কট্টর বিরোধী হলেও, মমতার স্বপ্নের প্রকল্পের প্রচারে বিজেপি নেত্রী, জল্পনা রাজ্যজুড়ে! কলকাতা তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য August 12, 2021 প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- বিজেপি বিরোধী দলের জায়গা দখল করার পর থেকেই শাসক দলের পক্ষ থেকে বিজেপিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন গঠনগত বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করেন। এক্ষেত্রে কথায় কথায় যেন বিরোধিতা না করে বিজেপি, তার জন্য বারবার তৃণমূলের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে। কিন্তু তারপরেও বিভিন্ন ইস্যুতে বিজেপির বিরোধিতা অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে ঘাসফুল শিবিরকে। শুধুমাত্র বিরোধিতা করার জন্যই বিজেপি তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধিতা করছে বলে অভিযোগ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। আর এই পরিস্থিতিতে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর যখন “লক্ষীর ভান্ডার” প্রকল্প লাগু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার, তখন শত বিরোধিতা করলেও এই প্রকল্পের প্রচার করতে দেখা গেল এক বিজেপি নেত্রীকে। যা দেখে অনেকেরই চোখ কপালে উঠতে শুরু করেছে। যেখানে তৃণমূল সরকারের প্রতিটি প্রকল্পের বিষয় নিয়ে কটাক্ষ করে ভারতীয় জনতা পার্টি, সেখানে বিজেপি নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই স্বপ্নের প্রকল্পের প্রচার কেন করছেন, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। অনেকে বলছেন, তাহলে কি এই বিজেপি নেত্রী এবার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিতে চাইছেন! আর সেই কারণেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রকল্পের প্রচার করতে দেখা যাচ্ছে তাকে? আবার অনেকে বলছেন, এর পেছনে জল্পনার কোনো কারণ নেই। আসলে গোটা বিষয়টি অত্যন্ত সদর্থক। তাই সেই কারণে সাধারণ মানুষ যাতে সুবিধা পায়, তার জন্য এই ধরনের প্রচার করেছেন তিনি। সূত্রের খবর, কলকাতার 42 নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপির কো-অর্ডিনেটর সুনিতা ঝাওয়ার রাজ্য সরকারের লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের ব্যাপক প্রচার করতে শুরু করেছেন। যেখানে নিজের এলাকার মানুষদের মধ্যে লিফলেট আকারে এই প্রকল্পের বিষয়টি জানাতে শুরু করেছেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই যে বিজেপির পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত রাজ্য সরকারের প্রতিটি প্রকল্প নিয়ে কটাক্ষ করা হয়, সেখানে বিজেপির এক নেত্রী তথা এক ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর কেন রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পের প্রচার করছেন! ইতিমধ্যেই এই গোটা বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য নেতৃত্ব। তাদের দাবি, তাদের দলের নেত্রী যা করেছেন, ভালোই করেছেন। এক্ষেত্রে সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সুবিধা যাতে মানুষ পায়, তার জন্যই তিনি এই চেষ্টা করেছেন। অর্থাৎ বিজেপির পক্ষ থেকে এখন গোটা বিষয়টি নিয়ে ড্যামেজ কন্ট্রোল করে এই ধরনের বার্তা দেওয়া হচ্ছে বলেই দাবি একাংশের। যাকে পাল্টা কটাক্ষ করতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - একাংশের প্রশ্ন, সত্যিই তো তাই! হঠাৎ করে কেন রাজ্য সরকারের এই রকম উন্নয়নমূলক প্রকল্পের প্রচার লিফলেট আকারে করতে শুরু করলেন তিনি? এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেত্রী সুনিতা ঝাওয়ার বলেন, “আমার এলাকায় বেশিরভাগ মানুষ হিন্দিভাষী। আমি ওয়ার্ড কো অর্ডিনেটর হিসেবে মানুষকে জানাতেই লিফলেট ছাপিয়ে প্রচার করেছি। তিন দিন ধরে নিজের ওয়ার্ডে প্রায় 200 প্রচারপত্র বিলি করেছি। সরকারি প্রকল্প মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেই রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করার চেষ্টা করছি। এতে দোষের কি আছে!” এদিকে গোটা বিষয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে বাড়তি হাতিয়ার পেয়ে গিয়েছে ঘাসফুল শিবির। এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বালের, “আয়ুষ্মান ভারতের সুবিধা সকলে পায় না। স্বাস্থ্যসাথী সকলে পায়। বিজেপির জনপ্রতিনিধিরা দেখছেন, রাজ্যের প্রকল্পগুলো ভালো, মানুষ তা গ্রহণ করছেন। সুতরাং তারা এর বাইরে থাকবেন কি করে? তাই তারাও প্রকল্প রূপায়নে হাত লাগাচ্ছেন।” তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের জন্য যখন কোনো প্রকল্প আসে, তখন শাসক থেকে বিরোধী সকলের সেই প্রকল্প রূপায়নের কাজে শামিল হওয়া উচিত। এক্ষেত্রে বারবার তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে গঠনমূলক বিরোধী দলের আচরণ পালনের জন্য বিজেপিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেদিক থেকে বিজেপির এই হেভিওয়েট নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প রূপায়নের জন্য নিজের এলাকার মানুষের কাছে যেভাবে লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পে নিয়ে প্রচার করলেন, তাতে তৃণমূল কতটা বিরোধিতার অস্ত্র পেল, তা বলা না গেলেও, বিজেপি নেত্রীর গ্রহণযোগ্যতা যে অনেকটাই বৃদ্ধি পেল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -