লোকসভার আগে কেন্দ্র সরকারের এই কল্পতরু পদক্ষেপ কি বড়সড় ভোটব্যাঙ্ক নিশ্চিত করে দিল গেরুয়া শিবিরের? জাতীয় January 12, 2019 হারিয়ে যাওয়া ভোটব্যাঙ্ক ফিরে পেতে মরিয়া মোদি সরকার একের পর এক জনপ্রিয় সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেছে লোকসভা ভোটের আগে। তিন রাজ্যে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সম্ভবত বিজেপি উপলব্ধি করেছে নোটবাতিল, জিএসটি এবং জীবিকার জন্য হাহাকার এতই তীব্র যে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। সেই কারণেই এবার নিজেদের সিদ্ধান্তকেই পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি, অরুণ জেটলিরা। বছরে ২ কোটি চাকরি চাকরি দেওয়ার নির্বাচনী আশ্বাসের ব্যর্থতার ক্ষতে প্রলেপ দিতে চালু করা হচ্ছে উচ্চবর্ণের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ। পাঁচ রাজ্যের ফলাফলে স্পষ্ট যে বিজেপির নিজস্ব ভোটব্যাঙ্ক বাণিজ্যমহল প্রবলভাবে ক্ষুব্ধ। সেই ক্ষোভ সামাল দিতে আগেই জিএসটি’র হার এক ধাক্কায় ২২টি পণ্যের উপর কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর নোটবাতিল তথা জিএসটির জোড়া ধাক্কায় সবথেকে বেশি যে ক্ষেত্রটি আঘাতপ্রাপ্ত সেই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে ক্ষতিপূরণ দিতে আজ জিএসটির উর্ধসীমায় দ্বিগুণ ছাড় দেওয়া হল। আজ অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ঘোষণা করেছেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ক্ষেত্রে জিএসটি ছাড়ের উর্ধসীমা (বার্ষিক টার্নওভার) ২০ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ লক্ষ টাকা ধার্য করা হয়েছে। অর্থাৎ ৪০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত টার্নওভারের ব্যবসায় আর জিএসটি দিতে হবে না। উত্তর পূর্ব ভারতের ক্ষেত্রে এই ছাড়ের সীমা ১০ লক্ষ টাকা থেকে বেড়ে ২০ লক্ষ টাকা হয়েছে। এছাড়া যে সব মাঝারি শিল্পে জিএসটির করকাঠামোর বাইরে গিয়ে কম্পিাজিশন প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হয় সেই উর্ধসীমাও বাড়িয়ে দেড় কোটি টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ এখন থেকে বার্ষিক দেড় কোটি টাকা টার্নওভারের ব্যবসার ক্ষেত্রে কম্পোজিশন স্কিমের সুযোগ পাওয়া যাব। এতদিন এটা ছিল ১ কোটি টাকা। পাশাপাশি কম্পোজিশন স্কিমের আওতায় এবার থেকে ট্যাক্স যথারীতি প্রতি তিন মাসে দিতে হবে। কিন্তু ট্যাক্স রিটার্ন দেওয়া যাবে বছরে একবার। সাধারণত পণ্য পরিষেবা প্রদান করার ব্যবসায় যারা জড়িত তারাই এই কম্পোজিশন স্কিমের সুবিধা গ্রহণ করে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - আজ অরুণ জেটলি আবার সিঙ্গল রেট ট্যাক্স সিস্টেমের পক্ষে সওয়াল করেছেন। তিনি বলেছেন, জিএসটি আগামীদিনে হওয়া উচিত তিনটি স্তরের। জিরো ট্যাক্স, ৫ শতাংশ ট্যাক্স এবং একটি স্ট্যান্ডার্ড ট্যাক্স। যদিও এর বাইরে থাকবে বিলাসদ্রব্যের ট্যাক্স। রাজ্য সরকারের লটারি এবং রিয়াল এস্টেট শিল্পের করকাঠামো সংক্রান্ত ভারসাম্য নিয়ে আসার জন্য দুটি মন্ত্রিগোষ্ঠী গঠন করা হয়েছে। ওই মন্ত্রিগোষ্ঠী সিদ্ধান্ত নেবে নয়া করকাঠামো কেমন হবে। জিএসটি নিয়ে ব্যবসায়ীদের তুমুল ক্ষোভের অভিযোগ গত বছর মোদি সরকার স্বীকার করেনি। লাগাতার সরকার ও বিজেপি বলে এসেছে জিএসটি নিয়ে যে দুর্ভোগের কথা বলা হচ্ছে, তা আদতে বিরোধীদের বিভ্রান্তিকর প্রচার। একইসঙ্গে নোটবাতিলের জন্য যে ব্যাপক কর্ম সঙ্কোচন ঘটেছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্রে, সেই প্রচারও মানতে চায়নি সরকার। কিন্তু সরকারের সেই অনমননীয় মনোভাবকে বদলে দিয়েছে পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফল। পাঁচ রাজ্যে বিপর্যয়ের পর সরকার নড়েচড়ে বসেছে কারণ বিশ্লেষণের জন্য। এবং তারই ফলশ্রুতি এই একের পর এক জিএসটি কাঠামোর বদল। আপনার মতামত জানান -