এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > ক্রমশ কি মোদী-শাহ জুটির জনপ্রিয়তা তলানিতে? বিভিন্ন রাজ্যের অন্তর্দ্বন্দ ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে

ক্রমশ কি মোদী-শাহ জুটির জনপ্রিয়তা তলানিতে? বিভিন্ন রাজ্যের অন্তর্দ্বন্দ ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে হারের পর বাংলায় গেরুয়া শিবিরের অন্তর্কলহ প্রকাশ্যে এসেছে। রাজ্য বিজেপির হেভিওয়েট অনেক নেতাই পশ্চিমবঙ্গের হারের জন্য দায়ী করেছেন কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বকে। আর এখানেই উঠেছে প্রশ্ন। কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব বলতে প্রধানত মোদি এবং শাহ জুটিকেই বোঝায়। এতদিন পর্যন্ত এই জুটির দিকে আঙ্গুল তুলে কথা বলার ক্ষমতা ছিলনা গেরুয়া শিবিরের কারোর। কিন্তু এখন রাজ্য স্তর থেকে যেভাবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে আক্রমণ করা হচ্ছে, তাতে কিন্তু কোথাও মনে হচ্ছে, মোদী শাহ ম্যাজিক আর কিন্তু কাজ করছে না। আগামী বছর আরো বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হতে চলেছে, যার মধ্যে উত্তরপ্রদেশ অন্যতম।

সেখানেও দেখা যাচ্ছে বিজেপির দলীয় কোন্দল তুঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এর বিবাদ এখন আর আড়ালে নেই। প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী মোদী উপমুখ্যমন্ত্রী করতে চেয়েছিলেন আমলা অরবিন্দ শর্মাকে। কিন্তু যোগীর আপত্তিতে শেষ পর্যন্ত তাঁকে দলের সহ-সভাপতি করে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। অন্যদিকে হাজার বিতর্ক সত্ত্বেও যোগী আদিত্যনাথকে কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে মোদি সরকার সরাতে পারেনি। অগত্যা ভোট পর্যন্ত অপেক্ষা। এর পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে, উত্তরাখণ্ডেও সামনের বছরে বিধানসভা নির্বাচন। মাত্র তিন মাস আগে সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বদল করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।

অথচ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আর বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে ব্যাপক অন্তর্কলহ কাঁঁটার মতো বিঁঁধছে। উত্তরাখণ্ডে কুম্ভ মেলার সময় ভুয়ো কোভিড পরীক্ষা এবং লক্ষাধিক পূণ্যার্থীকে জাল রিপোর্ট দেওয়া নিয়ে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। আর তাই নিয়েই বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী দায়ভার চাপিয়ে দিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ওপর। অন্যদিকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বিচার বিভাগীয় তদন্ত করালেই আসল সত্য প্রকাশে আসবে।

এই পরিস্থিতিতে এখন দেখার, সেখানকার বিরোধী দল কংগ্রেস গেরুয়া শিবিরের এই ভাঙনের কতটা ফায়দা তুলতে পারেন আসন্ন নির্বাচনে। অন্যদিকে উত্তরাখণ্ডের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী তীরথ সিং রাওয়াত প্রধানমন্ত্রীর পৃষ্ঠপোষকতায় মুখ্যমন্ত্রী হলেও তিনি কিন্তু এখনও আইনসভার সদস্য নন। তাই তাঁকে ছ মাসের মধ্যে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। অথচ এই বিধানসভার মেয়াদ মাত্র সাত আট মাস। একবছরের কমে কখনোই উপনির্বাচন হয়না। যদি বা উপনির্বাচন হয়, তাহলেও অন্তর্কলহের জেরে তিনি হেরে যেতে পারেন বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর অস্বস্তি কিন্তু আরো তীব্র হতে পারে। ঠিক একই রকম পরিস্থিতি কর্ণাটকে। সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী বি. এস ইয়েদুরাপ্পাকে নিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে বিজেপি। দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে সরকার চালাচ্ছেন তিনি বলে জানা গিয়েছে। অবশ্য আগে বহিষ্কৃত হয়ে এই অবিসংবাদী লিঙ্গায়েত নেতা কিন্তু আবার ফিরে এসেছেন স্বমহিমায়। রাজস্থানেও বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া একই রকম সমস্যা তৈরি করেছেন বিজেপির জন্য।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

মধ্যপ্রদেশের মতন রাজস্থানে কিন্তু কংগ্রেসকে ভাঙিয়ে রাজ্য দখল করতে পারেননি মোদি-শাহ জুটি। এবং রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কাছে পরিষ্কার, তা হবার অন্যতম কারণ বসুন্ধরা রাজের অঙ্গুলিহেলন। বরাবরই বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া দিল্লীকে উপেক্ষা করেই রাজ্য রাজনীতি করে এসেছেন। অন্যদিকে মধ্যপ্রদেশেও কালক্রমে শিবরাজ সিং চৌহানই শেষ কথা হয়ে উঠেছেন দলে। সেখানে কৈলাস বিজয়বর্গীয় কিংবা নরোত্তম মিশ্রর মতন নেতারা কল্কে পাচ্ছেন না। একই রকমভাবে গোয়াতেও মুখ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মধ্যে লেগেছে ব্যাপক কলহ। তাতে যোগ দিয়েছেন আবার সেখানকার বিদ্যুৎমন্ত্রী। ত্রিপুরাতেও একই অবস্থা। কোন রাজ্যেই আর দিল্লির দূতেরা সফল হচ্ছেন না।

কেন্দ্রের প্রতি ব্যাপক আকারে ক্ষোভ বাড়ছে রাজ্য বিজেপির। এই অবস্থায় মনে করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী মোদির হাতে একটিই অস্ত্র এবং সেটি হল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ। কিন্তু সেক্ষেত্রেও মন্ত্রিসভায় কাকে স্থান দেবেন প্রধানমন্ত্রী তা নিয়ে থাকছে প্রশ্ন। একদিকে যেমন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া অপেক্ষা করছেন, তেমন অন্যদিকে বিহারের সুশীল মোদি, অসমের সর্বানন্দ সোনোয়াল, ওড়িশার বৈজয়ন্ত পান্ডা, উত্তরপ্রদেশের শরিক আপনা দলের অনুপ্রিয়া প্যাটেল। এরসাথে আবার নিতিশ কুমার গুরুত্বপূর্ণ 2 মন্ত্রকের দাবি জানিয়ে রেখেছেন অনেক আগে থেকেই। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কোভিডসহ মূল্যস্ফীতী, অর্থনীতির নিম্নগামীতা ও বিভিন্ন কারণে ক্রমশ প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি তলানীতে।

জাতীয় স্তরে এখনো অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির নামটাই যথেষ্ট। যেহেতু সেখানে তাঁর বিপরীতে সেভাবে কেউ নেই। কিন্তু 24 এর লোকসভা নির্বাচনে কিন্তু অন্যরকম কিছু হওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একুশের বিধানসভা নির্বাচনের হাত ধরে সর্বভারতীয় স্তরে মোদী বিরোধী মুখ হিসাবে পরিচিত। এখন দেখার প্রধানমন্ত্রী মোদী ম্যাজিক 2024 এও অক্ষুণ্ণ থাকবে নাকি সেখানে এবার বিরোধী শক্তির প্রভাব দেখা দেবে? একইসাথে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনগুলোতেও গেরুয়া শিবিরের অন্তর্কলহ পরিস্থিতি যে ক্রমাগত সঙ্গীন করে তুলছে, তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!