প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – পশ্চিমবঙ্গে কলকাতা পুরসভা সহ রাজ্যের শতাধিক পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়েছে। বকেয়া আছে ভোট। যা নিয়ে সরব হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন বিরোধী শিবির। প্রসঙ্গত, মেয়াদ উত্তীর্ণ কলকাতা পুরসভায় ভোট না করিয়ে বিদায়ী মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বে প্রশাসকমণ্ডলী গঠন করা হলে, তার বিরুদ্ধে প্রথমে কলকাতা হাইকোর্ট, পরে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, রাজ্য সরকার নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। এরপর সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে কাছে জানতে চায় যে, কলকাতা সহ রাজ্যের সমস্ত পুরসভার ভোট কবে নাগাদ করানো সম্ভব হবে? এরপর বিজেপির পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে দ্রুত পুর নির্বাচন করাবার দাবি ওঠে। তাদের যুক্তি বিহারে যদি বিধানসভা নির্বাচন হতে পারে, তবে এ রাজ্যে কেন পুরভোট করানো যাবে না?

গতকাল সঞ্জয় কিষেণ কউলের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী জানালেন যে, পশ্চিমবঙ্গে সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ যথেষ্ট আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাঁর যুক্তি, বিহারে বিধানসভা নির্বাচন করানো হলেও, সেখানকার পরিস্থিতি আর পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি এক নয়। পশ্চিমবঙ্গের উপ নির্বাচন হওয়ার যে সম্ভাবনা ছিল, সেটাও স্থগিত রাখা হয়েছে। এরপর এ বিষয়ে কলকাতা পুরসভার আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, ” এ বিষয়ে বাকিদের কোনও বক্তব্য থাকলে তা চার সপ্তাহের মধ্যে জানাতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। ৮ ডিসেম্বর ফের শুনানি হবে। ”

আবার, অন্যদিকে আদালতে মামলাকারীদের হয়ে পি এস নরসিমহার যুক্তি, ” পুর আইনের ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে পুরসভার পাঁচ বছরের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে নির্বাচন করানোর সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা খারিজ করে দেওয়া যায় না।” এ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, পুরসভায় প্রশাসক নিয়োগ করতে গেলে, তা আদালতের মাধ্যমে, কিংবা বিধানসভায় প্রস্তাব পাস্ করিয়ে করানো উচিত। প্রশাসন নির্দেশ জারি করে, তা কখনোই করাতে পারে না।

অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, ” যত দূর শুনেছি, সুপ্রিম কোর্টে ডিসেম্বরে ফের শুনানি হবে। তত দিন যেমন চলছে, তেমনই চলবে। হাইকোর্ট চেয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টও চায় এই পরিস্থিতিতে ভোট না করাতে। কিন্তু এর মধ্যেই বিজেপি ভোট চায়। আমরা চাই, যবে পরিস্থিতি ঠিক হবে, তবেই ভোট করাতে।” এ প্রসঙ্গে তিনি আরো জানান যে, পুরভোটের জন্য তাঁরা সব রকম ভাবে প্রস্তুত। কিন্তু রাজ্যের করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ভোট করানো কার্যত অসম্ভব।

প্রসঙ্গত পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ও অন্যান্য পুরসভার ভোটের বিষয়ে দুর্গাপূজার ও দীপাবলির পর সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সুপ্রিমকোর্টে রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানালো যে, রাজ্যে করোনা সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎসবের পর রাজ্যের পরিস্থিতি বিচার করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।