প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – পশ্চিমবঙ্গে কিভাবে ক্রমশ নিজের পায়ের তলার মাটিকে শক্ত করছে বিজেপি? কিভাবে দিন দিন সাফল্যের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বিজেপি? আজ তার ব্যাখ্যা করলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। আদ্যন্ত বামপন্থী এই অর্থনীতিবীদ জানালেন, কেবলমাত্র হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিকে ব্যবহার করে যে বিজেপির সাফল্য আসছে, তা নয়। নিজেদের সাংগঠনিক শক্তিও বিজেপির সাফল্যের জন্য দায়ী।

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি নিজের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করেছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আদিবাসীদের সঙ্গে বিজেপির জনসংযোগ বাড়ছে, যা সাফল্যের পথ দেখাচ্ছে। নিজের সাংগঠনিক শক্তির ওপর ভিত্তি করেই রাজ্যে ক্রমশ নিজের পায়ের তলার মাটিকে শক্ত করছে বিজেপি। আবার, রাজ্যের কিছু অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কারণও বিজেপির উত্থান ঘটাতে সাহায্য করছে।

প্রসঙ্গত, পরিসংখ্যানের হিসেবে দেখা যাচ্ছে দেশজুড়ে ২০১৪ সালের পর থেকে উচ্চবর্ণের ভোটারদের কাছে বিজেপি দলের সমর্থন এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়েছে। নিম্নবর্ণ বা দলিতদের মধ্যে এই সমর্থন আরো অভূতপূর্ব ভাবে বাড়াতে পেরেছে বিজেপি। পিছিয়ে পড়া মানুষদের মধ্যেও অনেকটা সমর্থন বাড়াতে পেরেছে বিজেপি। আবার আদিবাসীদের মধ্যেও বেড়েছে বিজেপির সমর্থন। যার ফলে বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপি সফল হচ্ছে বলে, মনে করছেন অমর্ত্য সেন।

অর্থনীতিবীদ অমর্ত্য সেনের মতে, যেভাবে বিজেপির সমর্থন বাড়ছে, তার ফলে শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, উত্তর প্রদেশ, কেরালার মত রাজ্যেও সফল হতে পারে বিজেপি। বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য বিজেপির উত্থান অনেকটা সহজ হয়ে যাচ্ছে। কেরালার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি জানালেন, কেরালায় অসাম্প্রদায়িক পরিবেশ থাকলেও জাতপাত, বর্ণ বৈষম্য ক্রমশই বাড়ছে সেখানে। যার ফলে সুবিধা হচ্ছে বিজেপির।

ত্রিপুরা রাজ্যতেও এভাবেই বিজেপি নিজেকে শক্তিশালী করেছে। আর পশ্চিমবঙ্গেও এভাবেই শক্তি বাড়াচ্ছে বিজেপি। তিনি জানিয়েছেন, নিজেদের পায়ের তলার মাটিকে কিছুটা হলেও শক্তপোক্ত করে নিতে পেরেছে বিজেপি। সাংগঠনিক শক্তি যদি না থাকতো, তবে এভাবে এগিয়ে যেতে পারত না বিজেপি।

সাংগঠনিক শক্তির ওপর নির্ভর করেই আদিবাসী, দলিতদের কাছে পৌঁছে যেতে পারছে বিজেপি। আর এই আদিবাসী, দলিতরাই পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে বিজেপির উত্থান এর পথকে অনেকটা সহজ করে দিচ্ছেন। নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি, ক্রমাগত জনসংযোগকে হাতিয়ার করে রাজ্যের মাটিকে ক্রমশ নিজেদের অনুকূলে আনছে বিজেপি, এমনটাই জানালেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।

এভাবে বিজেপির উত্থান প্রসঙ্গে যে বক্তব্য রাখলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই রাজনৈতিক মহলের দাবি। প্রসঙ্গত, মার্কসবাদী ঘরানায় বিশ্বাসী নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন দক্ষিণপন্থী দল বিজেপির প্রবল বিরোধী বলেই রাজনীতি মহলে পরিচিত। তিনিই যখন বলছেন যে, শুধুমাত্র হিন্দুত্বের রাজনীতি নয়, নিজেদের সংগঠনকে মজবুত করে, নিজেদের ভিতকে শক্ত করছে বিজেপি । তখন তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।