এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > জোট করে ভোট কমছে আরও! আগামীদিন ও কার্যকরিতা নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে বাম-কংগ্রেস 2 শিবিরেই!

জোট করে ভোট কমছে আরও! আগামীদিন ও কার্যকরিতা নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে বাম-কংগ্রেস 2 শিবিরেই!

2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে আলাদা আলাদাভাবে লড়াই করে প্রবল ভরাডুবির মুখে পড়তে হয়েছে বাম এবং কংগ্রেস শিবিরকে। 42 টি আসনের মধ্যে দুইটি আসনে টিমটিম করে কংগ্রেস নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচিয়ে রাখলেও এককালে লাল দুর্গ হিসেবে পরিচিত বাংলার মাটি থেকে কার্যত ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেছে বামফ্রন্ট। আসন পাওয়া তো দূরের কথা, রাজ্যের 42 টি কেন্দ্রের মধ্যে এক যাদবপুর বাদ দিয়ে 41 টি কেন্দ্রে জামানত জব্দ হয়েছে সিপিএম তথা বাম শরিক দলের।

তাই লোকসভা ভোটের বাজনা থেমে যেতেই কার্যত কাছাকাছি আসতে থাকে পশ্চিমবঙ্গের বাম এবং কংগ্রেস শিবির। একাধিক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে তিনটি বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করে বাম-কংগ্রেস জোট। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয়নি। আগের মত শূন্য হাতেই ফিরতে হয়েছে বাম- কংগ্রেস গণতান্ত্রিক জোটকে। তার থেকেও বড় কথা আলাদা আলাদা লড়ে প্রাপ্ত মোট ভোটের থেকেও জোট প্রার্থীরা কম ভোট পেয়েছেন দুটি আসনে।

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে বর্তমানে যুযুধান দুই পক্ষ যে তৃণমূল কংগ্রেস এবং ভারতীয় জনতা পার্টি, তা এক মত স্পষ্ট হয়ে গেছে মানুষের মনে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, 2016 সাল থেকে যে বাম-কংগ্রেস জোট বাংলার মাটিতে লড়াই করছে, তার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে রীতিমতো প্রশ্ন রয়েছে। 16 সালের পরে দেখা গেছে যে, সমস্ত জায়গায় কংগ্রেস প্রার্থী ছিল, সেই সমস্ত জায়গায় ক্যাডাররা প্রার্থীকে ভোট দিলেও, যে সমস্ত এলাকায় বাম প্রার্থী ছিল, সেই সমস্ত এলাকায় কংগ্রেস কর্মীরা মেনে নিতে পারেনি বাম প্রার্থীকে।

তাই আসন ভাগাভাগির দিক থেকে বামফ্রন্টের সংখ্যা বেশি থাকলেও 16 সালের পরে রাজ্যের বৃহত্তম বিরোধী দলের মর্যাদা পায় কংগ্রেস। বাংলার মাটিতে কংগ্রেসের থেকেও পিছিয়ে পড়ে সিপিএম এবং তাদের শরিক দল। কাজেই সেই সময় থেকেই জোটের তৃণমূল স্তরের সমর্থন নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আর বর্তমানে যে পরিস্থিতি উপস্থিত হয়েছে, তাতে করে আগামীদিনে বাম এবং কংগ্রেস জোট করে নির্বাচনে লড়ার বিরোধিতা করছে দলের ভেতরের অনেকেই।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে সেখানকার বাম প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেনি পুরনো কংগ্রেসী কর্মীরা। যেখানেই বাম-কংগ্রেস জোট হচ্ছে, সেখানে এরকমই ছবি সামনে আসছে। তাই আগামী দিনে নিজেদের দলকে টিকিয়ে রাখতে গেলে হয় তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতায় যেতে হবে, না হয় একা লড়াই করতে হবে এরকম মন্তব্য শোনা যায় অনেক কংগ্রেস নেতাদের তরফ থেকে। কারণ উপনির্বাচনে অন্ততপক্ষে বাম-কংগ্রেস জোটকে নিচে পৌঁছানোর আশায় তিনটি কেন্দ্রতেই যৌথভাবে প্রচার করেছিল বাম এবং কংগ্রেস নেতারা।

তবে লাভের লাভ কিছুই হয়নি। খড়গপুর বিধানসভা আসনে আগের থেকে কিছুটা ভোট বৃদ্ধি হলেও শেষ পর্যন্ত জামানত জব্দ হয়েছে জোট প্রার্থীর। করিমপুর বা কালিয়াগঞ্জে জোটের অবস্থা আরও করুণ। তাই এবার একদিকে যেমন প্রদেশ- কংগ্রেসের অভ্যন্তরে জোট নিয়ে জোট বিরোধী নেতারা রীতিমত রণং দেহি অবস্থায় চলে এসেছে, তেমনই বাম শিবিরের অভ্যন্তরেও জোট নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

তবে বাম শরিক দলগুলির মধ্যে সবচাইতে বড় সিপিএম অবশ্য রাজ্য কমিটির বৈঠকের আগে বাম-কংগ্রেস জোট সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি নয়। খুব শীঘ্রই প্রদেশ কংগ্রেসের তরফ থেকে রাজ্য কমিটির বৈঠকে উপনির্বাচনের পরাজয় এবং জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে জেলা পর্যায়ের আলোচনা এবং চুলচেরা বিশ্লেষণের পরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতে পারে এবং সেই সিদ্ধান্তের প্রভাব আগামী পৌরসভা নির্বাচন পড়তে পারে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।

একা লড়াই করে তবুও কিছু ভোটব্যাঙ্ক অবশিষ্ট রাখতে পেরেছে বামফ্রন্ট। কিন্তু, জোট করলে দেখা যাচ্ছে, লাভের গুড় যাচ্ছে কংগ্রেসের ঘরে, মুখ থুবড়ে পড়তে হচ্ছে বাম প্রার্থীদের। তাই, এই পরিস্থিতিতে নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করতে – বাম নেতারাও আগামীদিনে কতটা আন্তরিক হবেন সেই নিয়েও উঠে যাচ্ছে প্রশ্ন। ২০১৬-তে তবু জোটের কিছুটা প্রাসঙ্গিকতা ছিল, ২০১৯-এ এসে দেখা যাচ্ছে আমি আর ছালা – দুইই গেছে। এখন সবকিছু মিলিয়ে আগামীদিনে বাংলার মাটিতে বামপন্থী রাজনৈতিক জোটের ভবিষ্যৎ কি হয়! সেদিকেই তাকিয়ে থাকবে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!