এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > লোকসভা ভোটে ভরাডুবির কারণ নিয়ে দলের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন তৃণমূল নেতা

লোকসভা ভোটে ভরাডুবির কারণ নিয়ে দলের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন তৃণমূল নেতা


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – গত লোকসভা নির্বাচনে তৎকালীন জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের নেতৃত্বে কোচবিহার কেন্দ্র তৃণমূল কংগ্রেস দখল করবে বলে আত্মপ্রত্যয়ী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার কারণে রবিবাবুর কথামত পার্থপ্রতিম রায়কে টিকিট না দিয়ে সেখানে প্রার্থী করা হয় বাম আমলের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধীকারীকে‌। এদিকে প্রাক্তন সাংসদকে টিকিট না দেওয়ায় তার অনুগামীরা রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন। সেভাবে পার্থপ্রতিম রায়কে নির্বাচনের প্রচারের কাজে দেখা যায়নি। ভিন জেলায় তাকে প্রচারে পাঠিয়ে কোচবিহার জেলায় তৃণমূল কংগ্রেস যাতে জয়লাভ করে, তার জন্য শত চেষ্টা করেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।

কিন্তু তারপরেও শেষ রক্ষা হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে রোষানলের শিকার হতে হয় কোচবিহার জেলা তৃণমূলের তৎকালীন সভাপতি রবিবাবুকে। আর এরপরই তাকে তার পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে বিনয় কৃষ্ণ বর্মনকে সভাপতি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, যে পার্থপ্রতিম রায়কে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের কথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই পার্থপ্রতিম রায়ের উপর ভরসা রেখে তাকে কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব দেন তিনি।

সম্প্রতি সেই পার্থপ্রতিম রায়কে কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্ব দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর দায়িত্ব পাওয়ার পরই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কোচবিহার জেলার সমস্ত বিধানসভা কেন্দ্রের জয়লাভ করতে নিজের কাজ শুরু করে দিয়েছেন পার্থবাবু। তবে বিগত দিনে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যাপক সন্ত্রাস এবং অশান্তির কথা নিয়ে “পাপের” ব্যাপারটি অকপটে স্বীকার করে নিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়।

সূত্রের খবর, সোমবার কোচবিহারের গোপালপুরে তৃণমূলের পক্ষ থেকে একটি সভার আয়োজন করা হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি। আর সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনের নানা কীর্তির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনে জোর করে ভোট নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে‌ অনেক জায়গায়। সেই জন্য মানুষ আমাদের প্রার্থীকে শিক্ষা দিয়েছেন। লোকসভায় ভোট না দিয়ে কিছু কিছু নেতার ব্যবহারে ব্যাথিত হয়েছেন সাধারন মানুষ। সেটাও ভোট না পাওয়ার অন্যতম কারণ। সেই সব নেতাদের আর কখনও নেতৃত্বের জায়গায় রাখা হবে না। মাথায় রাখতে হবে, তিনিই নেতা, যাঁকে মানুষ নেতা বলেন।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর পার্থবাবুর এই মন্তব্যে এখন ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে কোচবিহার জেলা রাজনীতিতে। একাংশ বলছেন, পার্থবাবুর এই মন্তব্য আদতে কি তাহলে কোচবিহার জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি তথা রাজ্যের বর্তমান মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে উদ্দেশ্য করে? কেননা পার্থবাবুর যখনকার কথা বলছেন, তখন জেলা সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন রবিবাবু। তাহলে কি সেই সময়কার অশান্তির কথা তুলে ধরে পরোক্ষে রবীন্দ্রনাথ ঘোষকেই খোঁচা দিলেন পার্থপ্রতিম রায়?

জানা গেছে, এদিন পার্থপ্রতিম রায়ের বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি শোনা গেছে বিরোধী দল বাম থেকে শুরু করে কংগ্রেস এবং বিজেপি নেতাদের গলায়। অনেকে বলেছেন, পার্থবাবু দলের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অবগত। তিনি খুব ভালোমতোই জানেন, সন্ত্রাস করে আর বেশিদিন তৃণমূল কংগ্রেস টিকে থাকতে পারবে না। তাই অকপটে দলের অতীতের কুকীর্তির কথা স্বীকার করে নিয়ে দলের নেতাদের দিকে আঙুল তুলে দিলেন তিনি। কিন্তু একজন সভাপতি হয়ে এইভাবে বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে পার্থবাবুকে তার দল তৃণমূল কংগ্রেসের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিলেন? রাজনৈতিক মহলে এখন এই জল্পনা ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে।

অনেকে বলছেন, পার্থপ্রতিম রায় সভাপতি হলেও তার কাছে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাই অতীতের কথা তুলে ধরে সেই রবিবাবুকে আরও কোণঠাসা করতে এদিন এই ধরনের বক্তব্য পেশ করতে দেখা গেল তাকে। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো দলকে আরও শৃঙ্খলা পরায়ন করবার জন্য পার্থপ্রতিম রায়কে দায়িত্ব দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে এক সময়কার কথা তুলে ধরে তিনি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে নিজের বিরোধী গোষ্ঠীর নেতাদের যতই আক্রমণ করুন না কেন, এর ফলে তো দলের শৃঙ্খলা যেমন ভেস্তে যাবে, ঠিক তেমনই আগামীদিনে বিধানসভা নির্বাচনের আগে কোচবিহার জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও বাড়বে বলেই দাবি ওয়াকিবহাল মহলের। সব মিলিয়ে পার্থপ্রতিম রায়ের এই মন্তব্য এখন তৃণমূল নেতৃত্বের অস্বস্তি কতটা বৃদ্ধি করে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!