প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – করোনা আবহের শুরু থেকেই দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যে স্কুল, কলেজ ইউনিভার্সিটি বন্ধ হয়ে রয়েছে। লকডাউন কেটে গিয়ে এখন নিউ নর্মালে ঢুকে গেছে রাজ্য। কিন্তু তা সত্বেও স্কুল-কলেজ এখনো পর্যন্ত খোলেনি। যদিও স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে পরীক্ষা শুরু হতে চলেছে। এই পরীক্ষাও অনলাইন হবে। তবে ডিসেম্বরের আগে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়া শিক্ষাবর্ষ শুরু করা যে সম্ভব নয় সে কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

যদিও ইউজিসির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নতুন শিক্ষাবর্ষ অর্থাৎ 2020-21 এর শিক্ষাবর্ষ পয়লা নভেম্বর থেকে শুরু হোক। জানা গেছে, রাজ্যের উপাচার্যরা কবে থেকে শিক্ষাবর্ষ শুরু হবে, তাই নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেন সম্প্রতি। তার পরেই শিক্ষামন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলায় নভেম্বর মাস জুড়ে উৎসব থাকে। তাই ডিসেম্বরের আগে রাজ্যে শিক্ষাবর্ষ শুরু করা যাবেনা। সেক্ষেত্রে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, শিক্ষাবর্ষ একমাস পিছিয়ে শুরু করার প্রস্তাব রাখা হবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে।

ইউজিসির নিয়ম অনুযায়ী পয়লা নভেম্বর থেকে ক্লাস অনলাইন কিংবা অফলাইন শুরু করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এ রাজ্যে স্নাতকোত্তরে ভর্তি শুরু হবে পয়লা নভেম্বর থেকেই। তাই স্নাতকোত্তরের ক্লাস নভেম্বরের শেষে বা ডিসেম্বরের গোড়া থেকে শুরু করবার কথা বলা হচ্ছে। সূত্রের খবর, বৈঠকের পরে কলকাতার বাইরের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা প্রশ্ন তুলেছেন, পুজোর মাসে পড়ুয়ারা ক্লাস করতে চাইবে কিনা! সেক্ষেত্রে ডিসেম্বরের আগে ক্লাস শুরু করা সম্ভব না বলেই ঠিক হয়।

অন্যদিকে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, শিক্ষাবর্ষ শুরু হলেও শারীরিক উপস্থিতির এই মুহূর্তে কোন প্রশ্নই নেই। কারণ পরিস্থিতি ঠিক হলে তবেই রাজ্য সরকার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খোলার নির্দেশ দেবে। বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়ে দিয়েছে, অনলাইনে ক্লাস চলছে এবং তাদের প্রতি বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইউজিসির যে নিয়মাবলী দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে দীর্ঘদিন যাবৎ পড়াশোনায় যে ক্ষতি হয়েছে তা মেটাতে 2020-21 এবং 2021-22 এর শিক্ষা বছরে সপ্তাহে পাঁচ দিন এর বদলে 6 দিন ক্লাস করতে হবে।

এমনকি এই দুটি শিক্ষাবর্ষে লম্বা ছুটির পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এবং ইউজিসির নিয়ম অনুযায়ী সপ্তাহে ছয় দিনই ক্লাস হবে এবং পূজার পরের ছুটিগুলি কাটছাঁট করে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। এ বছরে স্নাতকোত্তরে ভর্তি 80:20 ফর্মুলায় করা হবে। এতদিন ভর্তি 60:40 ভাবে হত। অর্থাৎ নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা মেধার ভিত্তিতে 60% আসনে ভর্তি হতে পারতেন। কিন্তু এ বছরে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা 80% আসনে ভর্তি হতে পারবেন। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের জন্য আগে 40 শতাংশ আসনে পরীক্ষা নিয়ে ভর্তি করা হতো।

কিন্তু এ বছরে সেটা কুড়ি শতাংশ করা হবে। তবে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হতে গেলে এবছর প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে হবে কি না, তা নির্ধারণ করবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বলে জানা গেছে। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন, করোনার প্রকোপে মার্চের মাঝামাঝি থেকে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন প্রায় বন্ধ। তাতে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে তাঁদের। তারপরেও ছুটির প্রয়োজন আছে কিনা অবশ্য এই নিয়ে ইতিমধ্যেই বিরোধী বক্তব্য দ্বারা এবং শিক্ষক মহল। আপাতত নতুন শিক্ষাবর্ষ চালু হলেও যে স্কুল কলেজ খুলছে না সে ব্যাপারে নিশ্চিত থাকা যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।