প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – কয়লা কাণ্ড নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপির হাইপ্রোফাইল নেতারা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কয়লা কাণ্ডের নায়কদের যোগাযোগ রয়েছে বলে দাবি করতে দেখা গেছে বিজেপি নেতাদের। এক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারী সবথেকে বেশি এই বিষয়ে তৃণমূল নেতাদের নাম তুলে ধরে ঘাসফুল শিবির এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন।

আর এবার বর্ধমানের এক সভা থেকে কয়লা কাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ষষ্ঠ দফার নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস যে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়ে গেল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সূত্রের খবর, আজ বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের মাদারবনী এলাকায় বিজেপির পক্ষ থেকে একটি সভার আয়োজন করা হয়। আর সেখানেই উপস্থিত হয়ে কয়লা কাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন অমিত শাহ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “দিদি এক চ্যানেলে বলছে, বিনয় মিশ্র সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তখনই দিদির ভাইপো অন্য চ্যানেলে বলছে, বিনয় মিশ্রকে প্রতারিত করা হয়েছে। এই বর্ধমান জেলা কয়লা চুরি জন্য প্রসিদ্ধ। সিবিআই কয়লা কান্ডে এক মিশ্রকে ধরেছে। সঙ্গে সঙ্গে ময়দানে নেমে পড়েছে দিদির ভাইপো।”

অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিনয় মিশ্রের নামে অস্বীকার করলেও তার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই ব্যাপারে অবহিত এবং তিনি এক টিভি চ্যানেলে যে এই বিষয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, তা পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিলেন অমিত শাহ। এক্ষেত্রে তৃণমূলের দুই নেতা নেত্রীর বিনয় মিশ্রকে নিয়ে দুই ধরণের কথোপকথন কার্যত প্রশ্ন তুলে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যার ফলে কয়লা কান্ডকে কেন্দ্র করে ভারতীয় জনতা পার্টির জোড়া অস্বস্তির মুখে পড়তে হল তৃণমূল কংগ্রেসকে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

পর্যবেক্ষকদের মতে, বর্তমানে দুর্নীতি তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে প্রধান অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে। শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করে বিজেপিতে নাম লেখানোর পর থেকেই কয়লা কাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের অন্যতম নেতা বিনয় মিশ্রের কথা তুলে ধরে বারবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তবে সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই বিনয় মিশ্রের কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন।

এমনকি তাকে তিনি চেনেন না বলেও একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দাবি করেন বলে খবর। তবে সেদিনই অন্য একটি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, বিনয় মিশ্রকে প্রতারিত করা হয়েছে।

আর এই পরিস্থিতিতে সেদিনের কথা তুলে ধরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বৈত কথা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়ে তৃণমূলকে কার্যত অস্বস্তিতে ফেলে দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় চাণক্য। যা ভোটের মরসুমে ঘাসফুল শিবিরকে অনেকটাই বিড়ম্বনার মুখে ফেলে দেবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।