ভোটের আগেই উত্তরবঙ্গের দখল নিতে তৃণমূলে-বিজেপির স্ট্র্যাটেজির লড়াই শুরু? আসরে একাধিক মহারথী উত্তরবঙ্গ তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য October 15, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – হাতে গুনে মাত্র আর কয়েক মাস বাকি বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের। মসনদ দখলের লক্ষ্যে এই মুহূর্তে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে বাংলার রাজনৈতিক দলগুলি। খুব স্বাভাবিকভাবেই বাংলার শাসক-বিরোধী দলগুলির ব্যস্ততা এই মুহূর্তে তুঙ্গে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলার বিধানসভার নির্বাচনী লড়াই মূলত তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে মুখ্য হয়ে উঠেছে। একদিকে যেমন বাংলার শাসক দল তৃণমূল উত্তরপ্রদেশের হাথসারের ঘটনা হোক কিংবা প্রধানমন্ত্রীর কৃষি বিল সংক্রান্ত পদক্ষেপ – সব নিয়ে বিজেপি বিরোধী প্রচার চালাচ্ছে, সেরকমই বিজেপিও রাজ্যের তৃণমূলের দুর্নীতি, আইন-শৃংখলার দুরবস্থা নিয়ে তোপ দাগছে অহরহ। তবে তৃণমূলের কাছে এই মুহূর্তে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো উত্তরবঙ্গ পুনরুদ্ধার। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হাত থেকে উত্তরবঙ্গ ছিনিয়ে নেয় গেরুয়া শিবির। এবার বিধানসভা নির্বাচনের হাত ধরে উত্তরবঙ্গে কর্তৃত্ব ফিরে পেতে আগ্রহী তৃণমূল। অবশ্য গেরুয়া শিবিরও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়। তাঁরাও উত্তরবঙ্গ নিজেদের দখলে রাখতে শুরু করেছে নতুন গেম প্ল্যান তৈরি। আর সেই উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার কোচবিহারের বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অরবিন্দ মেনন জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামানিক, দক্ষিণ দিনাজপুরের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার প্রমুখরা। অন্যদিকে তৃণমূলও পিছিয়ে নেই। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রশান্ত কিশোরের হাতে। সূত্রের খবর, বিজেপিকে আটকাতে নতুন স্ট্র্যাটেজি ইতিমধ্যেই কোচবিহারের নেতাদের কাছে পৌঁছে গেছে। বিজেপি সূত্রে খবর, আগামী 17 ই অক্টোবর শিলিগুড়িতে বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা অমিত শাহের উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই কর্মসূচি আপাতত স্থগিত হয়ে গেছে। বদলে আগামী উনিশে অক্টোবর জে পি নাড্ডা শিলিগুড়িতে আসতে চলেছেন উত্তর বঙ্গের বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে। এই বৈঠকে অমিত শাহ ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন বলে জানা গেছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - উত্তরবঙ্গ থেকে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হারের পর দলীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে কাটাছেঁড়া হয়েছে। আর তাতেই উঠে এসেছে ভোট ব্যাংকের ধ্বস সংক্রান্ত তথ্য। জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের রাজবংশী ও তপশিলি সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশ গেরুয়া শিবিরে নিজেদের ভোট দিয়েছেন। আপাতত সেই ভোটব্যাঙ্ক ফিরে পেতে তৃণমূল নেত্রী একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। ইতিমধ্যেই কোচবিহারে পার্থপ্রতিম রায়ের মতন তরুণ রাজবংশী নেতা দলের জেলা সভাপতি পদ পেয়েছেন। যার ফলে শাসক দলের সংগঠন আবারও মজবুত হওয়ার দিকে। উত্তরবঙ্গে নতুন করে তৃণমূলের মিটিং মিছিলে জনসমাগমও হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, শিলিগুড়িতে বিজেপি নেতৃত্বের আসার আগেই সেখানে উত্তরবঙ্গের একাধিক তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অভিষেক এবং পিকে। উত্তরবঙ্গ পুনরুদ্ধারের গেমপ্ল্যান ইতিমধ্যেই তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে। তবে তা নিয়ে বিশেষ কেউ কিছু বলেননি। অন্যদিকে উত্তরবঙ্গ সফরে এসে আগামী ছয় মাস রাজ্যের বিধানসভা দখলের জন্য কিভাবে প্রচার চালাতে হবে তার পরিকল্পনা ঠিক করতে চলেছেন গেরুয়া শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতারা। এদিন তৃণমূল কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় দাবি করেছেন, বিজেপি ভাঙছে। পাশাপাশি বিজেপির কোচবিহারের জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা জানিয়েছেন, তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে, তাই বিজেপির মসনদ দখল এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, উত্তরবঙ্গ নিয়ে দুই দলের টানাটানির মধ্যে কিন্তু সামান্য হলেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে কিছুটা পিছিয়ে শাসক দল। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চোখে পড়েছে তৃণমূলের। স্বাভাবিভাবেই তা গেরুয়া শিবির কাজে লাগাচ্ছে। তাই সবার আগে এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধের দিকে নজর দিতে হবে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। তবে উত্তরবঙ্গ নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে যে প্রবল দড়ি টানাটানি চলছে, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। আপাতত এই দড়ি টানাটানির খেলায় শেষ পর্যন্ত কে জিতবে, সে দিকেই নজর থাকবে সবার। আপনার মতামত জানান -