বিতর্কিত অভিযোগ উঠতেই দল থেকে সাসপেন্ড হেভিওয়েট নেতা! তীব্র শোরগোল শাসকদলের অন্দরে! উত্তরবঙ্গ কলকাতা রাজ্য May 19, 2020 লকডাউনের মাঝে এমনিতেই বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার সচেতনতামূলক বার্তা দেওয়া হচ্ছে। আর এরই মাঝে কোচবিহার জেলায় ঘটে যায় একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। যেখানে কোচবিহার জেলা পরিষদের বন এবং ভূমি কর্মাধ্যক্ষ নুর আলম হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, তিনি এক শিক্ষিকাকে ধর্ষণ করেছেন। আর এই ঘটনাতেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। জানা যায়, ইতিমধ্যেই সেই মহিলা এই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যার পরেই অস্বস্তিতে পড়ে কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। ঘটনায় চাপে পড়ে শোকজ করা হয় সেই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা নুর আলম হোসেনকে। তবে গোটা ঘটনায় যখন বিরোধীরা সরব হচ্ছে, ঠিক তখনই সেই তৃণমূল নেতাকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিল ঘাশফুল শিবির। সূত্রের খবর, এদিন কোচবিহার জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের বাড়িতে একটি সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি বিনয় কৃষ্ণ বর্মন। আর এই সাংবাদিক সম্মেলন থেকেই নূর আলম হোসেনকে দল থেকে সাসপেন্ড করার কথা জানান কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি বিনয় কৃষ্ণ বর্মন। তিনি বলেন, “নুর আলম হোসেনের কার্যকলাপ দলের ভাবমূর্তির পরিপন্থী। ওনার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ দল অনুমোদন করে না। এর আগে দলের পক্ষ থেকে শোকজ করা হয়েছিল। তবে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। সেই কারণে এদিন থেকে যতদিন পর্যন্ত ওনার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের নিষ্পত্তি হবে না, আদালত থেকে ক্লিনচিট পাবেন না, ততদিন পর্যন্ত দলের সব পদ থেকে তাঁকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করা হল। দলের সাধারণ সদস্য পদ থেকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে। এদিন থেকে দলের সঙ্গে ওনার কোনো সংশ্রব রইল না।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তবে যেহেতু এই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা নুর আলম হোসেন জনপ্রতিনিধি, সেহেতু জনপ্রতিনিধি পদ কি তার এখনও থাকবে? এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি বিনয় কৃষ্ণ বর্মনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “জনপ্রতিনিধিদের হঠাৎ করে পদ থেকে সরানো যায় না। এই বিষয়টা আমরা পরে দেখব।” এদিকে এই ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা নুর আলম হোসেনকে ফোন করা হলেও তার ফোন সুইচ অফ ছিল। যার কারণে তার প্রতিক্রিয়া পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে যেভাবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই তৃণমূল নেতাকে দল থেকে সাসপেন্ড করে দেওয়ার ঘটনা ঘটল, তাকে কার্যত নজিরবিহীন বলেই আখ্যা দিচ্ছে রাজনৈতিক মহল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তৃণমূল এখন নিজেদের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখতে উদ্যোগী। তাই কোচবিহার জেলা পরিষদের এই তৃণমূলের সদস্যের বিরুদ্ধে শিক্ষিকাকে ধর্ষণ করার যে অভিযোগ উঠেছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল কোচবিহার জেলায় অনেকটাই চাপে পড়ে। সামনে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। বিগত লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহারে এমনিতেই বিজেপির কাছে পর্যুদস্ত হয়েছে শাসকদল। তাই এমতাবস্তায় এমন কোনো অভিযোগে দুষ্ট দলের নেতাদের দলে রাখতে চায় না। যার ফলে দলের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। আর তাই এখন এই তৃণমূল নেতাকে দল থেকে সাসপেন্ড করে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব বার্তা দিল যে, তারা কোন অন্যায়ের সঙ্গে আপোস করবে না। এখন এই ব্যাপারে গোটা পরিস্থিতি কোনদিকে গড়ায়, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -