গত 18 জুন নজরুল মঞ্চে দলের সমস্ত কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে সেই কাঠমানি খাওয়ার প্রসঙ্গ আরও একবার শোনা গেল তৃনমূল নেত্রীর গলায়।

সেখানে দলের কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আবাসন প্রকল্প থেকে কেন 25 হাজার টাকা খেতে হবে! সমব্যথীর দুই হাজার টাকার মধ্যে কেন 200 টাকা খেতে হবে! যারা কাঠমানি নিয়েছেন, তারা ফেরত দিয়ে দিন।” আর দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরই বিভিন্ন জেলায় শুরু হয়ে যায় জোর শোরগোল।

অনেকেই বলতে শুরু করেন, সমস্ত কিছু জানা সত্ত্বেও গোড়া থেকে এই ব্যাপারে যদি শক্ত হাতে মোকাবিলা করা যেত তাহলে এই সমস্যা হত না। কিন্তু তা না করে এখন যে সকল নেতা, কাউন্সিলররা কাঠমানি খেয়েছেন তাদের তা ফেরত দেওয়ার কথা বলে আদতে দলেরই বিরম্বনা বাড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই মালদহ, বীরভূমের মতো একাধিক জেলায় এই ব্যাপারে তৃণমূলের অন্দরেই চোরা স্রোত তৈরি হয়েছে।

কিন্তু শুধু অন্যান্য জেলা নয়, এর প্রভাব পড়েছে এবার খাস কলকাতাতেও। রাজ্য রাজনীতিতে প্রায় কার্যত আড়াল হয়ে যাওয়া কলকাতা পৌরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কাছেই এখন এই ব্যাপারে দ্বারস্থ হতে শুরু করেছেন কলকাতা পৌরসভার একাধিক কাউন্সিলররা। অনেকেই বলছেন, তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা এখন আর দাঁতে দাঁত চেপে দলের শীর্ষনেত্রীর কথা মেনে নিতে পারছেন না।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কেননা এখন রাজ্যে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বিজেপির উত্থান দেখা দিয়েছে। ফলে নেত্রী সকলকে কাঠমানি ফেরত দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেও এবার সেই সমস্ত নেতারা শিবির বদলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলকে চাপে ফেলে দিতে চাইছে বলেই মনে করছে বিশ্লেষকদের একাংশ।

আর তাইতো বর্তমানে তৃণমূল বিধায়ক তথা কলকাতা পৌরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেছেন অনেকেই। কিন্তু কারা রয়েছেন তার তালিকা জানা গেছে, বেহালা এলাকার এক প্রভাবশালী কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ, দক্ষিণ কলকাতার বরো চেয়ারম্যান, পূর্ব কলকাতার বরো চেয়ারম্যান, মধ্য কলকাতার মেয়র পারিষদ, দক্ষিণ ও উত্তর কলকাতার প্রায় 10 জন কাউন্সিলার এবং উত্তর কলকাতার দীর্ঘদিনের এক বিধায়ক।

সূত্রের খবর, তারা শোভন চট্টোপাধ্যায় সাথে ফোন করে কথাবার্তা শুরু করেছেন। তৃণমূলেরই একাংশের দাবি, 2020 সালের কলকাতা পৌরসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য সবথেকে উপযুক্ত বিরোধী দল হল বিজেপি। এক সময় দলের নেতারা কাঠমানি নিচ্ছে জেনেও সেই ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ করেনি শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু এবার লোকসভার ফলাফলে তার প্রভাব পড়ায় সেই ব্যাপারে নেতাদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিলেও সেই নেতারাই যে এখন বিরোধী মঞ্চে নাম লেখাতে পারেন তা নিয়ে তৈরি হয়েছে জল্পনা।

অন্যদিকে মেয়র পদ খোয়ানোর পর কার্যত আড়াল হয়ে যাওয়া শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিজেদের দিকে টানার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে বিজেপি‌। ফলে বর্তমান সময় পর্যন্ত তৃণমূল বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সাথে থেকে তারা যাতে একসাথে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন তার জন্য এখন থেকেই সেই শোভনবাবুর সাথে যোগাযোগ করতে শুরু করেছেন তৃণমূলের অনেক জনপ্রতিনিধিরা।

আর তাইতো 18 জুন নজরুল মঞ্চে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাঠমানি খাওয়ার ব্যাপারে কড়া হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরই দলের অনেকেই এখন শোভনবাবুর সেলফোনে রিং করতে ব্যস্ত রয়েছেন। কিন্তু কি হবে, সত্যিই কি এই কাউন্সিলর সহ সকলকে নিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্ত মায়া ত্যাগ করে পদ্ম শিবিরে নাম লেখাবেন! কেননা এত অপমান সহ্য করা সত্ত্বেও এতদিন তিনি আড়ালে-আবডালে ছিলেন ঠিকই, কিন্তু তৃণমূলের বিধায়ক হিসেবেই রয়ে গেছেন। কিন্তু এখন অনেককেই কাছে পেয়ে তিনি পদ্ম শিবিরে নাম লেখান, নাকি ফের তৃণমূলের প্রথম সারিতে উঠে আসেন, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!