লকডাউনে গঙ্গাদূষণ কমার জায়গায় বেড়ে গেছে বহুগুণ? সামনে এল নতুন চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট! অন্যান্য জাতীয় September 24, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- হিন্দুধর্ম বা হিন্দু শাস্ত্র মতে গঙ্গা যে কেবলমাত্র দেশের একটি অন্যতম জলের উৎস হিসেবে চিহ্নিত তাই নয়, এটি একটি পবিত্র নদী তথা আধ্যাত্মিক স্থানে উপনীত হয়েছে। প্রাচীন বৈদিক যুগ থেকে শুরু করে এই নদীর সম্পর্কে বহু পৌরাণিক কাহিনী, গল্প প্রচলিত রয়েছে। সেই সঙ্গে ইতিহাসের কথা বললে বলা যায়, প্রথম ইউরোপীয় ভ্রমণকারী হিসাবে মেগাস্থিনিসের ইন্ডিকাতেও বহুবার পাওয়া গেছে এই গঙ্গা নদীর উল্লেখ। তবে সম্প্রতি গঙ্গা নদীর দূষণের পরিমাণ যে মাত্রাতিরিক্ত হয়েছে সে কথা বলাই বাহুল্য। তাই ২০১৪ সালের মে মাসে উত্তরপ্রদেশের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই গঙ্গাকে পরিশুদ্ধ করারই একটি প্রকল্প নিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি বলেছিলে,ন শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক বা আধ্যাত্মিক তাৎপর্যপূর্ণ বলেই তিনি এই কাজ করেছেন তা নয়, দেশের জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ এই নদীর ওপর নির্ভরশীল। তাই এই নদীকে দূষণমুক্ত করলে দেশের ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর সহায়তা করা যাবে বলেই মনে করেছিলেন তিনি। আর সেই সময় গঙ্গা দূষণ রুখতে এবং পুনরুদ্ধার করতে “নমামি গঙ্গে” বলে একটি গঙ্গা সংরক্ষণ নীতি চালু করেন তিনি। যাতে এখনও পর্যন্ত কুড়ি হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রীয় খাতে এই প্রকল্পের জন্য সমস্ত রকম কর্ম পরিকল্পনা অনুমোদন করা হয়েছে। সেইসঙ্গে এর কর্মসূচিগুলোকে প্রাথমিক পরিকল্পনা, মাঝারি মেয়াদী পরিকল্পনা এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হিসাবে ৩,৫ এবং ১০ বছরের জন্য ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - করোনা পরিস্থিতিতে যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে দেখা গিয়েছিল পরিবেশ দূষণের মাত্রা কমতে, সেখানে পরিবেশবিদদের মধ্যে এই নিয়ে করোনার একটি ভালো দিক ফুটে উঠেছিল। যেখানে কলকারখানা, যানবাহন বন্ধ থাকায় বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ অনেকাংশে কমেছিল, সেখানেই নদীতে দেখা গিয়েছিল ডলফিনের আনাগোনা। পরিষ্কার স্বচ্ছ জলে জলজ জীবের ফুর্তি লক্ষ্য করে আনন্দিত হয়েছিলেন পরিবেশবিদরা। আর সেই সঙ্গে তাল মিলিয়ে আশা করা হয়েছিল ভারতবর্ষেও এর প্রভাব পড়বে, গঙ্গা দূষণ কিছুটা হলেও কমবে। তবে সেই আশা পূরণ হয়নি বলেই জানা গেছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড যে রিপোর্ট পেশ করেছে তাতে দেখা গেছে ২৫শে মার্চ থেকে ৬৮দিন ধরে চলা লকডাউনে গঙ্গার কোনো উন্নতি তো হয়নি, বরং তার অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে। এক্ষেত্রে বলা হয়েছে, গঙ্গার জলের গুণমান যেখানে লকডাউনের আগে ছিল ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ সেখানে তা কমে গিয়ে হয়েছে ৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ। আর যার জন্য অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে গঙ্গার জলপ্রবাহের গতিহীনতা। যার ফলে জলে দূষিত পদার্থ জমে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলেই মনে করা হয়েছে। জানা গেছে , শুধুমাত্র গঙ্গাই নয়, এই একই অবস্থা সুবর্ণরেখা, চম্বল এবং বিয়াস নদীর। মনে করা হচ্ছে লকডাউনের সময়কালে মানুষ গৃহবন্দি হয়ে পড়ায় যে আশা জেগেছিল যে অতিমারি হয়তো ভালো কিছু নিয়ে আসবে দেশের পরিবেশের জন্য, সেখানে যে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে একথা স্বপ্নেও কল্পনা করা যায়নি। তবে উত্তরাখণ্ড এবং উত্তর প্রদেশের কোনো কোনো স্থানে গঙ্গার জলের উন্নতি হয়েছে বলে রিপোর্টে বলা হলেও পশ্চিমবঙ্গ আর বিহারের অবস্থা আরো ভয়াবহ বলেই দেখা গেছে। তবে দেশের সমস্ত নদীর এমন পরিস্থিতি নয়। বোর্ডের তরফ থেকে যে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে যে ১৯টি নদী নিয়ে তারা কাজ করেছিলেন, তার মধ্যে থেকে সাতটি নদীতে জল দূষণের পরিমাণ অনেকটাই কম। যার মধ্যে রয়েছে উড়িষ্যার ব্রাহ্মণী নদী। তবে অন্যদিকে গঙ্গা নদীর এই দূষণের মাত্রা কমাতে যে আরও বেগ পেতে হবে, সেই উল্লেখও করা হয়েছে। তাই সেইসঙ্গে পরিবেশবিদদের আশা এবং প্রধানমন্ত্রীর এই পরিকল্পনা যে কিছুটা হলেও ধাক্কা খেয়েছে সেটাই মনে করা হচ্ছে। আপনার মতামত জানান -