প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –হঠাৎ করেই একটি রোগের আবির্ভাব রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছিল। রোগটির নাম, করোনা ভাইরাস। ভয়াবহ এই ভাইরাসের বৃদ্ধি নিয়ে আতঙ্ক আরও বেশি করে গ্রাস করেছিল তখন, যখন শুনতে পাওয়া যায় যে, ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। ফলে নিত্য নতুন ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও সেভাবেই ঢুকে আটকানোর জন্য কোন প্রতিষেধক পাওয়া যাচ্ছিল না তবে সরকারের পক্ষ থেকে চিকিৎসা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ করার আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছিল।

পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে করা হয়েছিল লকডাউন। কিন্তু মানুষের এই দুঃসময়ে সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে কোন রাজনৈতিক দল কেমন ভূমিকা পালন করেছে, তা নিঃসন্দেহে বিচার করবেন সাধারণ মানুষ। যার প্রভাব আগামী দিনে ভোটবাক্সে পড়বে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। কিন্তু লকডাউনের সময় সত্যি সত্যিই বিজেপি নেতা কর্মীরা কতটা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, এবার তার জন্য দলীয় সংগঠনের মূল্যায়নের পর ভূয়সী প্রশংসা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

সূত্রের খবর, এদিন “সেবা হি সংগঠন” নামে একটি মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বিজেপি নেতা কর্মীরা কিভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “সারা পৃথিবীর মানুষ যখন প্রাণ রক্ষায় ব্যস্ত, তখন আপনারা যেভাবে ভয়ের আবহ উপেক্ষা করে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে দেশবাশীর পাশে দাঁড়িয়েছেন, তা নজিরবিহীন। আপনারা মানুষের আশীর্বাদ পেয়েছেন। মানুষের আশীর্বাদ দেবতার আশীর্বাদের সমান। আমরা সবসময়ই ক্ষমতাকে সেবার মাধ্যম হিসেবে ভেবে এসেছি। আর সেই আদর্শ থেকেই রাজনীতিতে এসেছি। বিজেপির বহু নেতাকর্মী মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে করোনাতে আক্রান্ত হয়েছেন। অনেকে মারাও গিয়েছেন। ওই পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানো আমাদের একান্ত কর্তব্য।”

অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লকডাউনের পরিস্থিতিতে বিজেপির নেতা কর্মীরা কিভাবে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, একথা তুলে ধরে বোঝানোর চেষ্টা করলেন যে, বিজেপি দুঃসময়ে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করে। অনেকে বলছেন, করোনা পরিস্থিতি ভারতবর্ষে চরম আকার নেওয়ার পর অনেকেই এই ভাইরাস বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে দায়ী করেছেন। বিরোধীদের পক্ষ থেকে বারবার অভিযোগ করা হয়েছে, যখন অন্যান্য দেশে করোনা ভাইরাসে বিপত্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছিল, তখন কেন ভারত আগাম এই ব্যাপারে সতর্ক ছিল না!

যদিও বা সেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে পাল্টা বিরোধীদের কটাক্ষ করেছে বিজেপি। তবে ভাইরাসের উৎপত্তি কি কারনে, কিভাবে এই ভাইরাসকে আটকানো যাবে, তার থেকেও এখন বেশি চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে দুঃসময়ে মানুষের পাশে কোন রাজনৈতিক দল সব থেকে বেশি দাঁড়িয়েছিল! আর এই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যখন বিরোধীরা বেশি করে ময়দানে নামছে, ঠিক তখনই বক্তব্য রেখে নিজেদের সংগঠনের নেতৃত্ব এবং কর্মীদের বড় কৃতিত্ব বলে দাবি করে বিরোধীদের প্রচার কার্যত কেড়ে নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

জানা গেছে, লকডাউনের মুহুর্তে দলের নেতাকর্মীরা কিভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, তা নিয়ে একটি ডিজিটাল বুক প্রকাশ করার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অর্থাৎ মানুষের কাছে প্রচার পৌঁছে দিয়ে আগামী দিনে সংগঠনের ভিতকে আরও শক্তিশালী করতে চাইছেন নমো‌। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একদিকে দলের নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করা এবং অন্যদিকে বিরোধীদের প্রচারকে কেড়ে নিয়ে নিজেদের আরও বেশি করে মানুষের কাছে তুলে ধরতেই প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং এবার ময়দানে নেমে পড়লেন।

যা বিজেপি নেতা কর্মীদের উদ্বুদ্ধ যেমন করল, ঠিক তেমনই কিভাবে বিজেপি লকডাউষের সময় মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছে, তাও প্রচারের আলোয় আসতে শুরু করল বলে মনে করছে পর্যবেক্ষকরা। এখন এর ফলে গেরুয়া শিবিরের কতটা লাভ হয়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।