এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > বামেদের ধর্মঘট তৃণমূল সমর্থন করলেই কি ঘাসফুলের ব্রিগেড ভরিয়ে দেবেন বিমান বাবুরা? বাড়ছে জল্পনা

বামেদের ধর্মঘট তৃণমূল সমর্থন করলেই কি ঘাসফুলের ব্রিগেড ভরিয়ে দেবেন বিমান বাবুরা? বাড়ছে জল্পনা

একের বিনিময়ে আরেকটা। রাজ্য রাজনীতিতে কৌশলী পন্থা অবলম্বন করতে এবার এই বিনিময় প্রথার কথাই শোনা গেল বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুর গলায়। আগামী 8 এবং 9 জানুয়ারি সারা দেশ জুড়ে একটি সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বামেরা। যে ধর্মঘটকে সফল করতে ইতিমধ্যেই এই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা।

কিন্তু 2011 সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই রাজ্যে যতবারই বন্ধ হয়েছে ততবারই তা প্রতিহত করতে উদ্যোগ নিয়েছে তৃণমূল সরকার। তাই এই অবস্থায় একটি কৌশলী পন্থা অবলম্বন করতে চাইছেন রাজ্যের বাম নেতারা।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আগামী 19 শে জানুয়ারি কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে দেশের প্রায় সমস্ত অবিজেপি দলকে নিয়ে একটি মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন খোদ তৃনমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে উপস্থিত হওয়ার ব্যাপারে প্রথম থেকেই আপত্তি জানিয়ে এসেছে বামফ্রন্ট।

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তাঁদের দাবি, মোদী এবং মমতা একই মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। তবে এবারে তৃনমূলের সেই ব্রিগেডে উপস্থিত হওয়ার জন্য রাজ্যের শাসকদলকে কিছু শর্ত বেঁধে দিলেন তাঁরা। সূত্রের খবর, এদিন বারাসাতে বামেদের ধর্মঘটের সমর্থনে এক বিশাল পদযাত্রায় অংশ নেওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, “কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধেই এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। তৃণমূল যদি সত্যিই বিজেপির বিরোধিতা করতে চায় তাহলে এই ধর্মঘটকে তাঁরা সমর্থন করুক।”

কিন্তু তৃণমূল যদি বামেদের এই ধর্মঘটকে সমর্থন করে তাহলে কি বামেরা আগামী 19 জানুয়ারি তৃণমূল নেত্রীর ডাকা ব্রিগেড সমাবেশে হাজির হবে? এদিন এই প্রশ্নের উত্তর বিমান বসু বলেন, “যদি ওরা আমাদের ধর্মঘটকে সমর্থন করে, মানুষের দাবিকে সমর্থন করে তখন বাকি বিষয় ভেবে দেখা যাবে। এখন এই নিয়ে চর্চা করে লাভ নেই।”

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই রাজ্য থেকে বনধ তুলে দিতে তৎপর হয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তাই স্বাভাবিকভাবেই বামেদের ডাকা আগামী 8 এবং 9 জানুয়ারির বনধ যে তৃনমূল সমর্থন করবেন না এটাই স্বাভাবিক। তাই এহেন একটা পরিস্থিতিতে সেই তৃণমূলকে চাপে ফেলে বনধ সমর্থন করলে তৃনমূলের ডাকা ব্রিগেডের সভায় যাওয়ার ব্যাপারে ভেবে দেখা হবে বলে জানালেন বিমান বসু।

তবে বিমান বাবুর এহেন মন্তব্যে তীব্র অস্বস্তিতে পড়েছে বামেদের একাংশ। তাঁদের মতে, দলের পক্ষ থেকে ধরেই নেওয়া হয়েছিল যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল সরকার কখনই এই বনধকে সমর্থন করবেন না। আর তাই এই বিষয়টিকে পাথেয় করেই আগামী লোকসভা ভোটে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে যে গোপন বোঝাপড়ার অভিযোগ রয়েছে তা রাজ্যের মানুষের কাছে তুলে ধরতে অনেকটাই সুবিধা হতো তাঁদের।

কিন্তু বিমান বাবুর এহেন মন্তব্য সেই সমস্ত পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিল। যদিও বা রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুর এহেন মন্তব্যকে কিছুটা মেকাপ দিতে পথে নেমেছেন রাজ্য বামফ্রন্টের একাংশও। এই প্রসঙ্গে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, “বিমানবাবু তৃণমূলের ব্রিগেডে যাওয়ার কথা বোঝাতে চাননি। উনি তৃনমূলের আসল স্বরূপ মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্যই এই কথা বলেছেন।”

এদিকে ইতিমধ্যে এই বনধকে সফলভাবে পালন করতে রাজ্য সরকার যাতে আর কোনো বাধা না দেয় সেজন্য এখন থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি দিয়ে আবেদন জানিয়েছে সেই বনধের উদ্যোক্তা সংগঠনগুলি। তবে সরকার যে তার সিদ্ধান্তে অনড় এদিন তা ফের স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন তৃনমূল মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

এদিন তিনি বলেন, “আমাদের নেত্রী ও দলের ঘোষিত অবস্থান হল ধর্মঘট বিরোধী। তাই এই সব আর্জি জানিয়ে কোনো লাভ নেই। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া ওদের নাটক ছাড়া আর কিছুই নয়।” সবমিলিয়ে আগামী 8 এবং 9 জানুয়ারি বামেদের ডাকা ধর্মঘটে ফের যে রণক্ষেত্রের আকার নেবে এ রাজ্য তা নিঃসন্দেহে বলাই যায়।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!