এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নে বুঁদ বাম-কং জোট প্রার্থীই দিতে পারল না! কতটা লড়াই থাকছে জল্পনা

ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নে বুঁদ বাম-কং জোট প্রার্থীই দিতে পারল না! কতটা লড়াই থাকছে জল্পনা

 

2011 সালে যে বামফ্রন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতায় এসেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিগত আট বছরে 35 বছর ধরে ক্ষমতা ধরে রাখা বামফ্রন্ট কার্যত সাইনবোর্ডে পরিণত হবে, তা বিশ্বাস করতে পারেনি অনেকেই। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই ঘটনাই বারবার সামনে আসছে। পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে শুরু করে লোকসভা নির্বাচন, প্রতিটা নির্বাচনের সঙ্গে সঙ্গেই ধীরে ধীরে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের তকমা হারিয়ে ফেলতে শুরু করেছে রাজ্যের লাল ব্রিগেড।

পঞ্চায়েত নির্বাচনে যেমন তৃণমূল কংগ্রেসের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে আসে ভারতীয় জনতা পার্টি, তেমনই লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের 18 টি লোকসভা আসনে জয়যুক্ত হয়ে বিজেপি ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলতে শুরু করে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের। আর সেখানেই আশ্চর্যজনকভাবে রাজ্যের সবকটি লোকসভা আসনেই নিজেদের জামানত পর্যন্ত খুইয়ে বসে এককালের রাজ্যের শাসক দল বামফ্রন্ট।

আর এবার করিমপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোট কয়েকটি বুথে নির্বাচনী এজেন্ট পর্যন্ত দিতে পারল না। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে জল্পনা। তবে বাম-কংগ্রেস জোটের তরফ থেকে স্পষ্টত অভিযোগ করা হয়েছে, পুলিশ এবং তৃণমূলের যুগ্ম অত্যাচারের কারণেই এই জোট নির্বাচনী এজেন্ট দিতে পারেনি।

মূলত 5 থেকে 6 টি বুথে বাম-কংগ্রেস জোট নির্বাচনী এজেন্ট দিতে পারেনি বলে অভিযোগ। সকালবেলার দিকে এজেন্টরা থাকলেও ধীরে ধীরে যখনই বেলা বাড়ে, তখনই তাদের আর দেখা মেলেনি। যেখানে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা ভারতীয় জনতা পার্টি মাত্র একটি বুথে এজেন্ট দিতে পারেনি। সেক্ষেত্রে ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, সকালেই 39 নম্বর বুথে দুইজনকে তৃণমূল দুষ্কৃতীরা অপহরণ করেছে। সেই জন্য সেখানে এজেন্ট দেওয়া সম্ভব হয়নি।

তবে স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এই বিষয়ে সব রকম অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, সিপিএম- কংগ্রেস জোটের অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাদের এজেন্ট দেওয়ার মতো লোক জোটেনি। তাই তারা দিতে পারেনি। তবে গোটা বিষয়ে সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদক আসাদুল শেখ বলেন, “করিমপুর 2 নম্বর ব্লকে বিশেষ করে থানাপাড়া এলাকায় তৃণমূল ও পুলিশ যৌথ সন্ত্রাসের জন্য আমরা সব বুথে এজেন্ট দিতে পারিনি। আমাদের যারা এজেন্ট হবে বলেছিল, তারা ফেস্টুন লাগাচ্ছিল। তাদের ভয় দেখিয়ে পুলিশ তাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন কেসে জড়িয়ে জেলে ভরে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়েছে তাদেরকে। এছাড়াও তৃণমূল কংগ্রেসের দুষ্কৃতীরা রবিবার রাতে কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এজেন্ট হলে দেখে নেওয়া হবে বলে হুমকি দেয়।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এমনকি সিপিআইএমের ওই নেতা অভিযোগ করেন যে, করিমপুর বিধানসভা উপনির্বাচন কার্যত প্রহসনে পরিণত হয়েছে। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকাও যে ভালো ছিল না, তাও প্রকাশ পায় ওই নেতার কণ্ঠে। তাঁর কথায়, স্থানীয় প্রশাসন কেন্দ্র বাহিনী ঠিকভাবে ব্যবহার করেনি। অন্যদিকে ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষে করিমপুর মিডিয়া সেলের দায়িত্বে থাকা অনুপ ঘোষ বলেন, “আমাদের জয় নিশ্চিত। এতদিন এখানে তৃণমূল ফাঁকা মাঠে গোল করত। এবার আমাদের কাছে বাধা পেয়ে ভোটের দিন সন্ত্রাস চালিয়েছে।” করিমপুর বিধানসভায় ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদারকে মারধরের করার কথাও উঠে আসে মিডিয়া সেলের দায়িত্বে থাকা ওই বিজেপি নেতার কথায়।

মানুষ যে ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষেই রায় দেবে, সেই বিষয়েও আত্মপ্রত্যয়ী ওই বিজেপি নেতা। তবে নিজেদের উপরে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে দিয়েছেন করিমপুর 2 নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি আজিজুর রহমান মল্লিক। তিনি বলেন, “সিপিএম- কংগ্রেস জোট ও বিজেপি মিথ্যা অভিযোগ করেছে। তারা বুথে বসার লোক পায়নি বলে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে। এমনিতেই আমরা এই আসন জিতব। মানুষ আমাদের পাশে আছে।”

তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বছর করিমপুর বিধানসভা উপনির্বাচন নিয়ে পরিশ্রমে ঘাটতি রাখেনি বাম- কংগ্রেস জোট। প্রথম থেকেই ছোট ছোট সভার মাধ্যমে তারা চেয়েছিল এলাকায় ঘুরে দাঁড়াতে। তবে শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন বুথে নির্বাচনী এজেন্ট পর্যন্ত না দিতে পারায় এখন কার্যত প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে এই রাজ্যে বিরোধী শক্তি হিসেবে বাম-কংগ্রেস জোটের ভূমিকাকে নিয়ে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!