প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – গত কয়েক দিন ধরে সারা বিশ্বের নজর টিকেছিল আমেরিকার ওপর। হাড্ডাহাড্ডি নির্বাচনে ইতিমধ্যে জয়-পরাজয়ের চিত্রটি স্পষ্ট হয়ে গেছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদের পরবর্তী দাবিদার সামনে চলে এসেছেন। কিন্তু জো বাইডেন বিজয়ী হবার পরেও নিজের হার স্বীকার করেননি এখনো ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিজয়ীকে অভিনন্দন জানানো দুর অস্ত, তিনি এখনো হুমকি চিৎকারে আটকে রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট পদে হেরে যাবার পর থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে গরমিলের যুক্তিকেই বারবার সামনে আনছেন, যা মেনে নিতে এই মুহূর্তে কেউই রাজি নয়। অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি এইমুহূর্তে হোয়াইট হাউস ছাড়বেন না।

কিন্তু কেন তিনি হোয়াইট হাউস ছাড়ছেন না, তা নিয়ে এবার বিস্ফোরক তথ্য সামনে এলো। জানা যাচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউস থেকে বেরোলেই তাঁকে হয়তো জেলে যেতে হতে পারে। আর তাই হোয়াইট হাউস না ছাড়ার ব্যাপারে তিনি এতটা মরিয়া- এরকমই দাবি তুলল সম্প্রতি একটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম। আমেরিকার 46 তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট সদ্য নির্বাচিত হয়েছেন জো বাইডেন গণতান্ত্রিক মতে। ভারতীয় সময় শনিবার রাতে পেনসিলভেনিয়ার ফলাফল সামনে আসতেই স্পষ্ট হয়ে যায় হার-জিতের ছবিটি। যদিও এখনো পর্যন্ত হার স্বীকার করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আর তার পেছনের কারণ ট্রাম্পের কারাবন্দি হওয়ার আশঙ্কা।

নির্বাচনের আগে থেকেই জল্পনা শোনা যাচ্ছিল, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। কখনো তিনি আইনি বিচার প্রক্রিয়াকে বাধা দিয়েছেন ক্ষমতাবলে, কখনো সংবিধানের ধারা লংঘন করেছেন, আবার কখনো কর ফাঁকি দিয়েছেন। সবমিলিয়ে বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। উল্লেখযোগ্যভাবে, বেশ কয়েকটি ধর্ষণের মামলাও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন বলে এতদিন ট্রাম্প এই মামলাগুলিকে এড়িয়ে যেতে পেরেছেন। কিন্তু যেহেতু এবার তিনি আর প্রেসিডেন্ট নেই, তাই আশঙ্কা থাকছে এই মামলাগুলি শুরু হওয়ার। আর তাই প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কোনমতেই হোয়াইট হাউস ছাড়তে চাইছেন না বলে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ মনে করছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন ফেডারেল প্রসিকিউটর হ্যারি স্যান্ডিক জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের সাক্ষীদের পক্ষেও মামলা চালানো সহজ হতে চলেছে। অন্যদিকে এতদিন পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালীন অ্যাটর্নি জেনারেলের বড়োসড়ো সাহায্য পেয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশের আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা উইলিয়াম বার গত কয়েক বছরে কার্যত ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী হয়ে উঠেছিলেন। যথারীতি হোয়াইট হাউস ছেড়ে দিলে এই দুঁদে আইনজীবীকেও হারাতে চলেছেন ট্রাম্প। পাশাপাশি শোনা যাচ্ছে, প্রেসিডেন্ট পদের মেয়াদকাল শেষ হলেই ট্রাম্পকে ডিভোর্স দিতে চলেছেন তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প।

সূত্রের খবর, যতক্ষণ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে পদে থাকবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত ডিভোর্স দিতে গেলে কিন্তু পাল্টা শাস্তি পেতে পারেন তাঁর স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প। তাই এই মুহূর্তে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়লে তড়িঘড়ি তাঁকে ডিভোর্স দেওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে। আর তাই এই মুহূর্তে ডোনাল্ড ট্রাম্প কোনমতেই শ্বেতপ্রাসাদ ছাড়তে রাজি নয়। অন্যদিকে প্রশ্ন উঠেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি নির্বাচনে পরাজয়ের পরও হোয়াইট হাউস থেকে না যান তাহলে তাকে কিভাবে সরানো যাবে? ইতিমধ্যে এই নিয়ে জটিলতা স্পষ্ট। বিশেষজ্ঞরা অনেকেই মনে করছেন, ট্রাম্প বোধহয় স্বপ্নেও ভাবেননি তিনি হেরে যাবেন। তাই হেরে গেলেও তা এখনো পর্যন্ত মানতে পারছেননা তিনি। যথারীতি হোয়াইট হাউসও ছাড়তে তিনি রাজি নন।