এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > ক্রমশ গড় দখল করছে বিজেপি, অভিমান ভুলিয়ে নিষ্ক্রিয় কর্মীদের কাছে হেভিওয়েট তৃণমূল মন্ত্রী

ক্রমশ গড় দখল করছে বিজেপি, অভিমান ভুলিয়ে নিষ্ক্রিয় কর্মীদের কাছে হেভিওয়েট তৃণমূল মন্ত্রী


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিজেপির চাপে এখন তৃণমূল নেতৃত্বকে অনেকটাই তৎপর হতে দেখা গেছে। 2011 সালে ক্ষমতায় আসবার আগে যে সমস্ত নেতাকর্মীরা দলের পতাকা বহন করে এসেছিলেন, ক্ষমতায় আসার পরে দলে তাদের গুরুত্ব হারিয়েছে, এই অভিযোগ শাসক দলের অন্দরে বারবার উঠেছে। কিন্তু মুখের কথা মুখ পর্যন্তই থেকে গেছে। বাস্তবে নেত্রী থেকে শুরু করে দলের অনেক শীর্ষ নেতা পুরনো কর্মীদের ফিরিয়ে আনার কথা বললেও, সেই কথা কানেই তোলেননি জেলা নেতারা। কিন্তু এখন যখন বিজেপির চাপ বাড়তে শুরু করেছে, তখন ঠেলায় পড়ে সেই সমস্ত নিষ্ক্রিয় কর্মীদের দলের সক্রিয় করার উদ্যোগ নিল তৃণমূল কংগ্রেস।

সূত্রের খবর, এবার রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে কোচবিহার জেলায় নিষ্ক্রিয় তৃণমূল কর্মীদের দলের সক্রিয় করতে ময়দানে নেমেছেন বর্ষিয়ান তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে দাঁড়ানো পরেশ অধিকারীকে জয়লাভ করানোর প্রধান দায়িত্ব ছিল তৎকালীন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের উপরে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরাজিত হতে হয় তৃনমূল প্রার্থীকে।

যেখানে জয়লাভ করেন তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগদানকারী নিশীথ প্রামানিক। আর বিজেপি কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্র দখল করার পর থেকেই ক্রমাগত তৃণমূলের অন্দরমহলে ভাঙ্গন ধরতে শুরু করে। যে সমস্ত নেতাকর্মীরা ক্ষমতায় আসার পর দলে গুরুত্ব পাচ্ছিলেন না, তারাও বসে যেতে শুরু করেন। যার ফলে সামনের নির্বাচনে সকলকে নিয়ে কাজ করা যে অত্যন্ত প্রয়োজন, তা বুঝতে পেরেই এবার রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে সেই সমস্ত পুরনো কর্মীদের মান ভাঙানোর জন্য আসলে নেমে পড়লেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।

সূত্রের খবর, কখনও ফোনে, আবার কখনও বা এলাকায় গিয়ে পুরনো বসে যাওয়া কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন কোচবিহার জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, সেই সমস্ত পুরনো কর্মীদের ফোন নম্বর জোগাড় করে কখনও কখনও নিজের বাড়িতে তাদের ডেকে আনছেন রবিবাবু।

স্বাভাবিকভাবেই এর ফলে একটা জিনিস পরিষ্কার যে, বিজেপির চাপে এখন তৃণমূল কোচবিহার জেলায় অনেকটাই কোণঠাসা। তাই নতুন-পুরনো সমন্বয়ে যাতে বিজেপিকে কোণঠাসা করা যায়, তার জন্যই কাজ শুরু করে দিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। আর এখানেই একাংশের প্রশ্ন, এতদিন ক্ষমতায় থাকার সুবাদে নেতারা দলের পুরোনো কর্মীদের খোঁজখবর পর্যন্ত নেননি। কিন্তু সামনে যখন নির্বাচন এবং বিজেপির প্রভাব বাড়ছে, তখন এভাবে পুরনো কর্মীদের ক্ষোভ প্রশমনে করলেও সমস্যার সমাধান হবে কি!

অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, 2011 সালের আগে যেমন খেটেখুটে পরিশ্রম করে দলকে ক্ষমতায় আনা হয়েছিল, ঠিক একইভাবে 2021 সালেও সেই পুরনো কর্মীরা হয়ত বা আবার দলকে সাফল্যের মুখ দেখিয়ে দেবেন। কিন্তু তারপর তাদের যে আবার গুরুত্ব দেওয়া হবে, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। আর তাই সেই সমস্ত পুরনো কর্মীরা রবিবাবুর মত হেভিওয়েট মন্ত্রীর ডাকে আদৌ দলে সক্রিয় হবেন কিনা, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে কোচবিহার জেলা তৃণমূলের অন্দরমহলে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

জানা গেছে, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ মান ভাঙানোর জন্য আসরে নামলেও, বেশ কিছু ত্রুটির খবর পাওয়া গেছে। যেখানে আদি- নব্যের পাশাপাশি বেশ কিছু জায়গায় পদ দেওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ। স্বাভাবিক ভাবেই সংগঠনের ভেতরে এত ত্রুটি থাকায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেই সমস্ত কিছুকে সামাল দিয়ে বসে যাওয়া নেতা-কর্মীদের সক্রিয় করা কতটা সম্ভব, তা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে দলীয় নেতাদের মধ্যে।

যদিও বা এই ব্যাপারে কোচবিহার জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “দলের রাজ্য নেতৃত্বে নির্দেশে আমি পুরনো বসে যাওয়া কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছি। তাদের আমার বাড়ির অফিসে ডাকছি। আবার আমি যখনই যে এলাকায় দলের কাজে যাচ্ছি, সেখানেই রাগ করে বা অভিমানে বসে থাকা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছি। তাদের বেশিরভাগই প্রথম দিন থেকে আমার সঙ্গে কাজ করা শুরু করেছিলেন। এদের অনেকের সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব ভাল। এই পুরোনো কর্মীদের ফেরালে দল শক্তিশালী হবে। আমি বুথস্তর পর্যন্ত পৌঁছে এই কাজ করছি।”

তবে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ পুরনো কর্মীদের সক্রিয় করার জন্য মাঠে নামলেও তাদের মান ভাঙাতে যে অত্যন্ত পরিশ্রম করতে হচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য। আর এখানেই অনেকে বলছেন, পরিশ্রম করে যদি সাফল্য পাওয়া যায়, তাহলে তা মধুর হয়। কিন্তু কোচবিহার জেলায় যেভাবে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে এবং বিজেপির প্রভাব ক্রমশ বাড়ছে, তাতে পুরনো কর্মীদের সক্রিয় করার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঘোষের ময়দানে নামা আদৌ সফলতা পাবে কিনা, তা বড় মাপের প্রশ্নচিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!