এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > বিজেপি > লোকসভার সাফল্যেও মুকুলকে অগ্রাহ্য করেই ডুবল বিজেপি? ঘুরে দাঁড়াতে ভরসা সেই চাণক্য-নীতিই?

লোকসভার সাফল্যেও মুকুলকে অগ্রাহ্য করেই ডুবল বিজেপি? ঘুরে দাঁড়াতে ভরসা সেই চাণক্য-নীতিই?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বর্তমানে শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষাল থেকে শুরু করে বৈশালী ডালমিয়া, তৃণমূলের অনেক রথী-মহারথী বিজেপির বাগানে বড় ফুল হিসেবে প্রস্ফুটিত হয়েছেন। কিন্তু এই সমস্ত নেতা-নেত্রীদের নাম দিয়ে 100 বার আলোচনা করার পরেও, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহল, সকলের কাছেই আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক, বঙ্গ বিজেপি-র চানক্য তথা বর্তমানে কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায়।

তৃণমূল থেকে ভারতীয় জনতা পার্টিতে নাম লেখানোর পর লোকসভা নির্বাচনের দায়িত্ব তার কাছে দেওয়া হয়েছিল বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে। তাকে দায়িত্ব দিয়ে তিনি কতটা সেই কাজ করতে সক্ষম হন, তা দেখে নিতে চাইছিলেন বিজেপির নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে অমিত শাহ। আর দুর্দান্তভাবে ব্যাটিং করে রীতিমত ছক্কা হাঁকিয়ে তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলে 42 টি আসনের মধ্যে 18 টি আসন বিজেপির হাতে তুলে দেন মুকুল রায়। কেউ স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি যে, ভারতীয় জনতা পার্টি বাংলাতে এত আসন পেয়ে জয়লাভ করবে।

কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের যে মুকুল রায়ের ভালো ফল করার জন্য এত কৃতিত্ব রয়েছে, সেই মুকুলবাবুকে বিধানসভা নির্বাচনে সেভাবে বিজেপির পক্ষে প্রচার করতে দেখা যায়নি। শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়রা যখন দলে আসার সাথে সাথেই দলকে জেতানোর জন্য প্রাণপাত করতে শুরু করেছিলেন, তখন কোথায় গেলেন মুকুল রায়! এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল রাজনীতির অন্দরমহলে। তবে এত প্রশ্ন তৈরি হলেও প্রকাশ্যে না এসে তাকে কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে দলের পক্ষ থেকে প্রার্থী করার পর সেখানে মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন মুকুল রায়।

দল অপেক্ষা নিজের জয় যাতে নিশ্চিত করা যায়, তার জন্য চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। আর তার সেই চেষ্টায় সফল হয়েছে। কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেছেন তিনি। তবে বিধায়ক হওয়ার পরেও মুকুল রায়ের চালচলন নিয়ে বিজেপির অন্দরে জল্পনা ক্রমশ দীর্ঘায়িত হতে দেখা যাচ্ছে।

একাংশ বলছেন, লোকসভা নির্বাচনে যেভাবে মুকুল রায়ের কৌশল গ্রহণ করে বিজেপি এগিয়ে গিয়েছিল, বিধানসভা নির্বাচনে তার মতামতকে খুব একটা প্রাধান্য দেওয়া হয়নি। যার কারণে তিনি অনেকটাই ক্ষিপ্ত। তবে প্রকাশ্যে এই ব্যাপারে কখনই কোনো কিছু বলেননি মুকুল রায়। কিন্তু বাস্তবে তার সঙ্গে যে দলের কোথাও একটা দূরত্ব তৈরি হচ্ছে, তা নানা মহলের পক্ষ থেকে পাওয়া খবরেই কার্যত পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল।

বস্তুত, মুকুল রায় বিধায়ক হওয়ার পরেও শপথবাক্য পাঠ করতে এসে তার নীরবতা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়। তিনি আবার তৃণমূলে ফিরে যেতে পারেন বলে দাবি করেন একাংশ। যদিও বা পরবর্তীতে মুকুলবাবু নিজেই টুইট করে জানিয়ে দেন, এই সমস্ত জল্পনা বৃথা। তিনি বিজেপিতেই থাকছেন। কিন্তু পরিস্থিতি যে ক্রমশ জটিল হতে শুরু করেছে, তা ধীরে ধীরে সামনে আসতে শুরু করে। সোমবার বিজেপির পরিষদীয় দলের বৈঠকে যাতে তিনি আসেন, তার জন্য মুকুল রায়ের বাড়িতে উপস্থিত হন কৈলাস বিজয়বর্গীয়।

শেষ পর্যন্ত মুকুল রায় সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু কৈলাস বিজয়বর্গীয়র কাছে নিজের ক্ষোভ এবং অভিমানের কথা ব্যক্ত করেছেন তিনি বলে খবর। একাংশ বলছেন, এই মুকুল রায় বিজেপিতে যোগদান করার পর বলেছিলেন, তার প্রধান লক্ষ্য তৃণমূল কংগ্রেসকে ক্ষমতাচ্যুত করা। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে তার মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার পর বিজেপি অনেকটাই ভাল ফলাফল করেছিল‌।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলায় উঠেছিল গেরুয়া ঝড়। তবে সেই ঝড়কে বিস্তার লাভ করাতে গেলে তার মতামত এবং রাজনৈতিক অনুধাবন শক্তিকে যে গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল ভারতীয় জনতা পার্টির, তা ধীরে ধীরে বুঝতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব। আর তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে দলের ভরাডুবির পর যখন বিরোধী দলের জায়গা দখল করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি, তখন মুকুল রায়কে আবার গুরুত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মুকুল রায় বঙ্গ রাজনীতিতে এমন একজন ব্যক্তিত্ব, যিনি কোন ব্লকের কি পরিস্থিতি, তার সবটাই নখদর্পণে রাখেন। তৃণমূলে থাকার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত বিশ্বস্ত ছিলেন তিনি। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি তাকে ব্যবহার করার কারণেই তাঁর ক্ষুরধার মস্তিষ্কের যে তৃণমূল কংগ্রেস চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে গিয়েছিল। তবে বিধানসভা নির্বাচনে সেই মুকুল রায়কে সেভাবে বিজেপির পক্ষ নিয়ে রাজ্যজুড়ে কোনো প্রচার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে দেখা যায়নি।

শুধুমাত্র কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে পড়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে জয়লাভ করেছেন। কিন্তু এবার তাকে আবার সামনের দিকে এনে ভবিষ্যতের লড়াই কিভাবে হবে, তার ব্যাপারে বার্তা নেওয়া যায়, তার জন্য চেষ্টা শুরু করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। ইতিমধ্যেই বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছেন মুকুল রায়। তবে এবার ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে তাকে বাংলার সংগঠন পরিচালনা হোক বা বড় কোনো দায়িত্ব, কি ভূমিকায় দেখা যায় বঙ্গ রাজনীতির চাণক্যকে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!