এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > কাটমানি নিয়ে মাঠে নামলেন মন্ত্রী, সুযোগ পেতেই পুরসভার একাংশের বিরুদ্ধে নালিশ মানুষের

কাটমানি নিয়ে মাঠে নামলেন মন্ত্রী, সুযোগ পেতেই পুরসভার একাংশের বিরুদ্ধে নালিশ মানুষের

লোকসভা ভোটে দলের খারাপ ফলাফলের পেছনে দুর্নীতিই যে প্রধান ভাবে দায়ী, তা আঁচ করতে পেরেছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাইতো তারপরই দলের কেউ কাটমানি খেলে তা বরদাস্ত করা হবে না বলে নজরুল মঞ্চে কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।

এদিকে তৃণমূল সুপ্রিমো কথা মুখ্যমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারির পরই দিকে দিকে কাটমানি খাওয়ার জন্য তৃনমূল নেতাদের কাছ থেকে টাকা ফেরতের দাবিতে সাধারণ মানুষের তরফে প্রবল বিক্ষোভের সংঘটিত হয়। যা নিয়ে কিছুটা হলেও চাপে পড়ে শাসকদল। কিন্তু এবার সরকারি প্রকল্পের ক্ষেত্রে কোন কাটমানি খাওয়া হয়েছে কিনা, তা জানতে সরাসরি সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেল উত্তর 24 পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে।

ত্রের খবর, গত বেশ কয়েক দিনের মতোই রবিবার সকালে হাবরার জয়গাছি সুপার মার্কেট এলাকায় সরকারি প্রকল্পের সুবিধাভোগী গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যের এই হেভিওয়েট মন্ত্রী। আর সেখানেই বেশ কয়েকজন বাসিন্দা বাড়ি তৈরিতে কিছুটা দুর্নীতি হয়েছে এই অভিযোগ তুলে এক ঠিকাদারের নামে মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানান।

পাশাপাশি পুরসভার বেশ কয়েকজন কর্মী তাদের নির্দিষ্ট দোকান থেকে মালপত্র কিনতেও এই প্রকল্পের গ্রাহকদের বাধ্য করেছে বলেও অভিযোগ পান জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। আর তারপরই সেই ঠিকাদারকে মঙ্গলবার পুরসভায় এসে দেখা করার নির্দেশ দিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “নিম্নমানের মালপত্র দিয়ে বাড়ি তৈরি করা হলে সেই ঠিকাদারকে আবার বাড়ি তৈরি করে দিতে হবে। আর তা যদি না করা হয়, তাহলে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রসঙ্গত, গত 2015-16 আর্থিক বর্ষ থেকে এই “হাউস ফর অল” প্রকল্পে হাবরার গরিব মানুষদের বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হলে এখনও পর্যন্ত সেখানে 1250 টি বাড়ি তৈরি হয়েছে। জানা গেছে, এই প্রকল্পে বাড়ি তৈরীর জন্য কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে 1 লক্ষ 50 হাজার টাকা এবং রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে 1 লক্ষ 93 হাজার টাকা দেওয়া হয়। অন্যদিকে উপভোক্তাকে 25 হাজার টাকা দিতে হয়। এছাড়াও পুরসভা এবং রাজ্য সরকার বাড়ির পেছনে 36 হাজার 800 টাকা খরচ করে। আর সেই হাউস ফর অল প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েই এদিন সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ফলে সেখানেই পুরসভার একাংশের বিরুদ্ধে মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানান সাধারণ মানুষ।

এদিন এই প্রসঙ্গে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “হাবরার মানুষের সঙ্গে কথা বলতে জানতে পারলাম 7000 বাড়ির মধ্যে 200 টি বাড়ি নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। তবে তৃণমূলের কেউ নয়, পুরসভার একাংশ কর্মীরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”

এদিকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এহেন হুঁশিয়ারি দিলেও পাল্টা এই ব্যাপারে তৃণমূলকে খোঁচা দিয়েছে বিরোধীরা। এদিন এই প্রসঙ্গে হাবরা শহর সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদক আশুতোষ রায় চৌধুরী বলেন, “বহু মানুষের বাড়ি পাওয়ার কথা না থাকলেও তারা এই প্রকল্পে বাড়ি পেয়েছে। আমাদের কাউন্সিলরদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়াই হয়নি। প্রচুর কাটমানি নেওয়া হয়েছে।” একইভাবে বিজেপি নেতা বিপ্লব হালদার বলেন, “বাড়ি তৈরিতে প্রচুর কাটমানি নেওয়ার কথা শোনা গেলেও কেউ অভিযোগ করেন না। কেননা তাতে অনেকেরই বাড়ি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।”

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, নেত্রী কাটমানি নিয়ে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরে এদিন পথে নেমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বাড়ি তৈরি প্রকল্পের কাটমানি খাওয়ার ব্যাপারটি সামনে আসাতে কিছুটা হলেও বিপাকে পড়েছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তবে পুরো ব্যাপারটিতে নিজের দলের কেউ জড়িত নয় বলে পুরকর্মীদের বিরুদ্ধেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!