এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > কোনও টেন্ডার ছাড়াই সাড়ে ৩ গুন দামে কেনা হয়েছে করোনা চিকিৎসার সামগ্রী? উঠে এল বিস্ফোরক তথ্য

কোনও টেন্ডার ছাড়াই সাড়ে ৩ গুন দামে কেনা হয়েছে করোনা চিকিৎসার সামগ্রী? উঠে এল বিস্ফোরক তথ্য


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্রয় নিয়ে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত এই বিষয়ে উপযুক্ত তদন্তের জন্য স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির তদন্তে একের পর এক গরমিলের অভিযোগ উঠে আসছে। কখনো দেখা যাচ্ছে দরপত্র ছাড়াই আপৎকালীন ভাবে সরঞ্জাম ক্রয় করা হয়েছে। কখনো বার দরপত্র ডেকেও ক্রয় করা হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে একই সরঞ্জাম বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দামে কেনা হয়েছে।

প্রসঙ্গত গত ১৮ ই জুন কলকাতার একটি কোম্পানি থেকে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর প্রায় ৫ কোটি টাকা খরচ করে তিন মিলিমিটারের ৬ লক্ষ ভাইরাল মিডিয়া ট্রান্সপোর্ট কিট ক্রয় করেছিল। করোনা পরীক্ষায় লালারসের নমুনা সংগ্রহের জন্য এই কিট ক্রয় করা হয়েছিল। জুলাই মাসে এগুলি এক একটি ৮৬ টাকা দরে কেনা হয়েছিল, কোনরকম দরপত্র না করেই । কিন্তু, অগাস্ট মাসে দরপত্র করার সময়ে এক নির্বাচিত কোম্পানি তার দাম রেখেছে ২৪ টাকা। আর পূর্বে যে সংস্থার কাছ থেকে ৮৬ টাকায় ওই কিট কেনা হয়েছিল, সেই সংস্থাই তখন দরপত্রে তার দাম রেখে ২৬ টাকা প্রতি পিস্। এখানেই আছে নানা প্রশ্ন, নানা গরমিল।

অন্যদিকে করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত দুটি পিবি-৮৪০ আইসিইউ ভেন্টিলেটর দরপত্র ছাড়াই ওয়েস্টবেঙ্গল মেডিকেল সার্ভিস কর্পোরেশন মার্চ মাসে ১০ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেছিল। কিন্তু তার দুমাস পরে দেখা গেল ওই একই ধরনের ২০ ভেন্টিলেটার কেনা হচ্ছে ১৩ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকায়। অর্থাৎ, প্রতি ভেন্টিলেটরের জন্য অধিক ৩ লক্ষ টাকা অধিক ব্যয় করা হয়েছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

ভেন্টিলেটরের দামের এই বৃদ্ধি সম্পর্কে ওয়েস্টবেঙ্গল মেডিকেল সার্ভিস কর্পোরেশনের জনৈক কর্তা জানিয়েছেন যে, করোনা সংক্রমনের কারণে গত জুন মাসে এই ধরণের দ্রব্যের উৎপাদন ব্যাপক ভাবে হ্রাস পেয়েছিল। এর ফলে বিদেশ থেকে এগুলির আমদানি করাও সমস্যা হয়ে পরে, জার্মানির বিশেষ ডিস্ট্রিবিউটর কোম্পানি এগুলি দিতে অপারগ হয়, তখন বাধ্য হয়ে অন্যান্য ডিস্ট্রিবিউটর কাছ থেকে অধিক মূল্যে তা কিনতে হয়। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ” তবে পরিস্থিতি এখন অনেকটা স্বাভাবিক। আমাদের আর প্রয়োজনও নেই। তাই ২৩১টি ভেন্টিলেটরের বরাত বাতিল করেছি,’’ বলেন ওই কর্পোরেশন-কর্তা।”

অন্যদিকে আবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় সরকারি তালিকাভূক্ত এক বিশেষ সংস্থার কাছ থেকে বায়োমেডিকেল ওয়েস্ট ব্যাগ না কিনে বাইরের একটি সংস্থার কাছ থেকে ৯ লক্ষ নিম্নমানের ব্যাগ কেনা হয়েছে। আবার রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে নিম্নমানের গ্লাভস কেনারও অভিযোগ উঠেছে। এফএফপি-২ মাস্ক ও এন-৯৫ মাস্ক কিনতে গত ২৫ সে আগস্ট রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরে দরপত্র হবার কথা ছিল। কিন্তু এখনও তা হয়ে ওঠেনি। গত ৮ ই সেপ্টেম্বর টেকনিক্যাল বিড খোলা হলেও ফিনান্সিয়াল বিড খোলা হয়নি। এবিষয়ে মাস্ক নির্মাণকারী বিভিন্ন সংস্থার অভিযোগ, ইতিপূর্বে দরপত্র ছাড়াই এক কোম্পানি থেকে ৪২ টাকায় মাস্ক ক্রয় করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। দরপত্র হলে তা আর অসম্ভব হবে না। কারণ, অন্য কোম্পানি অনেক কম দামে মাস্ক দিতে প্রস্তুত। তাই ইচ্ছা করেই দরপত্র চূড়ান্ত করতে বিলম্ব করা হচ্ছে।

করোনা সরঞ্জাম ক্রয় নিয়ে এমন নানা অনিয়ম এর তদন্ত চালাচ্ছে তদন্তকারী টিম। তবে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নিগম সংবাদমাধ্যমকে এই বিষয়ে কিছু জানাতে নারাজ। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ” কোভিডের শুরুতে আচমকাই অনেক কিছু কিনতে হয়েছিল। চাপ ছিল। তখন কিছু ‘লোকাল পারচেজ়’ (স্থানীয় ভাবে কেনা) হয়েছে। তাতে কিছু সমস্যা হয়। কিন্তু এখন সমস্ত দরপত্র প্রক্রিয়া অত্যন্ত খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে এবং অত্যন্ত কঠোর নজরদারিতে হচ্ছে।’’

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!