এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > বিজেপি > কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা প্রত্যাহার লকেটের, গতিবিধি নিয়ে বাড়ছে জল্পনা!

কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা প্রত্যাহার লকেটের, গতিবিধি নিয়ে বাড়ছে জল্পনা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই বিজেপি নেতা, কর্মীদের উপর লাগাতারভাবে হামলা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এক্ষেত্রে দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হওয়া সত্ত্বেও পাশে দাঁড়াতে না পারার কারণে বলে জনপ্রতিনিধিদের ইস্তফা দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ। স্বাভাবিক ভাবেই তার এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বঙ্গ রাজনীতিতে জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছিল। আর এবার বিজেপি নেতা কর্মীদের ওপর যখন লাগাতারভাবে হামলা হচ্ছে, ঠিক তখনই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে দেওয়ার কথা জানিয়ে দিলেন হেভিওয়েট বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়।

স্বাভাবিক ভাবেই তার এই উদ্যোগকে কেন্দ্র করে গেরুয়া শিবিরের অন্দরমহলে জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে একের পর এক নেতা-নেত্রীদের উপর হামলা হওয়ার কারণে তাদেরকে বাড়তি নিরাপত্তা দিতে উদ্যত হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি, সেখানে লকেট চট্টোপাধ্যায়কে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হলেও তিনি তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার উদ্যোগ কেন গ্রহণ করলেন, সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। তাহলে কি লকেট চট্টোপাধ্যায় বড় কোনো চিন্তা-ভাবনা করতে শুরু করেছেন? বিজেপির সাথে কি দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেছেন? সমালোচক মহলের একাংশ এই জল্পনা উড়িয়ে দিচ্ছে না। তবে তাকে নিয়ে নানা জল্পনা হলেও, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা প্রত্যাহার করা প্রসঙ্গে অন্য যুক্তি দিচ্ছেন এই বিজেপি সাংসদ।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিধানসভা নির্বাচনের আগে ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হয় লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। তবে রবিবার একটি ভিডিও বার্তার মধ্যে দিয়ে সেই নিরাপত্তা প্রত্যাহার করার কথা জানিয়ে দেন এই বিজেপি সাংসদ। তিনি বলেন, “ভোটের পর থেকে দলীয় কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই আমি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি দিয়ে এই নিরাপত্তা ছাড়তে চেয়েছি। কেননা জনপ্রতিনিধি হিসেবে যদি তাদেরকে নিরাপত্তা দিতে না পারি, তাহলে আমার এই নিরাপত্তা নিয়ে কি লাভ!”

বিশ্লেষকরা বলছেন, লকেট চট্টোপাধ্যায়ের এই উদ্যোগ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি এক ঢিলে দুই পাখি মারার চেষ্টা করলেন। একদিকে তিনি যেমন আক্রান্ত কর্মীদের পাশে না দাঁড়ানোর কথা বলে হতাশা প্রকাশ করলেন, ঠিক তেমনই তৃণমূলের হামলার কথা তুলে ধরে নিজের বিবেকের জন্য তিনি এই উদ্যোগ নিয়েছেন বলে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন বিজেপির এই জনপ্রতিনিধি। অর্থাৎ দলীয় নেতাকর্মীদের মন পেতে তাদের সহানুভূতি দেওয়ার জন্যই লকেট চট্টোপাধ্যায়ের এই উদ্যোগ বলে মনে করছেন একাংশ।

বলা বাহুল্য, ভোটে পরাজয়ের পর বিজেপির বিভিন্ন নেতা-কর্মীরা আক্রান্ত হতে শুরু করেছেন। তবে সেভাবে দলের রাজ্য বা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সেই সমস্ত আক্রান্ত নেতা কর্মীদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না বলে নানা মহলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। আর এই পরিস্থিতিতে জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেলেও, যখন দিকে দিকে দলের নেতাকর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন, তখন তার নিরাপত্তা নিয়ে কি লাভ! সেই ব্যাপারে বড় প্রশ্ন তুলে দিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। যার মধ্য দিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়ল বলে দাবি করছেন একাংশ।

আবার অনেকে বলছেন, বিবেকের ডাকে সাড়া দিয়ে সঠিক উদ্যোগ নিয়েছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। প্রকৃত নেত্রী হিসেবে দলের নিচুতলার আক্রান্ত হওয়া নেতাকর্মীদের পাশে থাকতে তিনিও নিরাপত্তা রক্ষী না নিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি সাধারণ মানুষের লোক। অর্থাৎ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে দেওয়ার উদ্যোগ বিজেপির কাছে যেমন অস্বস্তিকর, ঠিক তেমনই বিজেপি নেতা কর্মীদের জন্য বিজেপি সাংসদের এই উদ্যোগ যে কর্মী মহলে যথেষ্ট সাড়া ফেলে দিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। পাশাপাশি তৃণমূলের হামলার ঘটনা তুলে ধরার কারণে ঘাসফুল শিবিরও যে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যে কিছুটা হলেও অস্বস্তির মুখে পড়ল, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!