এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > কৃষকদের মন জয়ে এবার অভিনব উপহারের ডালি নিয়ে হাজির হলেন মমতার হেভিওয়েট মন্ত্রী, জেনে নিন

কৃষকদের মন জয়ে এবার অভিনব উপহারের ডালি নিয়ে হাজির হলেন মমতার হেভিওয়েট মন্ত্রী, জেনে নিন


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের কৃষকদের মন পেতে উঠে পড়ে লেগেছে শাসকদল তৃণমূল। কৃষকদের দিকে নজর দিয়ে এবার কৃষকদের জন্য অভিনব উপহার নিয়ে এলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দোপাধ্যায়। দীর্ঘদিন ধরেই কৃষকরা নিজেদের জমিতে চাষের পরে ফসলের গোড়া পুড়িয়ে দেন। এটা কে বলে নাড়া পোড়ানো। কিন্তু এই নাড়া পোড়ালে অতিরিক্ত মাত্রায় পরিবেশ দূষণের সৃষ্টি হয়। আর তা থেকে মুক্তির উপায় পেতে এবার পরিবেশ রক্ষার জন্য এক বিশেষ ক্যাপসুল নিয়ে আসলেন কৃষিমন্ত্রী। আর সেই ক্যাপসুল বুধবার রামপুরহাট কিষাণ মান্ডিতে কৃষক সচেতনতা শিবিরের বেশ কয়েকজন চাষির হাতে কৃষিমন্ত্রী তুলে দেন।

বুধবার রামপুরহাট কিষাণ মান্ডিতে ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো প্রতিরোধী দিবস ও কৃষক সচেতনতা শিবিরের আয়োজন হয়। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দোপাধ্যায় সহ জেলার উপকৃষি অধিকর্তা(প্রশাসন) একেএম মিনাজুর আহাসানসহ অন্যান্য কর্তারা। বর্তমানে সমস্ত ব্যাপারেই যন্ত্রের উপর নির্ভরতা বেশি। কৃষিক্ষেত্রেও তাই। শ্রম কমাতে এবং খরচ ও সময় বাঁচাতে বেশিরভাগ কৃষিকাজই এখন যন্ত্রের সাহায্যে হয়। ধান কাটার জন্য ব্যবহার হয় ‘কম্বাইন হারভেস্টর’ নামক একটি যন্ত্র। এই যন্ত্র ব্যবহার করলে মাঠে পড়ে থাকছে ফসলের গোড়া এবং ফসলের টুকরো। পরবর্তী ফসল চাষের জন্য দ্রুত জমি পরিষ্কার করার প্রয়োজন পড়ে।

আর তাই ফসলের গোড়াতে আগুন ধরিয়ে দেয় বহু চাষী। কিন্তু তার ফলে অতিরিক্ত মাত্রায় যে দূষণ ছড়ায়, সে ব্যাপারে অবশ্য কেউই সচেতন নয়। তাই এ ব্যাপারে সচেতনতা প্রচারের দায়িত্ব তুলে নিয়েছে রাজ্য কৃষি দপ্তর। এবছর প্রথম রাজ্য জুড়ে কৃষি দপ্তর পালন করল ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো প্রতিরোধী দিবস। রামপুরহাট থেকে এদিন ভার্চুয়ালি এই সংক্রান্ত রাজ্য স্তরের সেমিনারের উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দোপাধ্যায়। পরে তিনি রামপুরহাটের ব্লক কৃষি দফতরের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন। যেখানে ফসলের গোড়া পোড়ানোর ফলে কি কি ক্ষতি হয় পরিবেশের, সে কথা তুলে ধরেন কৃষিমন্ত্রী নিজেই।

এছাড়াও বর্তমান সরকারের আমলে কৃষি ক্ষেত্রে কি কি উন্নতি হয়েছে, সে কথাও বলা হয়। এদিন কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছেন, ফসলের গোড়া পোড়ানোর বিকল্প হিসেবে একটি বিশেষ ক্যাপসুল বিলি করা হয়েছে কয়েকজন চাষীদের মধ্যে। জানা গেছে, এই ক্যাপসুল জমিতে ব্যবহার করলে ফসলের গোড়া পচে গিয়ে মাটির সঙ্গে মিশে যাবে। এবং জমিও উর্বর হবে ও উৎপাদনও বাড়বে। অন্যদিকে নাড়া পোড়ানোর প্রবণতাও কমে আসবে। ফলে পরিবেশ দূষণের হাত থেকে পাওয়া যাবে মুক্তি। আপাতত বীরভূম জেলায় প্রাথমিকভাবে 100 একর জমিতে এই ক্যাপসুল প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে এই ক্যাপসুল কিভাবে ব্যবহার করা যাবে, তা নিয়ে জেলার উপকৃষি অধিকর্তা(প্রশাসন) একেএম মিনাজুর আহাসান সম্পূর্ণ বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রথমে পরিমাণমতো গুড়ের সঙ্গে কিছুটা জল মিশিয়ে 5 মিনিট গরম করতে হবে। ঠান্ডা হলে তার ওপরে একটি গাদ পড়বে। সেই গাদ সরিয়ে 5 লিটার জল, 50 গ্রাম ছোলার ছাতু, আর পাঁচটি ক্যাপসুল দিয়ে মাটির পাত্রে পাঁচদিন রেখে দিতে হবে। তারপর দেখা যাবে এই 5 লিটার জলের ওপরে একটা কঠিন আস্তরণ পড়েছে। সেই আস্তরণ ভেঙ্গে নিচে যে মিশ্রণ পাওয়া যাবে, তা জমিতে স্প্রে করতে হবে। প্রতি 5 লিটার জলের মিশ্রণে 10 কুইন্টাল নাড়া পচানো যাবে বলে জানা গিয়েছে।

ফসলীর গোড়া পচতে বহু সময় লাগে। আর সেকারণেই চাষিরা তাড়াতাড়ি জমিতে এই গোড়া পুড়িয়ে দেন। কিন্তু এই ক্যাপসুল ব্যবহার করার ফলে খুব তাড়াতাড়ি ফসলের গোড়া পচে গিয়ে জমির সাথে মিশে যাবে বলে দাবী করা হচ্ছে। আপাতত প্রগতিশীল চাষের জমিতে এই ক্যাপসুল ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। উপকার পেলে এই ক্যাপসুল কিছুদিনের মধ্যেই বাজারেও চলে আসবে। খুব স্বাভাবিকভাবেই কৃষকদের মধ্যে এই ক্যাপসুল নিয়ে একটি কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ দীর্ঘদিন ধরেই ফসলের গোড়া পোড়ানোর ফলে চূড়ান্ত পরিবেশ দূষণের সৃষ্টি হয়। আর এ বছর করোনা আবহে পরিবেশ দূষণের দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।

আর তাই রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কৃষকদের জন্য অভিনব উপায় হাজির করলেন ফসলের গোড়া না পুড়িয়ে পচানোর জন্য। এতে কৃষিক্ষেত্রে উর্বরতা বাড়বে বলে দাবি করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ক্যাপসুল ব্যবহার করে কতটা উপকার পাবেন চাষীরা তার ওপরই নির্ভর করছে ক্যাপসুল এর জনপ্রিয়তা। আপাতত রাজ্যজুড়ে বিধানসভা নির্বাচনের জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে। আর সেদিকে নজর দিয়েই এবার সরকারের জনপ্রতিনিধিরা সমাজের বিভিন্ন স্তরের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!