এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > করোনা আক্রান্ত প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা, প্লাজমা দিতে ছুটলেন বিরোধী দলনেতা! প্রশংসার বন্যা

করোনা আক্রান্ত প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা, প্লাজমা দিতে ছুটলেন বিরোধী দলনেতা! প্রশংসার বন্যা


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সবার উপরে মানুষ সত্য। রাজনৈতিক আদর্শ, মতাদর্শ, বিশ্বাস যাই থাকুক না কেন মানবিকতার উপরে কোন কিছুই যে নয়, সেটাই প্রমাণ করে দিলেন হাবরা পুরসভার প্রাক্তন বামপন্থী দলনেতা ঋজিনন্দন বিশ্বাস। করোনা আক্রান্ত হাবরা তৃণমূলী পুরপ্রশাসক নীলিমেশ দাসকে নিজের প্লাজমা দান করতে গত সোমবার হাসপাতালে পৌঁছালেন এই বামপন্থী নেতা।

সিপিএম নেতা ঋজিনন্দন বিশ্বাসের এই মহান ভূমিকায় বিস্মিত স্থানীয় মানুষের সঙ্গে রাজনৈতিক মহলও। মানুষের মুখে মুখে ঘুরছে প্রশংসা বার্তা। এ প্রসঙ্গে বামপন্থী নেতা ঋজিনন্দন বিশ্বাস নিজেই জানালেন, ” বিমান বসুর বক্তব্যে একবার শুনেছিলাম, আগে আমরা মানুষ। তারপরে কমিউনিস্ট। আমরা নিশ্চয়ই তৃণমূলের সমালোচনা করব। মতপার্থক্য থাকবে। কিন্তু মানুষের জীবনের মূল্য আগে। বিরোধী দলের কারও বিপদে এগিয়ে যাওয়া যাবে না, এমন অন্ধত্ব আমাদের দলে নেই।’’

তবে সিপিএম নেতা ঋজিনন্দন গত ১২ ই সেপ্টেম্বর থেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাবড়ার পুরপ্রশাসক নীলিমেশ দাসকে প্লাজমা দান করতে হাসপাতালে গেলেও ডাক্তারেরা বেশ কিছু কারণের জন্য তাঁর প্লাজমা গ্রহণ করেন নি। সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে তাঁকে জানানো হয়েছে যে, করোনা রোগীকে প্লাজমা দান করতে গেলে প্লাজমা দাতাকে পূর্বে করোনা পজিটিভ হতে হয়। প্রসঙ্গত গত ১৩ ই আগস্ট র‌্যাপিড পরীক্ষায় ঋজিনন্দন বিশ্বাসের করোনা ধরা পড়েছিল। কিন্তু লালার্স পরীক্ষায় তাঁর করোনা ধরা পড়েনি। তাই চিকিৎসকেরা তাঁর প্লাজমা গ্রহণ করেন নি। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, ” সরকারি নির্দেশিকায় আছে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে কেউ করোনা পজ়িটিভ হলে তাঁকে পজ়িটিভ রোগী হিসেবেই ধরা হবে। ফলে অদ্ভূত যুক্তিতে আমার প্লাজ়মা নেওয়া হল না।’’

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রসঙ্গত, হাবরায় সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষ একাধিক বার দেখা গেছে। সিপিএমের অভিযোগ ছিল ২০১৩ সালে হাওড়া পৌরসভা ভোট ও ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল সন্ত্রাসের বাতাবরণ সৃষ্টি করেছিল। বিরোধীদের হেনস্থা করা হয়েছিল, প্রার্থীদের হুমকি দেয়া হয়েছিল। পঞ্চায়েত ভোট গণনার সময়েও মারধর করা হয়েছিল বিরোধীদের। এমনটাই অভিযোগ তাদের। আবার ক্ষমতায় থাকাকালীন তৃণমূল নেতৃত্বের উপরেও ব্যাপক অত্যাচার চালিয়েছে সিপিএম, এমন অভিযোগ তৃণমূলের আছে। হাবরার বেশকিছু কলেজে তৃণমূল- সিপিএম দুই মতাদর্শের ছাত্রসংগঠন বারবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে । এই পরিবেশে তৃণমূল নেতাকে সিপিএম নেতার প্লাজমা দান বিশেষ তাৎপর্যবাহী।

আবার, সিপিএমের পক্ষ থেকে হাবরায় সম্প্রতি অ্যান্টিবডি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসাতে সাহায্যের জন্য রেড ভলেন্টিয়ার দলও গঠন করা হয়েছে । এ প্রসঙ্গে সিপিএমের হাবরা এরিয়া কমিটির সাধারণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশুতোষ রায়চৌধুরী বলছেন, ” যে কোনও অসুস্থ মানুষের পাশে আমরা থাকি। এটাই আমাদের কাজ।’’ অপর এক করোনা আক্রান্তকেও প্লাজমা দানের সংকল্প নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর অকস্মাৎ মৃত্যতে তিনি তা করতে পারেননি। তৃণমূল নেতা নীলিমেশ দাস তাঁর প্লাজমা ব্যবহার করতে না পারলেও তাঁর প্রতি তিনি যথেষ্ট কৃতজ্ঞ। এ প্রসঙ্গে রোগ সজ্জা থেকেই তাঁর উক্তি, ” এই হল হাবড়ার আসল স্পিরিট। এটাই হাবড়ার রাজনৈতিক সংস্কৃতি।’’

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!