এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > খোদ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও ঠেকাতে পারছেন না ভাঙন! উত্তরবঙ্গে গেরুয়া শিবিরে বাড়ছে আশঙ্কা!

খোদ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও ঠেকাতে পারছেন না ভাঙন! উত্তরবঙ্গে গেরুয়া শিবিরে বাড়ছে আশঙ্কা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  আগামী ২০২১ এর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি রাজনৈতিক দল নিজের ঘর গোছাতে অত্যন্ত তৎপর একটি রাজনৈতিক দল নিজেদের দলের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করে নিজের দলকে শক্তিশালী করার চেষ্টায় রাতদিন এক করে দিচ্ছে, ঠিক সেসময়ই পশ্চিমবঙ্গের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির সাংগঠনিক দূর্বলতা বারবার প্রকাশ হয়ে পড়ছে।

দলের মধ্যে ক্রমাগত বাড়ছে মতান্তর, মতভেদ, অন্তর্দ্বন্দ্ব। যার ফলশ্রুতি হিসেবেই দল ত্যাগ করছেন বহু বিজেপি কর্মী, সদস্য ও নেতৃবৃন্দ। পশ্চিমবঙ্গের বহু স্থানে এই ঘটনাটি প্রকট। এবার এই ঘটনার প্রতিবিম্ব দেখা গেল উত্তরের জেলা জলপাইগুড়িতে।সংবাদসূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরেই জলপাইগুড়ির বহু বিজেপি সদস্য বিজেপি ছেড়ে যোগদান করছেন তৃণমূলে।

কেউ বিজেপির বুথ সভাপতি, কেউবা দলের কর্মী, কেউ বা নির্বাচনি প্রার্থী এমন বহু মানুষ বিজেপি ছেড়ে যোগ দিতে শুরু করেছেন তৃণমূলে। এই ঘটনাটি জলপাইগুড়ি জেলাতে বিজেপির জন্য অশনিসংকেত বলা যেতেই পারে। অল্প কিছুদিন আগেই তাঁর উত্তরবঙ্গ সফরকালে জলপাইগুড়ি এসেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

জলপাইগুড়ি জেলায় বিজেপির সংগঠন মজবুত করতে জেলার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক সাঙ্গ করেছেন,দিয়েছেন দলকে শক্তিশালী করার বার্তাও কিন্তু এতসব করেও রোধ করা যাচ্ছে না দলের রক্ত ক্ষরণ । যা নিয়ে দুশ্চিন্তার ভাজ পড়ছে নেতৃবৃন্দের কপালে। আর হাসি চওড়া হচ্ছে তৃণমূল শিবিরে।

এ প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করেছে জলপাইগুড়ির মানুষ কখনোই বিজেপির পক্ষে ছিল না। নিজের ভুলে কিছু মানুষ বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন, নিজেদের ভুল বুঝতে পাড়াতেই তাঁরা আবার তৃণমূলে ফিরে আসছেন। এর ফলে আগামী বিধানসভায় তৃণমূলের যে শক্তি বৃদ্ধি ঘটছে সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রসঙ্গত, গতকাল বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজারের বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক জাকিরুল হোসেন তাঁর প্রায় ১৫০ জন অনুগামী সহ তৃণমূলে যোগদান করেছেন। এর সঙ্গে সঙ্গেই গতকাল জলপাইগুড়ির ধুপগুড়ি তেও বেশকিছু বিজেপি কর্মীদের যোগদান করলেন তৃণমূলে।

অন্যদিকে অল্প কিছুদিন আগেই জলপাইগুড়ি জেলার আনন্দপুর, মালবাজার, রাজগঞ্জের বেশ কিছু কর্মী, সদস্য বিজেপি ত্যাগ করেছেন যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। অন্যদিকে গত সপ্তাহে মালবাজার বিধানসভা কেন্দ্রে ২০১১ সালের বিজেপি প্রার্থী বলরাম এক্কা তাঁর ৫০ জন অনুগামী সহ তৃণমূলে যোগদান করেছেন।

আবার গতকাল বিজেপির মালবাজার টাউন মন্ডল সভাপতি পঙ্কজ তেওয়ারি তাঁর বিজেপি ত্যাগ করার কথা ঘোষণা করলেন। তবে আগামীতে তিনি কোন দলে যেতে চলেছেন সেই বিষয়ে তিনি এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানাননি। শুধু জানিয়েছেন তাঁর শতাধিক অনুগামীর দলে নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে থাকার কথা।

বিজেপির জলপাইগুড়িতে বিজেপি দলের এই ভাঙ্গন সম্পর্কে জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল দাবি করেছে, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের জেলা সফরের অনেক আগে থেকেই নাকি বিজেপি দলের ভাঙ্গন শুরু হয়ে গিয়েছিল। দলের ভাঙ্গন রোধ করার জন্য সভাপতি এসেছিলেন ঠিকই , কিন্তু তাতে বিশেষ কোন কাজ হয় নি। কিছুতেই দলের ভাঙ্গন রোধ করা যাচ্ছে না।

এ প্রসঙ্গে তৃণমূল আরও দাবি করেছে যে, অল্পদিনের মধ্যেই জলপাইগুড়ির বিভিন্ন এলাকা থেকে ১০ হাজারেরও বেশি বিজেপি সদস্য, কর্মী তৃণমূল শিবিরে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। শুধু তাই নয় আরও অনেকেই তৃণমূলে আসার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বিজেপি তৃণমূলে আসার জোয়ার আগামী দিনে আরো অনেক বাড়বে বলে তৃণমূল নেতৃত্বেরর দাবি।

তৃণমূলের এই উদরপূর্তি ও বিজেপির ভাঙ্গনে স্বভাবতই উল্লসিত জেলা তৃণমূল শিবির। এ প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি তৃণমূল জেলা সভাপতি কিষাণ কল্যাণী বক্তব্য রেখেছেন, ” বিজেপি মেরুকরণের রাজনীতি করে। মানুষ তাই গেরুয়া শিবির ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছে। ওদের রাজ্য সভাপতি এসেও ভাঙন আটকাতে পারেননি। প্রতিদিনই বিরোধী দলের অসংখ্যা নেতা কর্মী তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন।”

বিজেপির এই ভাঙণে যথেষ্ট উদ্বেগে আছেন জলপাইগুড়ি বিজেপি নেতৃবৃন্দ। জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায় এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “অনেকেই ব্যক্তিগত সুবিধা নিতে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। সেই সুবিধা না মেলায় তাঁরা এখন দলত্যাগ করেছেন। আমরা সুবিধাবাদীদের তাড়িয়ে দিচ্ছি। তৃণমূল নেতারা ওদের দলে যোগদানের সংখ্যা বেশি করে দেখাচ্ছে এবং প্রচার করছে। এতে ওদের কোনও লাভ হবে না। একুশে আমাদের হাতেই রাজ্যের ক্ষমতা আসবে।”

আবার এ প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেছেন, “আমাদের দলে অনৈতিক নেতাদের জায়গা নেই। তৃণমূলে যাঁদের গ্রহণযোগ্যতা নেই আমাদের দলে তাঁদের যোগদান করানো হবে না। যাঁরা এসেছিলেন তাঁরা সুবিধা করতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। ওঁদের যাওয়ায় দলের বিন্দুমাত্র ক্ষতি হচ্ছে না।”

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!