লোকসভা ভোটে তৃণমূল না বামফ্রন্ট – জোট প্রসঙ্গে বড় ইঙ্গিত দিলেন প্রদেশ সভাপতি সোমেন মিত্র কলকাতা জাতীয় রাজ্য January 23, 2019 লোকসভা ভোটের মুখে ফের জোট নিয়ে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। গতকাল রামপুরহাটের এসডিও অফিসে আইন অমান্য আন্দোলনের আগে পাঁচ মাথা মোড়ে জনসভার মঞ্চে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাফ কথায় জানালেন,’লোকসভায় তৃণমূলের সঙ্গে জোট হচ্ছে না,আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি। আপাতত কংগ্রেস একাই লড়বে।’ ব্রিগেড জনসভার আগেও একই কথা শোনা গিয়েছিলো সোমেন মিত্রের মুখে। তখনও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেছিলেন,লোকসভা ভোটে তৃণমূলের সঙ্গে কোনোভাবেই জোটে যাবে না কংগ্রেস। জাতীয় কংগ্রেস সুপ্রিমো রাহুল গান্ধীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্রিগেডকে সমর্থন করে খোলা চিঠি পাঠানোকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দানা পাকালেও সোমেন মিত্র সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন,রাহুল গান্ধী যা করেছেন তা সম্পূর্ণই জাতীয় প্রেক্ষিতে। কিন্তু প্রদেশের পরিস্থিতি জোটের পরিপন্থী। কিন্তু গত ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশের পর সাংবাদিক বৈঠক করে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতা মল্লিকার্জুন খার্গে ফের কংগ্রেসের জোটে আসা নিয়ে বিতর্ককে উস্কে দিয়েছিলেন । বলেছিলেন,বিজেপিকে হটাতে আঞ্চলিক দলগুলির জোটের প্রয়োজন রয়েছে। এদিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আবার উল্টো সুর গাইছেন। বলছেন,কোনভাবেই তৃণমূলের সঙ্গে জোটে আসবে না প্রদেশ। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলকে সাম্প্রদায়িক দল বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। এছাড়া বিজেপির বিরুদ্ধেও একইভাবে বিভেদের রাজনীতি করার অভিযোগ তুলে জানান,’কংগ্রেস ক্ষমতার জন্য নয়, আদর্শের জন্য লড়াই করে। কংগ্রেসই একমাত্র রাজনৈতিক দল যারা প্রথম থেকেই সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। আর এই সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতেই তৃণমূলের ডাকা ১৯’এর ব্রিগেড সমাবেশে উপস্থিত হয়েছিলেন কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা।’ নিজের কথাপ্রসঙ্গে উদাহরণস্বরূপ তুলে ধরলেন উত্তরপ্রদেশের সপা-বসপা জোটের কথা। এই রাজ্যে যখন অখিলেশ-মায়াবতী জোটের সিদ্ধান্ত নেয় তখন দুবাই থেকে রাহুল গান্ধী বার্তা দিয়েছিলেন,বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে তাঁর সম্পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে কংগ্রেস তাহলে লোকসভা ভোটে বামেদের হাত ধরবে কিনা সে প্রশ্ন ওঠে। এর জবাবে সোমেন বাবু সাফ কথায় জানান,’আগে আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াই। তারপর কার সঙ্গে জোট করব ভাবব। আপাতত আমরা একলা চল নীতি নিয়েছি। তবে তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে কেউ লড়াইয়ে আমন্ত্রণ জানালে আমরা যাব।’ আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - উল্লেখ্য,গতকাল রামপুরহাটের বৈঠকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য প্রদীপ ভট্টাচার্য,পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক তথা অসমের কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈও। প্রত্যেকেই সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেসের সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধির খতিয়ান তুলে ধরেন। সদ্য সমাপ্ত তিন রাজ্যের নির্বাচনে কংগ্রেসের ভালো পারফরম্যান্সের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেছেন,দেশবাসী ভবিষ্যতে কংগ্রেস সরকার চায়। আর প্রধানমন্ত্রী হিসাবে রাহুল গান্ধীকে দেখতে চান। এর পাশাপাশি বিজেপির একাধিক নীতির তীব্র সমালোচনা করেন। পাশাপাশি তুলোধনা করেন রাজ্যসরকারকেও। প্রদীপ বাবু, তৃণমূলের অধীনস্থ জেলা পরিষদের সভাধিপতির মনিটরিং করার জন্য মেন্টর এবং কো-মেন্টর নিয়োগ করার শাসকদলের সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেন। তৃণমূলের এই সিদ্ধান্তকে সংবিধানবিরোধী বলেও দাবী করেন তিনি। নজরে আসার মতো বিষয় হল এদিন বৈঠকে এতো কথা হলেও বামেদের বিরুদ্ধে একটি কথাও খরচ করেনি কংগ্রেস নেতারা। এভাবে আসলে বামেদের সঙ্গে জোট বাধারই ইঙ্গিত দিল প্রদেশ কংগ্রেস,এমনটাই ধারনা ওয়াকিবহালমহলের। উল্লেখ্য,এদিনের সভার শেষে বিধায়ক মিলটন রশিদের নেতৃত্বে কর্মী সমর্থকেরা এসডিও অফিসে আইন অমান্য আন্দোলন করতে যান। কিন্তু সেখানে গেট বন্ধ থাকায় কিছুক্ষণ ধস্তাধস্তি করার পর ফিরে আসতে বাধ্য হন তাঁরা। আপনার মতামত জানান -