এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > নেই জল আলো! প্রস্তুতির যথেষ্ট সময় পেয়েও আমপান মোকাবিলায় ব্যর্থ প্রশাসন? ক্ষোভ বাড়ছে কলকাতায়

নেই জল আলো! প্রস্তুতির যথেষ্ট সময় পেয়েও আমপান মোকাবিলায় ব্যর্থ প্রশাসন? ক্ষোভ বাড়ছে কলকাতায়


করোনা ভাইরাসের মধ্যে ভয়াবহ দূর্যোগ আমপান যে তার চরম দাপট চালাতে পারে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে, তার পূর্বাভাস অনেক আগেই দেওয়া হয়েছিল। সেই মত প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগেভাগেই তারা সমস্ত রকমের দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। প্রকৃতির উপর কারও হাত না থাকলেও প্রশাসনের তরফে উদ্যোগ নেওয়ায় পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে না বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন গোটা কলকাতার মানুষ।

কিন্তু ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় তাণ্ডব চালানোর পর এখনও পর্যন্ত কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকায় জল এবং আলো সচল না হওয়ায় রীতিমত ক্ষোভ বাড়ছে এলাকাবাসীর মধ্যে। যেখানে আগেভাগেই কলকাতা পৌরসভার পক্ষ থেকে তারা প্রস্তুত বলে জানানো হয়েছিল, সেখানে কেন এই ঘূর্ণিঝড় তাণ্ডব চালানোর পর এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা গেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। অভিযোগ, কলকাতা পৌরসভার বেশকিছু ওয়ার্ডে এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি।

এমনকি অনেকে জল পর্যন্ত পাচ্ছেন না। আর এর ফলে পুর প্রশাসনিক ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে‌। সাধারণ বাসিন্দাদের বক্তব্য, ঘরে বিদ্যুৎ নেই, জল নেই। গাছ পড়ে রাস্তায় আটকে রয়েছে। কাউকে তো ফোনে পাচ্ছি না। তাই করোনাকে অপেক্ষা করে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নামতে হয়েছে পুর প্রশাসন কেন পরিস্থিতি মোকাবিলায় ধীরগতিতে কাজ করছে! জানা গেছে, যাদবপুর, বেহালা এবং টালিগঞ্জের মত এলাকাগুলোতে ওভারহেড বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গিয়ে বিপর্যয় হয়েছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে? এদিন এই প্রসঙ্গে কলকাতা পৌরসভার প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য দেবাসিশ কুমার বলেন, “আমাদের যে পরিকাঠামো রয়েছে, তাতে 48 ঘণ্টার মধ্যে 6, 7 হাজার গাছ সরিয়ে ফেলা সম্ভব নয়। তার ওপরে অনেক গাছ এত বড় যে, বিদ্যুতের তার সরিয়ে কাটতে অনেক সময় লাগছে।” এদিকে এই ব্যাপারে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শহরে প্রচুর গাছ ভেঙে পড়েছে। তাই গাছ কাটার লোকের সংখ্যা পৌরসভাকে আরও বাড়াতে হবে।”

তবে এই মুহূর্তে লোকবল না থাকায় কিভাবে সেই কাজ সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পৌরসভার এক আধিকারিক। তবে যেখানে তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, এই দুর্যোগে মোকাবিলা করার জন্য তারা আগেভাগেই পদক্ষেপ নিচ্ছেন, সেখানে কেন এখনও পর্যন্ত সেই দুর্যোগের পরেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না! এদিন এই প্রসঙ্গে কলকাতা পৌরসভার প্রাক্তন মেয়র তথা প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম বলেন, “এত বড় বিপর্যয়; আমরা তো ম্যাজিক জানি না। সবকিছু স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে।”

তিনি আরও জানান, “উড়িষ্যার ফনির পরে সব স্বাভাবিক হতে দেড় মাস লেগেছিল। আমরা সাতদিন সময় চাইছি। জানি মানুষের খুব দুর্ভোগ হচ্ছে। পৌর প্রশাসন শহরবাসীর পাশেই আছে। গাছ কাটা শ্রমিকের অভাব রয়েছে। তারা জেলায় থাকেন‌। আসছেন না। রাস্তা থেকে গাছ কাটা ও সরানোর কাজে এনডিআরএফ বাহিনীকে নামানো হবে।” কিন্তু ফিরহাদ হাকিম যে কথাই বলুন না কেন, ভয়াবহ দুর্যোগে বিভিন্ন মানুষের ক্ষতি হওয়ার পর যেভাবে তারা ন্যূনতম পরিষেবা থেকেও এখন বঞ্চিত হয়েছেন, তাতে পৌর প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের।

প্রত্যেকের একটাই প্রশ্ন, অনেক আগেই আবহাওয়াবিদদের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, এই রকম দুর্যোগ আসতে পারে। তখন পৌরসভার পক্ষ থেকে তা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এখন যখন সাধারন মানুষ এই দুর্যোগে বিপর্যস্ত, তখন জল এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা ঠিকমত মিলছে না। তাহলে কি পৌরসভা একেবারেই ব্যর্থ! এখন এই প্রশ্নই তুলতে শুরু করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। সব মিলিয়ে গোটা ঘটনায় পৌর কর্তৃপক্ষ যে ব্যাপক চাপে পড়েছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা। এখন কবে গোটা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!