এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া > কথা দিয়েও কথা রাখছে না রাজ্য সরকার! করোনা আবহে বরাদ্দ ভাতা না পেয়ে আন্দোলনের পথে আশাকর্মীরা

কথা দিয়েও কথা রাখছে না রাজ্য সরকার! করোনা আবহে বরাদ্দ ভাতা না পেয়ে আন্দোলনের পথে আশাকর্মীরা


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের আশা কর্মীদের কাজের পরিমাণ অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজ্যের গ্রামে গ্রামে ঘুরে তারা খোঁজ নেন কারোর জ্বর হয়েছে কিনা, কিংবা জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তি কোয়ারেন্টাইনে আছেন কিনা, অথবা বাইরে থেকে কোন ব্যক্তি সেই গ্রামে এসেছেন কিনা। কিন্তু এই সমস্ত বাড়তি কাজের জন্য মাত্র ১০০০ টাকা তাদের ভাতা দেওয়া হয় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু এরপর গত জুলাই মাস থেকে আসা কর্মীরা এই ভাতা থেকেও বঞ্চিত। তাই বকেয়া ভাতা দান, বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, পেনশন দান সহ বহু বিষয় নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলার আশা কর্মীরা স্মারকলিপি দিলেন ইউনিয়নের সদস্যরা সংশ্লিষ্ট দুই জেলার স্বাস্থ্য দফতরে।

পুরুলিয়া জেলার আশা কর্মী সংগঠনের রাজ্য কমিটির জনৈক সদস্য অর্চনা খাঁ জানিয়েছেন, গত মার্চ মাস থেকে তাদের গ্রামে গ্রামে ঘুরে খোঁজ নিতে হয় যে, কেউ জ্বরে আক্রান্ত কিনা, জ্বর হওয়ার পরপরই তিনি কোয়ারেন্টিনে আছেন কিনা, বা বাইরে থেকে কেউ গ্রামে এসেছেন কিনা। এই সমস্ত বিষয়ে যথাপযুক্ত খোঁজখবর নিয়ে তাদেরকে নিকটস্থ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এএনএম এর কাছে তার রিপোর্ট দাখিল করতে হয়। কিন্তু এত কাজের জন্য তারা মাসে মাত্র ১ হাজার টাকা ভাতা পান। তার ওপর গত দু’মাস থেকে আটকে দেওয়া হয়েছে এই ভাতা।

অন্যদিকে করোনা সংক্রমণ ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদেরকে বারবার করোনা আক্রান্তদের বাড়িতে যেতে হচ্ছে। কিন্তু রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তাদের কোন সুরক্ষা সরঞ্জাম দেওয়া হয় নি। তাদের সমস্যার কথা জানিয়ে তারা স্মারকলিপি দিলেন পুরুলিয়া উপ স্বাস্থ্য আধিকারিক পৃথ্বীশ আকুলির নিকট।জেলার আশা কর্মীদের এই অভিযোগ প্রসঙ্গে পুরুলিয়ার উপ স্বাস্থ্য আধিকারিক পৃথ্বীশ আকুলি জানালেন, “ওঁদের ভাতার জন্য টাকা চাওয়া হয়েছে। তা এলেই আশাকর্মীরা পেয়ে যাবেন। সুরক্ষা সরঞ্জাম অনেকের কাছেই পৌঁছছে, কেউ না পেলে সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’

পুরুলিয়া জেলার মতো অনুরূপ চিত্র দেখা গেলো বাঁকুড়া জেলাতেও। গতকাল বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের লায়েকবাঁধ অঞ্চলের আশাকর্মী সোমা মুখোপাধ্যায়ে জানালেন যে, তারা প্রতি মাসে মাত্র সাড়ে তিন হাজার টাকা বেতন পান। কিন্তু এই সামান্য বেতন নিয়েই তাদের প্রত্যেক গ্রামবাসীর বাড়িতে ঘুরে ঘুরে গর্ভবতী, প্রসূতি ও শিশুদের খোঁজখবর নিতে হয়। সেই সঙ্গে কিডনি, সুগার, প্রেসার, হৃদযন্তের সমস্যায় থাকা রোগীদেরও তথ্য সংগ্রহ করতে হয়। তার অভিযোগ, তাদের কাজের চাপ দিন দিন বাড়লেও বাড়েনি বেতন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বাঁকুড়া জেলা জয়পুর এর জনৈক আশা কর্মী অপর্ণা রায় জানিয়েছেন যে, করোনার সংক্রমণ কালে রাজ্য সরকার প্রতি মাসে তাদের জন্য এক হাজার টাকা করে অতিরিক্ত ভাতার কথা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু প্রথম তিন তিনমাস তা হলেও পরবর্তীতে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাঁরা দাবি করেছেন, তাদের চাকরিতে স্থায়ীকরণ, মাসে অন্তত ১৫০০০ টাকা বেতন, বোনাস, পিএফ, পেনশন সহ অবসরকালে অন্তত ১০ লক্ষ টাকা এককালীন।

জেলার আশা কর্মীদের এই দাবি প্রসঙ্গে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার বলেছেন, “ করোনা পরিস্থিতিতে বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলায় মোট ৮৫৬ জন আশাকর্মী কাজ করছেন। তাঁদের কাজ প্রশংসনীয়। তাঁদের স্থানীয় দাবি আমরা মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে বেতন বৃদ্ধি, পেনশন ইত্যাদি আর্থিক দাবিদাওয়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। ’’

অন্যদিকে বাঁকুড়া জেলার সদর স্বাস্থ্য আধিকারিক এর দপ্তরে গতকাল স্মারকলিপি জমা দিলেন এই জেলার আশা কর্মীরা। সংগঠনের তরফ থেকে আশা কর্মী মিত্রা ভট্টাচার্য মিতালী পালেরা জানালেন, সম্প্রতি করোনা সংক্রমনের মধ্যে তারা গ্রামে গ্রামে ঘুরে মানুষের সেবা করছেন। কিন্তু তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সরকারের কোনো চিন্তা-ভাবনা করছে না। তাদের সমস্যার গুলির দিকে সরকারের দৃষ্টিপাতের দাবি করেছেন তারা। সেইসঙ্গে তাঁরা মাসে ২১ হাজার টাকা বেতন সহ নানা দাবি নিয়ে বাঁকুড়া জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকের যকৃৎ স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। তাদের এই দাবিগুলির বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হবে বলে আশ্বাস দেয়া হয়েছে স্বাস্থ দপ্তরের পক্ষ থেকে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!