এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া > তৃণমূল বিধায়কদের অনিয়ম-দুর্নীতি তুলে একুশে ভোট না দিতে “দুঃখী জনসাধারণের” লিফলেট বিলি শুরু

তৃণমূল বিধায়কদের অনিয়ম-দুর্নীতি তুলে একুশে ভোট না দিতে “দুঃখী জনসাধারণের” লিফলেট বিলি শুরু

34 বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে গত 2011 সালে বাংলার মানুষ বিপুলভাবে সমর্থন করে ক্ষমতায় এনেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসকে। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ক্ষমতায় আসার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুশাসনের বার্তা দিলেও, যত দিন পেরিয়েছে, ততই দলের বিধায়কদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপোষনের মত অভিযোগ উঠেছে। যার ফলে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে অনেক আসনেই পরাজিত হতে হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে।

তবে লোকসভা নির্বাচনের পর নিজেদের ভাবমূর্তি ঠিক করতে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করে তৃণমূল কংগ্রেস। যা আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তাদের অনেকটাই সমর্থন করবে বলে মনে করে ঘাসফুল শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে দলের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ যে কমেনি, তা ফের প্রমাণিত হয়ে গেল।

সূত্রের খবর, এবার রঘুনাথপুরের তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরির বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতি এবং অনিয়মের লিফলেট ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। জানা গেছে, গত বুধবার সকালে রঘুনাথপুরের বেরো গ্রামে, সাতুড়ির রামচন্দ্রপুর, মুরাডি, মধুকুণ্ডা এবং নিতুড়িয়ার নিমডাঙ্গা গ্রামে বিভিন্ন লিফলেট পড়ে থাকতে দেখা যায়। যেখানে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরির বিরুদ্ধে একগুচ্ছ বিস্ফোরক অভিযোগের বহর দেখতে পাওয়া যায়।

যেখানে লেখা রয়েছে, লিফলেটের প্রথম খন্ড প্রকাশিত করলাম। দ্বিতীয় খন্ড শীঘ্রই প্রকাশিত হবে। আর এরপর সেখানে অভিযোগ হিসেবে লেখা রয়েছে, “2011 সালে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাথার ঘাম পায়ে ফেলে জনদরদি, প্রকৃত জনহিতকর কাজের মানুষ হিসেবে পূর্ণচন্দ্র বাউরিকে বিধায়ক হিসেবে জিতিয়ে এনেছিলেন। জনগণের ভোটে জেতা বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র এখন জনগণকে “পায়ের জুতা” বলে মনে করেন। মানুষ বিপদে পড়ে তার বাড়িতে গেলে তিনি দেখা করেন না।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সেখানে আরও লেখা, “নিজে গরিবের ভোটে জিতে দালানকোঠায় ঘুম দেন। অথচ সেই বিধায়ক ছদ্মবেশে মানুষের মুখে হাসি নিয়ে এখন লোকদেখানো “দিদিকে বলো” কর্মসূচি করছে। জনগণের টাকা, ক্লাব অনুমোদিত দু’লক্ষ টাকা খাতায়-কলমে ঠিক রেখে চারটি বাস কিনেছেন।” এদিকে বিধায়কের পাশাপাশি তার ছায়াসঙ্গী শেখ আমাজাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ জানাতে দেখা গেছে সেই লিফলেটে। যেখানে বিধায়কের ছায়াসঙ্গীর বিরুদ্ধে শিশু প্রকল্পের প্রচুর টাকা হাতানোর অভিযোগ জানানো হয়েছে।

আর তৃণমূল যখন জনসংযোগ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ করে তোলার চেষ্টা করছে, তখন বিধায়কের বিরুদ্ধে এইভাবে দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যে দিয়ে লিফলেট ছড়িয়ে পড়ায় প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল।তবে এই গোটা ঘটনাকে বিরোধীদের চক্রান্ত হিসেবেই দেখছেন রঘুনাথপুরের তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরির ছায়াসঙ্গী শেখ আমজাদ। এদিন তিনি বলেন,”আমার বিরুদ্ধে শিশু প্রকল্পের টাকা হাতানোর কথা বলা হয়েছে।”

তাঁর বক্তব্য, “কিন্তু বাস্তবে এমন কোনো প্রকল্পই নেই। তাই এলাকায় গুজব ছড়াতে বিরোধীরা এই সব চক্রান্ত করছে।” তবে এই ব্যাপারে জেলা তৃণমূল সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, “বিষয়টি আমি শুনেছি। কিন্তু এটা যে বিরোধীদের কাজ, তা বলাই যায়।” তবে তৃণমূল এই ব্যাপারে বিরোধীদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেও তা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করছে বিরোধীরা।

এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা বিজেপির সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, “বিজেপি কোনো কাজ চুপিচুপি করে না। যা বলে ও করে, তা খোলা ময়দানে করে। এখন সাধারণ মানুষ বুঝতে পেরে সত্যকে তুলে ধরতে প্রচার করছেন।” অন্যদিকে এই ব্যাপারে জেলা সিপিএমের সদস্য দীননাথ লোধা বলেন, “লিফলেট প্রচার তৃণমূল দলের অন্তর্দ্বন্দ্বের ফল। সঠিক তদন্ত হলেই আসল তথ্য বেরিয়ে আসবে।” তবে তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে এহেন বিস্ফোরক লিফলেট প্রকাশ হওয়ায় এখন তৃণমূল যে রঘুনাথপুরের চরম বিপাকে পড়েছেন, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিশ্লেষকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!