এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া > লকডাউনেও তৃণমূলের পার্টি অফিস উদ্বোধনে হুল্লোড়! নেই স্বাস্থ্যবিধি! শুরু তীব্র বিতর্ক!

লকডাউনেও তৃণমূলের পার্টি অফিস উদ্বোধনে হুল্লোড়! নেই স্বাস্থ্যবিধি! শুরু তীব্র বিতর্ক!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ভারতে ইতিমধ্যেই ত্রাহি ত্রাহি রব উঠছে দেশে। এর মধ্যে বেশকিছু রাজ্য করোনার নিরিখে তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে বলে খবর। ইতিমধ্যে দেশের শীর্ষ আদালতও এই রাজ্যগুলির কথা উল্লেখ করেছে। করোনা আক্রান্ত রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম হলো পশ্চিমবঙ্গ। যত দিন যাচ্ছে, করোনা সংক্রমণ আরো উদ্বেগ বাড়াচ্ছে রাজ্য সরকারের। একের পর এক জায়গা কনটেইনমেন্ট জোনে রূপান্তরিত হচ্ছে। এমনকি বেশ কিছু গ্রীন জোন রেড জোনে রূপান্তরিত হয়েছে বলে জানা গেছে।

এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা অবশ্যই সার্বিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দিচ্ছেন। কিন্তু রাজ্যের এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলির যে বিশেষ কোনো হেলদোল নেই, সে কথা আবার প্রমাণ হলো। সম্প্রতি বাঁকুড়ার সোনামুখী শহরে তৃণমূলের একটি কার্যালয়ের উদ্বোধন হয় এবং সেই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেখা যায়, যাঁরা উপস্থিত ছিলেন তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই কোনরকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেননি। এই নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জলঘোলা।

সূত্রের খবর, সোনামুখীতে তৃণমূলের কার্যালয় উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি শুভাশিস বটব্যাল, মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা সহ জেলার প্রথম সারির অনেক তৃণমূল নেতা। কিন্তু দেখা গেছে, দূরত্ব বজায় না রেখে প্রায় গা ঘেঁষাঘেঁষি করে প্রত্যেকে বসে আছে এবং অনেকেই মুখে মাস্ক ব্যবহার করেননি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে সব মহলে। এবং তার উত্তরে জেলা তৃণমূল সভাপতি শুভাশিস বাবুর বক্তব্য, বহুদিন যাবৎ রাজনৈতিক আলোচনা না হওয়ার জন্য প্রায় সবাই হাজির হয়েছেন এই অনুষ্ঠানে।

তবে অনেকেই নাকি বিজেপি এবং সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে শুভাশীষবাবু দাবী করেন এদিন। তাই আনন্দের মুহুর্তে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা হলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা হয়তো মেনে চলা সম্ভব হয়নি। তবে তাঁর মতে, প্রত্যেকেই নাকি মুখে মাস্ক ব্যবহার করেছিলেন। ওই একই মঞ্চে হাজির ছিলেন সোনামুখীর প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক দীপালী সাহা, ইন্দাস এর বিধায়ক গুরুপদ মেটে, জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তবে উল্লেখযোগ্যভাবে এই অনুষ্ঠানে তৃণমূলের আরও বেশকিছু নামজাদা রাজনৈতিক নেতা অনুপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে। যেরকম- সোনামুখীর বিদায়ী তৃণমূল পৌর প্রধান তথা পৌরসভার প্রশাসক সুরজিৎ মুখোপাধ্যায় এবং সোনামুখী পঞ্চায়েত সমিতির বেশকিছু তৃণমূল সদস্য। সুরজিৎ বাবু দাবি করেন, তাঁকে এই অনুষ্ঠানের কথা কেউ আগাম জানাননি। এমনকি এই অনুষ্ঠানে তৃণমূল সভাপতি সৌমেন মুখোপাধ্যায়কেও ডাকা হয়নি।

অন্যদিকে সৌমেন বাবু জানিয়েছেন, তাঁর কার্যালয়ে কেউ একজন উদ্বোধন সংক্রান্ত একটি চিঠি তাঁর হাতে না দিয়ে অন্য একজন কর্মচারীর হাতে দিয়ে চলে গিয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে শুভাশিস বাবু জানিয়েছেন, তিনি সুরজিবাবুকে ফোন করে চিঠি দিয়ে আসতে বলেছিলেন, কিন্তু সুরজিৎবাবুর আত্মীয় অসুস্থ বলে তিনি আসেননি। তবে এই পুরো ব্যাপারটি নিয়ে দলীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বলে মত অনেকের। কারণ জানা গেছে, সোনামুখী শহরে ইতিমধ্যেই একটি তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় আছে অপর একটি কার্যালয় খোলার কারণ হিসেবে অনেকেই ভাবছেন এই কথা।

অন্যদিকে তৃণমূলের পার্টি অফিস উদ্বোধন সংক্রান্ত জটিলতার কথা শুনে তীব্র কটাক্ষ শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে বিরোধী দলগুলি। এ প্রসঙ্গে বিজেপির বিষ্ণুপুর জেলা সাংগঠনিক সভাপতি ও হরকালী প্রতিহার জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে সোনামুখীর তৃণমূলের অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অত্যন্ত বেশি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সে কথা বারবার প্রমাণ হচ্ছে। অন্যদিকে সোনামুখী সিপিএম বিধায়ক অজিত রায় দলবদল এর ব্যাপারে জানান, সিপিএম থেকে তৃণমূলে গেছে এই মুহূর্তে তাঁর কাছে কোন রকম খবর নেই।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে রাজ্য যেখানে করোনা পরিস্থিতির এতটা বাড়াবাড়ি হয়েছে, সাধারণ মানুষ যেখানে চরম আতঙ্কে রয়েছে করোনা নিয়ে, সেখানে স্বাস্থ্য বিধি না মেনে অনুষ্ঠান পরিচালনা করে মোটেই ঠিক কাজ হয়নি। অন্যদিকে যেভাবে এই পার্টি অফিস উদ্বোধন নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে গুঞ্জন শুরু হয়েছে, সে কথা কিন্তু তীব্র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দিকে ইশারা করছে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের। তবে এখন দেখার, করোনা পরিস্থিতিতে দলীয় সুপ্রীমো এই ধরনের পার্টি অফিস উদ্বোধন নিয়ে কি বলেন!

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!